ক্রাইমবার্তা বিনোদন ডেস্ক:এক সময়ের জনপ্রিয় নায়ক ওমর সানী। প্রায় ২৮ বছর ধরে ঢাকাই চলচ্চিত্রের সঙ্গে রয়েছেন তিনি। ক্যারিয়ারের শুরু থেকে নায়ক চরিত্রে কাজ করলেও এখন খল অভিনেতা হিসেবেই পরিচিতি তার।
বর্তমানে চলচ্চিত্র পাড়ার নানা ইস্যু নিয়ে আলোচনায় আছেন এ তারকা। ঢাকাই চলচ্চিত্র শিল্পের বর্তমান অবস্থা ও চলমান বেশ কয়েকটি ইস্যু নিয়েই আজকের ‘‘হ্যালো…’ বিভাগে কথা বলেছেন তিনি
* ঢাকাই চলচ্চিত্রে ইদানীং ভালো ছবি নির্মাণের চেষ্টার চেয়ে আন্দোলনই বেশি হচ্ছে। বিষয়টি আপনি কীভাবে দেখছেন?
** দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলন নতুন কিছু নয়। এটা যুগ যুগ ধরেই চলে আসছে। তবে শিল্পীদের আন্দোলন আর দশটা আন্দোলনের মতো হবে এটা আশা করি না। তাদের আন্দোলনটাও হবে শৈল্পিক। আর এখানে আমরা কার বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি? সবাই তো আমরা নিজেরাই। এফডিসিতে কিংবা কোনো ছবির শুটিং আমরা একসঙ্গে কাজ করছি। হল মালিকরাও তো আমাদের একটি অংশ। তারা প্রদর্শন করেন বলেই দর্শকরা আমাদের ছবি দেখেন। তাই এভাবে না গিয়ে সিনিয়দের সহযোগিতায় আলোচনার মাধ্যমে এগুলো সমাধান হলে বিষয়টি আরও সুন্দর হতো। কেউ সমালোচনার সুযোগ পেত না।
* যৌথ প্রযোজনা আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। এ বিষয়ে আপনার মতামত কী?
** অনেকের মতো আমিও চাই নিয়ম মেনেই যৌথ প্রযোজনায় ছবি নির্মিত হোক। যেখানে আমাদের বাংলাদেশে শিল্পীদের প্রাধান্য থাকবে। বিষয়টি সরকারের পক্ষ থেকে গঠন করে দেয়া প্রিভিউ কমিটি দেখভাল করছে। এতে যাদের রাখা হয়েছিল তারা অবশ্যই বাংলাদেশের স্বার্থের বিষয়টিই দেখবেন। আমি মনে করি তারা বাংলাদেশের স্বার্থের দিকটা ভেবেই বিষয়টি স্থগিত করেছেন তারা। তাদের এমন সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই।
* চলচ্চিত্র শিল্পীরা একে অপরের পেছনে লেগে রয়েছেন। এতে করে দর্শকদের সম্মানের জায়গা থেকে সরে পড়ছেন প্রিয় তারকারা। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী?
** বিষয়টি সত্যিই লজ্জার। তারকাদের দর্শকরা অনেক উঁচু জায়গায় রাখেন। পরিশ্রমের টাকা খরচ করে টিকিট কেটে হলে গিলে তাদের দেখেন। তাদের অনুকরণ করার চেষ্টা করেন। সেই তারকারা যদি অন্য আর দশজনের মতো আচরণ করেন তাহলে অবশ্যই এটি খারাপ। প্রতিটি কথাই তাদের সংযত হয়ে বলতে হয়। তবে এটাও ভাবতে হবে তারকারাও মানুষ। তাদেরও রাগ, ক্ষোভ, অভিমান রয়েছে। মাঝে মাঝে সেটি কন্ট্রোলের বাইরে চলে যায়। তবে এটা দমিয়ে রাখাটাই বুদ্ধিমানের কাজ।
* বর্তমানে সাফটা চুক্তিতে ছবি বিনিময় হচ্ছে। এতে বাংলাদেশকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। যৌথ প্রযোজনার চেয়ে এটিও কোনো অংশে চলচ্চিত্রের কম ক্ষতির কারণ নয়। এতে শিল্পীরা নীরব কেন?
** শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সভাপতি পদে লড়েছি আমি। কথা দিয়েছিলাম বিজয়ী হলে ভালো কিছু করব। এখানেও দেখলাম কালো হাতের থাবা। কী সুকৌশলে আমাদের পরাজিত করা হল। সুশান্তের বিষয়টি সামনে আনলেই বিষয়টি পানির মতো পরিষ্কার হয়ে যাবে। এখন যারা নেতৃত্বে আছেন তারা বিষয়টি নিয়ে সরকারের সঙ্গে কথা বলুক। শুধু যৌথ প্রযোজনার ছবি নিয়ে কেন চলচ্চিত্রের সব অসুবিধা ও সাফটার ছবি বিনিময় নিয়েও বলুন। আমাদের চেয়ে এখন তো তাদের দায়িত্ব বেশি। আমরা শিল্পী। তারা তো এখন শিল্পীর পাশাপাশি দায়িত্বশীল নেতা।
* কথায় কথায় শাকিব খানকে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। এ রকমটি কেন হচ্ছে বলে মনে করেন?
** বিষয়টি আমার কাছে খারাপ লাগে। ঠুনকো বিষয় নিয়ে শাকিব খানকে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। শাকিব তো আমাদেরই সন্তান। চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিকে কি ও কম দিচ্ছে? মানলাম সে যৌথ প্রযোজনার ছবিতে অভিনয় করছে বলে তার প্রতি অনেকেই রেগে আছেন। রাগের বহিঃপ্রকাশ এভাবে কেন হবে? শাকিব খান কথা বলাতেই নিষিদ্ধ হচ্ছে, অথচ মৌসুমীকে মিশা অপমান করে কথা বলল। কই তখন তো কোনো শিল্পী প্রতিবাদ করলেন না? মিশাকে নিষিদ্ধ করা হল না, চিকন আলীকে বেধড়ক পেটালেন। অনেকে আছেন শাকিবের চেয়ে আরও বড় অপরাধ করছেন। তাদের তো কিছু বলা হচ্ছে না।
* আপনার দৃষ্টিতে এ মুহূর্তে ঢাকাই চলচ্চিত্রে শাকিব খানের প্রয়োজন কতটুকু আছে?
** এ কথা এক বাক্যে স্বীকার করতেই হবে শাকিব খানই এখন ঢাকাই চলচ্চিত্রের সেরা নায়ক। ইন্ডাস্ট্রিতে তার প্রয়োজন অনেক। হল মালিকরা শাকিব খানের ছবি পেলে লুফে নেন। এতেই বুঝা যায় তাকে কতটা দরকার।