বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশনে জাতীয়তাবাদী হেল্প সেল আয়োজিত ‘গুম, খুন ও নির্যাতনের শিকার পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, অনেক হয়েছে। আর নয়। দেশের মানুষ নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। কারণ, অভিজ্ঞতা বলে বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। বিশেষ করে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর অধীনে।
একারণে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নির্বাচনকালীন সময়ে সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের কথা বলেছেন। দেশের জনগণও তাই চায় বলে দাবি করেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, কীভাবে সেই নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার গঠন করা যায় আসুন তা নিয়ে আলোচনা করি। যাতে করে ওই নির্বাচনে আমরা সবাই নির্বাচনে অংশ নিতে পারি। জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ পায়।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনে আপনাদের পরাজয় হলে পালানোর পথ পাবেন না বলে যে ভয় পাচ্ছেন-সে ব্যাপারে আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই,নির্বাচন সুষ্ঠু হলে দেশের জনগণ আপনাদের সবকিছু দেখে রাখবে। অন্যথায় ঠিকই পালানোর পথ পাবেন না।
হত্যা ও নির্যাতন আওয়ামী লীগের রোল মডেল বলে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান সরকার হিটলারের দলকেও অতিক্রম করেছে। অথচ মাঝে মাঝে দেশে-বিদেশে চিৎকার করে বলে বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে রোল মডেল। আর সেই রোল মডেল হচ্ছে কীভাবে নির্যাতন করা যায়, ভিন্নমত দমন করা এবং অসহায় মানুষদের কীভাবে কুপিয়ে হত্যা করা যায়।
তিনি বলেন, কার কাছে বিচার চাইবো। কার কাছে চাইবো জবাব। গোটা বাংলাদেশের মানুষ আজ আওয়ামী দুঃশাসনের যাতাকলে পড়েছে। তাই আগামী জাতীয় নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে এদের নির্মূল করতে হবে।
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, প্রত্যেকবার প্রতারণা করে যেন ক্ষমতায় আসতে না পারে সেজন্য জনগণকে সচেতন করতে হবে। কারণ, আমরা মনে করি চিরকাল কোনো দুঃশাসন টিকে থাকতে পারে না। এই সরকারও পারবে না।
মামলার ভয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বিদেশে পালিয়েছেন বলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করেন মির্জা ফখরুল।
মামলার ভয়ে খালেদা জিয়ার বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার কথা আহাম্মকও বিশ্বাস করবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, অতীত বলে বাংলাদেশ সৃষ্টির পর থেকে গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রামে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছেন, ত্যাগ শিকার করেছেন খালেদা জিয়া।
তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়া বন্দুকের নলে ক্ষমতায় আসেননি। তিনি স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করে ক্ষমতায় এসেছেন। তাই যে বা যারা এই ধরণের কথা বলছেন এবং চিন্তা করছেন তাদের আগে উচিত আয়নায় নিজের চেহারা দেখা।
বৃহস্পতিবার জাতীয়তাবাদী হেল্প সেলের পক্ষ থেকে পাঁচটি পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়।
পরিবারগুলো হলো- রংপর জেলা যুবদল নেতা মোশাররফ হোসেন পদ্ম, আমিরপুর ইউনিয়ন (খুলনা) যুবদল নেতা নজরুল ইসলাম, ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রনেতা মেহেদী হাসান, পাবনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ছাত্রদল নেতা মাসুম বিল্লাহ ও সিলেট সদর ছাত্রদল নেতা পঙ্গু মো. বদরুল আলম।
এর আগে সংগঠনটি স্বজনহারা ৬৫টি পরিবারকে এককালীন আর্থিক অনুদান দিয়েছে।
সংগঠনের সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন হাসান, হেল্পলাইনের মাকসুদ আহমেদ খান রুবেল, রাজীব আহসান চৌধুরী পাপ্পু, ইটালি বিএনপি শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মান্নান হীরা প্রমুখ।