লন্ডন: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, যে উপায়ে আওয়ামী লীগ ব্রিটিশ পার্লামেন্টে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ বিষয়ক আলোচনা বর্জন করল, তা দেশ ও জাতির জন্য চরম লজ্জার। আওয়ামী লীগ যে সংলাপ, আলোচনা, গণতন্ত্র ও জবাবদিহিতে বিশ্বাস করে না, তা এবার বিদেশের মাটিতেও প্রমাণ করে দিল।
বুধবার লন্ডনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী গত বছর ও চলতি বছরের আমন্ত্রণপত্র দুটি দেখিয়ে বলেন, অতীতের আমন্ত্রণগুলো যেমন ছিল, এবারেরটাও একই ছিল। এখন তারা ‘ব্যক্তিগত আয়োজন’ কিংবা ‘জামায়াত’-এর অজুহাত দিচ্ছেন। সবকিছু জেনেই তারা লন্ডনে এসেছেন এবং সংলাপের আগে দুপুরে সবার সঙ্গে ভোজসভায়ও অংশ নিয়েছেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের আচরণে আলোচনা সভায় উপস্থিত সবাই বিস্মিত হয়েছেন। আমরা বিব্রত হয়েছি। এটা দেশ ও জাতির জন্য লজ্জার।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশে যেখানে আলোচনার কোনো সুযোগ নেই, সেখানে এ ধরনের আয়োজন উভয় পক্ষকে জবাবদিহির একটা সুযোগ করে দেয়। মূলত দেশের সন্ত্রাসবাদ ও আইনের শাসন নিয়ে তাদের বলার মতো কিছুই নেই। তারা জবাবদিহি হতে রাজি নন বলে সংলাপে যাননি।
আয়োজক চার্লস কারলাইল যে ভাষায় আওয়ামী লীগের প্রতি নিজের হতাশার কথা জানিয়েছেন, তা পড়ে শোনান আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই নেতা বলেন, খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমান দলের দুই শীর্ষ নেতা। তাদের মধ্যে সাক্ষাৎ হবে আর রাজনীতি, নির্বাচন—এসব নিয়ে কথা হবে না, সেটি বিস্ময়কর।
গত মঙ্গলবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ‘বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদ ও আইনের শাসন’ শীর্ষক এক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। হাউস অব লর্ডসের সদস্য অ্যালেক্সান্ডার চার্লস কারলাইল ছিলেন এর আয়োজক। মূলত বিএনপি এবং ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নিজ নিজ অবস্থান তুলে ধরার কথা ছিল এ আলোচনা।
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান, পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী এবং সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি সংলাপে অংশ নিতে লন্ডনে আসেন।
কিন্তু নির্ধারিত সময়ে সংলাপ শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পর লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের এক কর্মকর্তা মোবাইলে খুদে বার্তা পাঠিয়ে জানান, আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিরা সংলাপে অংশ নেবেন না। আয়োজকদের কাছে অংশ না নেওয়ার কোনো কারণ ব্যাখ্যা করা হয়নি।
আওয়ামী লীগ না গেলেও বিএনপির প্রতিনিধি ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
বিএনপির প্রতিনিধিদলে ছিলেন- স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহসম্পাদক রুমিন ফারহানা।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির প্রতিনিধিদলের অপর দুই সদস্য ও যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
Check Also
ট্রাইব্যুনালে আ.লীগ নেতাদের বিচার দেখতে এসে যা বললেন সাঈদী পুত্র
জুলাই-আগস্টের গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া সাবেক ৯ মন্ত্রীসহ ১৩ জনকে …