রাজধানীর শাহবাগে ঢাবি অধিভুক্ত সাতটি কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ছাত্র ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় চোখে গুলিবিদ্ধ তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী মো. সিদ্দিকুর রহমানের (২৩) চোখের দৃষ্টি ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা কম বলে জনিয়েছেন চিকিৎসকরা।
শনিবার সকালে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে তার দুই চোখে অস্ত্রোপচারের পর চিকিৎসকরা এ কথা জানান।
অস্ত্রোপচারের পর ওই হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ইফতেখার মনির বলেন, আঘাতে সিদ্দিকুরের দুটি চোখ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সকাল সাড়ে ৯টায় শুরু হয়ে দেড় ঘণ্টা ধরে দুই চোখ অস্ত্রোপচার করা হয়েছে।
তিনি জানান, সিদ্দিকুরের ডান চোখের ভেতরের অংশ বের হয়ে আসছিল; তা যথাস্থানে বসানো হয়েছে। বাঁ চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে; রক্ত ছিল, তা পরিষ্কার করা হয়েছে।
তবে চোখের আলো ফিরে আসার সম্ভাবনা কম।
রোগীর অবস্থা সম্পর্কে এর থেকে বেশি তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।
এরআগে চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের আবাসিক সার্জন ডা. শ্যামল কুমার সরকার বলেছিলেন, সিদ্দিকুর চোখের ভিশন পাচ্ছেন না। আমরা এক্সরে সিটি স্ক্যান করে দেখেছি, তার চোখের পেছনের হাড় ভেঙে গেছে। তার চোখের পাতা প্রচণ্ড ফোলা ছিল।
সিদ্দিকুরের চোখে কিসের আঘাত জানতে চাইলে তিনি জানান, রোগীর সঙ্গে আসা লোকেরা তার চোখে গুলি লেগেছে বলে জানালেও আমরা ভেতরে গুলি পাইনি। প্রাথমিকভাবে আমাদের মনে হয়েছে, লাঠি বা শক্ত কিছুর আঘাতে চোখের পেছনের হাড় ভেঙে গিয়েছে।
ঢাবির অধিভুক্ত রাজধানীর সাতটি সরকারি কলেজ ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা কলেজ, তিতুমীর কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও সরকারি বাঙলা কলেজের শিক্ষার্থীরা রুটিনসহ পরীক্ষার তারিখ ঘোষণার দাবিতে গত বৃহস্পতিবার শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনের রাস্তায় অবস্থান নেন।
একপর্যায়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। এ সময় শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করা হয়। ওই দিন পুলিশের ‘কাঁদানে গ্যাসের শেলে’ চোখে গুরুতর আঘাত পান তিতুমীর কলেজের ছাত্র সিদ্দিকুর।
এ ঘটনায় পরদিন উল্টো পুলিশ শাহবাগ থানায় ১২০০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করে। এজাহারে সিদ্দিকুর আহত হওয়ার বিষয়ে বলা হয়েছে, মিছিলকারীদের ছোড়া ফুলের টবের আঘাতে তিতুমীর কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র সিদ্দিকুরের দুই চোখ জখম হয়।
আহত সিদ্দিকুর রহমানের বাড়ি ময়মনসিংহের তারাকান্দার ঢাকেরকান্দা গ্রামে। তার চিকিৎসার জন্য পাঁচ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করেছে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।