গাজীপুর সংবাদদাতাঃ গাজীপুরে দু’টি পৃথক সড়ক দূর্ঘটনায় এক ব্যবসায়ীসহ দু’জন নিহত হয়েছে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে এ দূর্ঘটনা ঘটেছে।
মাওনা হাইওয়ে থানার ওসি দেলোয়ার হোসেন জানান, ডাচ বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং শাখার বিক্রয় প্রতিনিধি লেলিন মোল্লা মনির (৩৩) স্থানীয় বিভিন্ন এজেন্ট পয়েন্ট থেকে টাকা নিয়ে শনিবার বেলা ১১টার দিকে মটর সাইকেল নিয়ে গাজীপুরের শ্রীপুরের মাওনা চৌরাস্তায় ফিরছিলেন। পথে তিনি শ্রীপুর উপজেলার এমসি বাজার এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক পার হওয়ার সময় ময়মনসিংগামী একটি কাভার্ডভ্যান তাকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ এবং তার সঙ্গে থাকা এক লাখ সাড়ে ৫৬ হাজার টাকা উদ্ধার করে। নিহত লেলিন মোল্ল্যা মনির (৩৩) শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের দক্ষিণ বারতোপা গ্রামের আব্দুল মালেক মোল্লার ছেলে। সে ডাচ বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং শাখা “রকেট”এর স্থানীয় পরিবেশক খলিফা এন্টারপ্রাইজে কাজ করতো। পুলিশ কাভার্ডভ্যানটি আটক করেছে, তবে ভ্যানের চালক পালিয়ে গেছে।
এদিকে একই মহাসড়কের ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের সামনে এক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। তার নাম জাকির হোসেন (৪৫)। তিনি গাজীপুর সদর উপজেলার বানিয়ারচালা এলাকার মৃত ওমর আলীর ছেলে। তিনি স্থানীয় বিভিন্ন পোশাক কারখানায় ঝুটের ব্যবসা করতেন।
গাজীপুরের নাওজোর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আব্দুল হাই স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানান, ঢাকার উত্তরা এলাকায় স্বপরিবারে থাকেন ঝুট ব্যবসায়ী জাকির হোসেন। শুক্রবার দিবাগত রাতে তিনি নিজে প্রাইভেটকার চালিয়ে উত্তরার বাসা থেকে গাজীপুরে শ্রীপুরের বাঘের বাজারের দিকে যাচ্ছিলেন। পথে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে গাজীপুরের ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের সামনে পৌছলে একটি অজ্ঞাত গাড়ি ওই প্রাইভেটকারকে ধাক্কা দিয়ে চলে যায়। এসময় জাকির নিয়ন্ত্রণ হারালে প্রাইভেটকারটি একাধিকবার ডিগবাজি খেয়ে মহাসড়কের অপর পাশে গিয়ে পড়ে। এতে প্রাইভেটকারটি দুমড়ে মুচড়ে যায় এবং জাকির আহত হয়ে কারের ভিতরে চাপা পড়ে আটকে যায়। স্থানীয়রা কারের ভিতরে আটকে থাকা জাকিরকে উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে ব্যার্থ হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আটকে থাকা জাকিরকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এসময় ওই গাড়ি থেকে ১৭ হাজার দু’শ টাকা উদ্ধার করা হয়।
নিহতের ভাই নাসির উদ্দিন জানান, ব্যবসায়ী জাকির হোসেন স্বপরিবারে ঢাকার উত্তরায় থাকেন। তিনি বাঘের বাজার এলাকার কয়েকটি পোশাক কারখানায় ঝুট ব্যবসা করেন। পোশাক কারখানাগুলোতে দেয়ার জন্য রাতে তিনি বাসা থেকে ২৭ লাখ টাকা নিয়ে বাঘের বাজারের উদ্দেশে রওয়ানা হন। দুর্ঘটনার খবর শুনে ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করা হলেও তার সঙ্গে থাকা ২৭ লাখ টাকা পাওয়া যায়নি। তার মৃত্যুর ঘটনাটি রহস্যজনক বলে দাবী করেন তিনি।
জয়দেবপুর থানার হোতাপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই নাজমুল হাসান জানান, নিহতের সঙ্গে ২৭ লাখ টাকা থাকার বিষয়টি জানা নেই।
মোঃ রেজাউল বারী বাবুল
গাজীপুরে দু’পরিবারকে
ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করতে চাইছে ভূমিদস্যুরা
গাজীপুর সংবাদদাতাঃ গাজীপুরে এক ভূমি অফিসের দালাল ও তার সহযোগি ভুমিদস্যুরা দু’টি পরিবারকে ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করতে নানা জালিয়াতি ও হয়রানী করছে। প্রভাবশালী ওই ভ’মিদস্যুদের ভয়ে আতংকিত ওই দু’পরিবারের সদস্যরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভ’গছে বলে এক সংবাদ সম্মেলনে দাবী করেছে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর বাচ্চু মিয়া ও আবু তাহের মিয়া।
শনিবার দুপুরে গাজীপুর সিটি প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত ওই সংবাদ সম্মেলন সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবারের বাচ্চু মিয়া জানান, প্রায় ৩৫ বছর আগে তার বাবা বছর উদ্দিন মারা যান। বাবার মৃত্যুর পর থেকে তার উত্তরসূরীরা গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের বড় ভবানীপুর মৌজার প্রায় সাড়ে ১০বিঘা জমিতে বাড়ি-ঘর নির্মাণ করে বসবাস করছেন ও চাষবাদ করে ভোগ দখলে রয়েছেন। স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল বছর উদ্দিনের উত্তরসূরীদের ওই ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করতে নানা ষড়যন্ত্র শুরু করে ও ভয়ভীতি দেখাতে থাকে। সম্প্রতি ওই চক্রের দু’সদস্য স্থানীয় ভূমি অফিসের দালাল কফিল উদ্দিন ও মো. সেকান্দার আলী জনৈক মৃত মিয়াজ উদ্দিনের নামে ওই জমির ভূয়া দলিল তৈরী করে। পরে জোর পূর্বক দখলের জন্য ভুমিদস্যুরা ওই জমিতে সাইনবোর্ড টানিয়ে দেয় এবং ভিটেমাটি ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য খুনসহ নানা হুমকি দেয় ও ভয়ভীতি দেখায়। তারা এ ব্যাপারে আদালতে ও পুলিশের কাছে যেতে নিষেধ করে ভয়ভীতি দেখায়। বিষয়টি সুরাহার কথা বলে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল আদালতে ও পুলিশে যেতে বাধা দিয়ে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে ও কাল ক্ষেপণ করছে। ভুমি দস্যুদের নানা হুমকি ও ভয় দেখানোর কারনে আতংকিত হয়ে পড়ে পরিবারগুলোর সদস্যরা। বর্তমানে উৎকণ্ঠা ও নিরাপত্তাহীনতার মধ্য দিয়ে পরিবারের সদস্যরা দিন কাটাচ্ছে।
তিনি আরো জানান, কাশিমপুর ভূমি অফিস, গাজীপুর জেলার রেকর্ড রুম এবং সংশ্লিষ্ট সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে তল্লাশী করে তাদের পর্চা ও দলিলের কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে প্রশাসনিক সহযোগিতা কামনা করেছেন ভুক্তভোগী ওই পরিবার।
###