ইউএনও গাজী তারেক সালমান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ওই কার্ড ছেপেছিলেন। আর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিলেন। বলেছিলেন, প্রতিযোগিতায় প্রথম ও দ্বিতীয় স্থান অধিকারী শিশুদের আঁকা ছবি দিয়ে কার্ড ছাপাবেন। এই কাজটি তিনি যখন করেছিলেন, তখন বরিশালের আগৈলঝাড়ার এউএনও ছিলেন। তবে তার বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর বিকৃত ছবি দিয়ে কার্ড ছাপানোর অভিযোগে মামলা হয় ৭ জুন। ততদিনে তিনি আগৈলঝাড়া থেকে বদলি হয়ে বরগুনায় চলে যান। তার বিরুদ্ধে বরিশাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঁচ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ ও মানহানির মামলা করেন বরিশাল আইনজীবী সমিতির সভাপতি ওবায়েদ উল্লাহ সাজু। ওই মামলায় ১৯ জুলাই প্রথমে তার জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিলেও পরে একই দিনে তার জামিন মঞ্জুর করেন আদালত। আর এই বিষয়টি নিয়ে এখন সারাদেশে তুমুল আলোচনা চলছে।
গাজী তারেক সালমান বলেন, ‘আমি আগৈলঝাড়ায় ছিলাম আট মাস। তখন ওই প্রভাবশালী মহলের অনেক অপকর্মের বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলাম। আমি কোনও ঠিকাদার বা জনপ্রতিনিধির অন্যায়কে মেনে নেইনি। এমনও হয়েছে, কাজ ঠিকমতো না হওয়ায় আমি দুই কিস্তির টাকা দিয়ে বাকি টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছি। তারাই আমাকে আগৈলঝাড়ায় থাকতে দেননি। এরপর বরগুনা সদরে বদলি হয়ে গেলে ঘটনার তিন মাস পর তারা আমার বিরুদ্ধে মামলা করেন।’
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে মামলার শিকার হই। ষড়যন্ত্রের শিকার হই। এটা অনেক কষ্টের।’
তার বিরুদ্ধে এই ষড়যন্ত্রমূলক মামলার বিষয়টি প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা এরইমধ্যে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেছেন। প্রকৃত বিষয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেছেন। গাজী তারেক সালমান জানান, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি আমার ভালোবাসা আর অকৃত্রিম শ্রদ্ধা আছে। সেই শ্রদ্ধা থেকেই আমি কাজ করেছি। আমি ভাবতেও পারিনি একটি শিশুর আঁকা ছবি নিয়ে মামলা হতে পারে! অশ্রদ্ধা বা বিকৃতির প্রশ্ন উঠতে পারে। আমার বিশ্বাস, বঙ্গবন্ধু কন্যা, প্রধানমন্ত্রী আমাকে ঠিকই বুঝতে পারবেন।’
বরগুনার এই ইউএনও আরও বলেন, ‘আমি চাই, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র যারা করেছেন, তাদের বিচার হোক। আমাকে যারা কলঙ্কিত করার ষড়যন্ত্র করেছেন, তাদের বিচার হোক। আমি বিশ্বাস করি, আমার আবেদন করতে হবে না। প্রধানমন্ত্রী সুবিবেচক। তিনি নিজ উদ্যোগেই ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন।’ দেশের মানুষ ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে তারেক সালমান বলেন, ‘আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ যে, তারা আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন।’