ক্রাইমবার্তা আন্তর্জাতিক ডেস্ক :পানামা কেলেঙ্কারির তদন্তে গঠিত যৌথ তদন্তকারী দলের রিপোর্টে পুরোমাত্রায় বিপাকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ এবং তার পরিবার। বিশেষ করে শরিফের উত্তরসূরি হিসেবে দলে চিহ্নিত কন্যা মারিয়ম। শরিফ ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে মামলা দায়ের করার সুপারিশ করেছে যৌথ তদন্তকারী দল। এর জের ধরে নওয়াজ শরিফকে পদত্যাগও করতে হতে পারে বলে অনেকে মনে করছে। তিনি পদে থেকে গেলে সুপ্রিম কোর্ট তাকে অযোগ্য ঘোষণা করতে পারে। ফলে মারাত্মক সঙ্কটে পড়তে পারে পাকিস্তান।
যৌথ তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদন বলা হয়েছে, ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরো অর্ডিন্যান্স, ১৯৯৯ মোতাবেক শরিফ, তার দুই পুত্র হাসান ও হুসেন এবং কন্যা মারিয়মের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা দায়ের করা যায়। আর কন্যা মারিয়মের বিরুদ্ধে তদন্তে ভুয়া ও মিথ্যা তথ্য পেশ করার অতিরিক্ত অভিযোগ আনা হয়েছে। বলা হয়েছে, মারিয়ম তদন্তকারী দলকে ভুয়া ও ভুল তথ্য দিয়েছেন। এটি একটি ফৌজদারি অপরাধ। এই অভিযোগ নিশ্চিতভাবেই মারিয়মের ভবিষ্যৎ প্রশ্নের মুখে ফেলে দেবে। যদিও মারিয়ম মঙ্গলবার ওই রিপোর্ট নস্যাৎ করে জানিয়ে দিয়েছেন, জেআইটি রিপোর্টকে খারিজ করা হচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টে প্রতিটি স্ববিরোধের শুধু মোকাবিলাই করা হবে না, তাকে ধ্বংস করে দেয়া হবে। জনগণের একটি পয়সাও এর সঙ্গে জড়িয়ে নেই।
রিপোর্ট পেশের পর মঙ্গলবার দলের ঘনিষ্ঠদের নিয়ে আলোচনায় বসেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। সুপ্রিম কোর্টে লড়াইয়ের কৌশল নিয়েই নেতৃত্বের মধ্যে আলোচনা হয়। ১৭ জুলাই সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানি শুরু হবে। সেই মামলায় শরিফ পরিবার বিশেষ করে মারিয়মকে কীভাবে অভিযোগের হাত থেকে বাঁচানো যায়, তা নিয়ে জোরদার আলোচনা হয়েছে। সূত্রের, শরিফের দল তার পরিবারের পাশেই রয়েছে। এদিনের বৈঠকেও শরিফের নেতৃত্বে আস্থা দেখানো হয়েছে।
তবে যৌথ তদন্তকারী দলের রিপোর্ট সামনে আসার পরেই শরিফের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিরোধীরা। গতকালই তেহরিক-ই-ইনসাফ নেতা ইমরান খান বলেছিলেন শরিফকে ইস্তফা দিতেই হবে। এদিনও দলের প্রবীণ নেতা শাহ মাহমুদ কুরেশি বলেছেন, ক্ষমতায় থাকার কোনো কারণ শরিফের নেই। তার অবিলম্বে ইস্তফা দেওয়া উচিত। পাকিস্তান পিপলস পার্টির নেতা সৈয়দ খুরশিদ শাহ বলেছেন, শরিফের বদলে অন্য কোনো ব্যক্তিকে নেতৃত্বে নিয়ে আসা উচিত পাক মুসলিম লিগ (নওয়াজ)-এর। শরিফের দল অবশ্য জানিয়ে দিয়েছে, ওই রিপোর্টকে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ জানানো হবে। রিপোর্টের স্ববিরোধ ও ভুলভ্রান্তি শীর্ষ আদালতে তুলে ধরা হবে।