একাদশ সংসদ নির্বাচনে ইসির রোডম্যাপ ঘোষণা

ক্রাইমবার্তা:

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রোববার বেলা পৌনে ১২টায় আগারগাঁও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এ নির্বাচনী রোডম্যাপ প্রকাশ করা হয়।
সাতটি কর্মপরিকল্পনা সামনে রেখে বই আকারে এই রোডম্যাপ প্রকাশ করেছে ইসি।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দেড় বছর আগে এ রোডম্যাপ প্রকাশের পর তা সব রাজনৈতিক দল ও সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানোর কথা জানিয়েছে কমিশন।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা বলেন, নির্বাচনী রোডম্যাপের এই দলীলই সর্বশেষ নয়। সময় ও বাস্তবতার নিরীখে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে কমিশন কর্মকর্তারা আরো বাস্তবিক পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। সময়ের প্রয়োজনে ঘোষিত রোডম্যাপে পরিবর্তন আসতে পারে।

তিনি বলেন, সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচনের আয়োজনের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ আস্থাশীল। নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে বিদ্যমান আইনেই যথেষ্ট বলেও দাবি করেন সিইসি।

ইসি সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ্’র সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, মো. রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, ইসির অতিরিক্ত সচিব মো. মোখলেছুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

দশম সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয় ২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি। সেক্ষেত্রে ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারির আগের ৯০ দিনের মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচনের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

ইসির রোডম্যাপে যে সাতটি কর্মপরিকল্পনা রয়েছে সেগুলো হচ্ছে- আইনি কাঠামোগুলো পর্যালোচনা ও সংস্কার। নির্বাচন প্রক্রিয়া সহজীকরণ ও যুগোপযোগী করতে সংশ্লিষ্ট সবার পরামর্শ গ্রহণ। সংসদীয় এলাকার নির্বাচনী সীমানা পুনঃনির্ধারণ। নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও সরবরাহ। বিধি অনুসারে ভোট কেন্দ্র স্থাপন। নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন এবং নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের নিরীক্ষা এবং সুষ্ঠু নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট সবার সক্ষমতা বৃদ্ধির কার্যক্রম গ্রহণ।

রোডম্যাপ অনুযায়ী, ৩১ জুলাই সুশীল সমাজের সঙ্গে বৈঠকের মধ্য দিয়ে শুরু হবে সংলাপ। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদার সভাপতিত্বে চলবে এ ধারাবাহিক সংলাপ। এছাড়া ৩০০ আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণের কার্যক্রম জুলাইয়ে শুরু হয়ে শেষ হবে ডিসেম্বরে। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট আইন আরপিও ও অন্যান্য আইন এবং বিধিমালা সংশোধন কার্যক্রম জুলাইয়ে শুরু হবে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে আইন সংস্কারের প্রাসঙ্গিক খসড়া প্রস্তুত করা হবে। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যে আইন প্রণয়নের ব্যবস্থা করবে ইসির আইন অনুবিভাগ ও নির্বাচনী সহায়তা ও সরবরাহ অধিশাখা। নতুন দল নিবন্ধন কার্যক্রম অক্টোবরে শুরু হয়ে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে। আগামী বছরের মার্চে নতুন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের তালিকা প্রকাশ করা হবে। এ সময়ের মধ্যে নিবন্ধিত ৪০টি রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন শর্তাদি প্রতিপালন সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ ও পর্যালোচনা করা হবে। ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম ২৫ জুলাই থেকে শুরু হয়ে চলবে আগামী বছরের জুন পর্যন্ত। সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট সবার সক্ষমতা বাড়াতে জুলাই থেকে ভোট গ্রহণ পর্যন্ত বিভিন্ন স্তরে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।

রোডম্যাপে আগামী নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করে জন-আকাঙ্খা পূরণের লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলসহ ছয় ধরনের অংশীজনের সঙ্গে সংলাপ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়া বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিতদের গেজেট প্রকাশের সময় নির্দিষ্ট করে দেয়া, রাজধানীর মতো বড় শহরের আসন সীমিত করে নির্দিষ্ট করে দেয়া, আরপিও-সীমানা নির্ধারণ অধ্যাদেশ বাংলায় রূপান্তরের প্রস্তাবও থাকছে কর্মপরিকল্পনায়।

আইন সংস্কারের বিষয়ে এতে বলা হয়েছে, নির্বাচন পরিচালনায় বিদ্যমান আইন-বিধি প্রয়োগ করে অতীতে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা সম্ভব হয়েছে। এখন আইনি কাঠামোর আমূল সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে ইসি বিবেচনা করে না। তবে পরিবেশ-পরিস্থিতির পরিবর্তনের মুখে এগুলো আরও যুগোপযোগী করার সুযোগ রয়েছে। যাতে ভোট প্রক্রিয়া আরও সহজতর ও অর্থবহ হয়।

Check Also

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল রাষ্ট্রীয় পদে আসীন হচ্ছেন খবরে আসামিপক্ষে শুনানি করেননি সমাজী

জুলাই-আগস্টের গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার সাবেক ৯ মন্ত্রীসহ ১৩ জনকে আন্তর্জাতিক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।