ক্রাইমবার্তা রিপোট:সীতাকুণ্ডে বার আওলিয়া ত্রিপুরা পাড়ায় অজ্ঞাত রোগে গত চার দিনে ৯ শিশুর মৃত্যুর পর আরো ছয় শিশু আক্রান্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে চার শিশুর অবস্থা আশঙ্কাজনক। বুধবার রাতে আক্রান্ত হওয়ার পর তাদেরকে বৃহস্পতিবার সকালে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরিত্যক্ত মৃত শুকুরের মাংস খাওয়া থেকে এ সংক্রামন ঘটে থাকতে পারে বলে আশংকা করছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ নুরুল করিম রাশেদ। মাত্র চার দিনের ব্যবধানে নয় শিশুর মৃত্যু ও বিয়াল্লিশ শিশু হাসপাতালে ভর্তির ঘটনায় ত্রিপুরা পাড়ায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ঘরে ঘরে চলছে শোকের মাতম।
প্রশাসন ত্রিপুরা পাড়ার পার্শ্ববর্তী তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কপপ্লেক্সের সকল চিকিৎসকের ছুটিও বাতিল করেছেন।
ঘটনাস্থলে কর্মরত উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ নুরুর করিম সাংবাদিকদের জানান, আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, ত্রিপুরা পাড়ার অধিবাসীরা কিছুদিন আগে পরিত্যাক্ত এক মৃত শুকরের মাংস খেয়েছিল। হয়তো বা ঐ মাংস থেকেই এ সংক্রামন এবং অপুষ্টিহীনতার কারণে ঘটনাটি ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি আরো জানান, বুধবার রাতে আরো ছয় শিশু এ অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে পাঁচ জনের নাম পওয়া গেছে। তারা হলো, পারুল ত্রিপুরা(৪), গোপাল ত্রিপুরা (৫), সুমন ত্রিপুরা (৬), তপন বাবু ত্রিপুরা (১০) ও রুমি ত্রিপুরা (৬)। তাদেরকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, অজ্ঞাত এ রোগ নির্নয় করতে ঢাকা থেকে আগত রোগতত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রন, ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআর এর চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের পাঁচ সদস্যের একটি দল ডাঃ ফারুক আহমেদ ভূঁইয়ার নেতৃত্বে সীতাকু-ে এসেছেন। তারা গতকাল সকালে উপজেলার ফৌজদারহাটে অবস্থিত বিআইটিআইডি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিশুদের নিয়ে কাজ শুরু করেছেন।
এদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল ইসলাম ভূঁইয়া জানান, ত্রিপুরা পাড়ার পার্শ্ববর্তী তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ওইপ্রতিষ্ঠান গুলোর সকল পরীক্ষা পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সীতাকু- সোনাইছড়ি ইউনিয়নের পাহাড়ের পাদদেশে ত্রিপুরা পাড়ায় ৪ দিনে ৯ শিশুর মৃত্যুরপর গতকাল আরো ৬ জনকে হাসপাতালে ভর্তি সহ এ পর্যন্ত মোট ৪২ জন শিশু চমেক ও ফৌজাদারহাট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহা পরিচালক অধ্যাপক এমএ ফয়েজ সাংবাদিকদের জানান, চার শিশু আশংকাজনক অবস্থায় আছে। একজন পিআইসিউইতে আছে। আরেকজন ওয়ার্ডে আছে। ঢাকা থেকে পরিক্ষার ফলাফল এলে সার্বিক তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে কি সক্রামণ হয়েছে তা জানা যাবে।