ক্রাইমবার্তা রির্পোটঃ বাস ভাঙচুরের ছবি তোলায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ও ইংরেজি দৈনিক পত্রিকা ‘দ্য ডেইলি স্টার’ এর প্রতিনিধিকে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা মারধর করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সোমবার (১০ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক ঢাকা-রাজশাহী মহসড়কে এ ঘটনা ঘটে। রাবি ছাত্রলীগের সভাপতি বলছেন, পুলিশের একজন কনস্টেবল ওই সাংবাদিককে মারধর করেছেন। তবে পুলিশ বলছে, ছাত্রলীগের নেতারাই এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।
মারধরের শিকার আরাফাত রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ৮নং ওয়ার্ডে তিনি চিকিৎসাধীন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে দেশ ট্রাভেলসের বাস ভাঙচুর করছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আহমেদ সজীব, সাংগঠনিক সম্পাদক আবিদ আহসান লাবন ও আইন বিষয়ক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বিজয়। ওই ঘটনার ছবি তুলছিলেন সাংবাদিক আরাফাত। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে আরাফাতের ওপর চড়াও হন ছাত্রলীগ নেতারা। কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে তারা আরাফাতকে মারধর করেন।
দেশ ট্রাভেলসের রাজশাহী জেলার ইনচার্জ মাসুদ রানা বাংলা ট্রিবিউনকে অভিযোগ করে বলেন, ‘ছাত্রলীগ নেতা বিজয় চট্টগ্রাম থেকে ওই বাসে ক্যাম্পাসে ফিরছিলেন। রাস্তায় তিনি বাসে ধূমপান করতে চাইলে সুপারভাইজার তাকে নিষেধ করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই সুপারভাইজারকে শায়েস্তা করার জন্য ছাত্রলীগ নেতা লাবন ও সজীবকে জানায় বিজয়। পরে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকে অবস্থান নেয় লাবন ও সজীবসহ নেতাকর্মীরা। বাসটি প্রধান ফটকে পৌঁছালে ওই সুপারভাইজরকে মারধর ও বাস ভাঙচুর শুরু করেন ছাত্রলীগের নেতারা। এসময় ওই ঘটনার ছবি তুলতে গেলে আরাফাতকে মারধর করেন তারা।’
এ বিষয়ে আরাফাতের সহকর্মী কায়কোবাদ খান বলেন, ‘বাস ভাঙচুরের ছবি তোলায় আরাফাতকে মারধর করা হয়েছে। সেখান থেকে তাকে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রে নেওয়া হয়েছিল। তার ডান চোখের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সেখান থেকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজে নেওয়া হয়েছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগ নেতা সজীব মোবাইলে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাসের সুপারভাইজারের ঝামেলা হয়েছিল। খবর পেয়ে আমরা সেখানে যাই। সেখানে সাধারণ শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে বাস ভাঙচুর করে।’ সাংবাদিককে মারধরের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না বলে দাবি করেন। একই কথা বলেন ছাত্রলীগ নেতা বিজয়ও। আর লাবনের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমি যতটুকু শুনেছি, একজন পুলিশ কনস্টেবল তাকে (আরাফাত) মেরেছে।’ এ অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশের মতিহার থানার পরিদর্শক মাহবুব বলেন, ‘আরাফাতকে ছাত্রলীগের নেতারাই মারধর করেছে, পুলিশের কেউ নয়।’