ঘুমন্ত বাবাকে গলাকেটে হত্যা করেছে ছেলে, দাবি মায়ের

93bfee0987d278f19370267ff1c5bdc2-57cd4e911d80dছেলে তরিকুল ইসলাম তার বাবা আব্দুস সাত্তারকে ঘুমন্ত অবস্থায় গলাকেটে হত্যা করেছে বলে দাবি করেছেন মা রাবেয়া বেগম। বাবাকে জিম্মায় রেখে বিভিন্ন এনজিও থেকে নেওয়া দুই লাখ টাকা যাতে আর না দিতে হয়, সে কারণে ছেলে তরিকুল সড়যন্ত্র করে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। রবিবার (২৩ জুলাই) সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. হুমায়ুন কবিরের আদালতে তরিকুলের মা রাবেয়া বেগম আদালতে এ দাবি করেন।
শুক্রবার (২১ জুলাই) ভোররাতে গলাকেটে হত্যা করা হয় যশোর সদরের নরেন্দ্রপুর এলাকার দিনমজুর আব্দুস সাত্তারকে (৫৫)।
এদিকে সাত্তার হত্যায় জড়িত সন্দেহে নরেন্দ্রপুর মোল্লাপাড়ার ইব্রাহিম নামে একজনকে রবিবার দুপুরে আটক করে পুলিশ। তিনি ওই গ্রামের মজিদ বিশ্বাসের ছেলে। এছাড়া নিহতের ছেলে তরিকুল এবং তার আরেক সহযোগী জুয়েলকে আটক করা হয়েছে আগেই।
রাবেয়া বেগমের দাবির উদ্ধৃতি দিয়ে সাত্তার হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নরেন্দ্রপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই সোহরাব হোসেন
বলেন, ‘নিহত সাত্তারকে জিম্মায় রেখে তার বড় ছেলে তরিকুল ইসলাম বিভিন্ন এনজিও থেকে দুই লাখ টাকা ঋণ নেয়। ঋণ পরিশোধের জন্য সাত্তারকে এনজিওর কর্মীরা চাপ দিতে থাকেন। এছাড়া সাত্তারের মেয়ে আসমা ওমানে থাকাকালে এক লাখ ২০ হাজার টাকা পাঠান। ওই টাকা তরিকুল নিয়ে খরচ করে ফেলেন। রডমিস্ত্রি তরিকুল মাদকাসক্ত হওয়ায় এসব টাকা খরচ করে ফেলেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘এনজিওগুলোর কর্মীদের অব্যাহত চাপে দিশেহারা বাবা তরিকুলকে চাপ প্রয়োগ করতেন। তার মেয়ে আসমাও টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য তার বাবাকে বলতেন। এই নিয়ে তরিকুলের সঙ্গে বাবা সাত্তারের প্রায়ই ঝগড়া হতো।’
জবানবন্দিতে রাবেয়া বলেন,‘টাকা ফেরত না দেওয়ার জন্য তরিকুল তার বাবাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করে। সে গ্রামের কয়েক বন্ধুকে যোগাড় করে। এরমধ্যে অন্যতম ছিল ইব্রাহিম। ঘটনার দিন অর্থাৎ ২১ জুলাই রাত ৪টার দিকে তরিকুল একটি বড় ছুরি নিয়ে তার বাবার শোয়ার ঘরে ঢোকে। দরজার কাছে দাঁড়িয়ে পাহারা দিচ্ছিল ইব্রাহিম। আরও ৩-৪ জন বাইরে ছিল। তরিকুল তার ঘুমন্ত বাবার গলায় চাকু বসিয়ে দেয়। এরপর সে তার নিজের ঘরে যায়। আর বাইরে থাকা ইব্রাহিমসহ তার সহযোগীরা দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর আমি ঘুম থেকে জেগে উঠে তরিকুল ও ইব্রাহিমকে পালিয়ে যেতে দেখি। পরে আমার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে স্বামীক উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে সেখানেই সে মারা যায়।’
এসআই সোহরাব হোসেন বলেন, ‘ রবিবার দুপুরে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে ইব্রাহিমকে আটক করা হয়। তাকে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এছাড়া তরিকুলকে প্রথমদিন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। আজকের জবানবন্দির পর তাকে আটক করা হয়েছে। সন্দেহভাজন আসামি জুয়েলকে আটক করা হয়েছে শনিবার (২২ জুলাই) রাতে। জুয়েল ওই গ্রামের হারুন ওরফে পকেটমার হারুনের ছেলে সহযোগী।
গ্রামবাসী জানায়, ঘটনার সময় নিহতের আরও দুই ছেলে সুজন ও শিমুলের ঘরের বাইরে থেকে ছিটকানি দেওয়া ছিল। কিন্তু তরিকুলের ঘরে ছিটকানি দেওয়া ছিল না। এই কারণে গ্রামবাসী ও পুলিশের সন্দেহ হয়। যে কারণে তরিকুলকে আটক করে পুলিশ।

Check Also

প্রত্যেকটা অফিসের কেরানি পর্যন্ত ফ্যাসিবাদের দোসর : আসিফ মাহমুদ

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।