গরিব মানুষ, যা ছিল সবটুকুই ছেলের চিকিৎসার পেছনে ব্যয় করেছি। নতুন কিছু করব এমন সামর্থ্যও নেই। টাকা জোগাড়ের কোনো উপায়ও নেই। আল্লাহর ওপর ছেড়ে দেয়া ছাড়া কী আর করব বলুন? পারলে আপনারা সহযোগিতা করেন। আমার ছেলেটিকে আপনারা বাঁচান।’
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের তিন নম্বর ওয়ার্ডের ১নং বেডে মৃত্যুর মুখে থাকা ‘গ্রানুলোমেটাস ডিজিজে’ আক্রান্ত ছেলেকে কোলে নিয়ে জাগো নিউজকে এসব কথা বলেন শিশু ইব্রাহিম শেখের মা হাসিনা খাতুন।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি আরও বলেন, শহরে ইব্রাহিমের বাবার একটি ফলের দোকান রয়েছে। সেখান থেকে রোজগারও খুব বেশি হয় না। ইব্রাহিমের বয়স এখন ১১ মাস। জন্মের ৬ মাস পর থেকেই এমন রোগ দেখা দেয়। স্থানীয় বিভিন্ন চিকিৎসক দেখিয়েও কোনো সুফল মেলেনি। বাড়িতে যা কিছু ছিল বিক্রি করে অবশেষে নিয়ে যাওয়া হয় পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের ভেলোরে। সেখানকার চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, চিকিৎসা করাতে প্রায় ২৫ লাখ টাকার প্রয়োজন। এসব শুনে ফিরে আসি দেশে। আর চিকিৎসা করা হয়নি।
মা হাসিনা খাতুন বলেন, আমাদের সাধ্য নেই এত টাকা জোগাড় করার। আপনারা আমার ছেলেটাকে বাঁচান। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি একটু দেখুন। আমার ছেলেকে বাঁচান।
এদিকে বর্তমানে শিশুটি সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও সেখানে কোনো চিকিৎসা হচ্ছে না। চিকিৎসকরা জানিয়ে দিয়েছেন শিশুটির চিকিৎসা এখানে সম্ভব নয়।
সাতক্ষীরা সদরের লাবসা ইউনিয়নের মাগুরা গ্রামের শিশু ইব্রাহিমের বাবা শেখ জয়নাল আবেদীন জাগো নিউজকে বলেন, সাতক্ষীরার বড়বাজারে আমার একটি ফলের দোকান রয়েছে। সব শেষ করে ফেলেছি ছেলেটার জন্য। কোনো লাভ হলো না। আপনারা একটু সহযোগিতা করুন। আমার বাচ্চাটাকে সুস্থ করার ব্যবস্থা করুন।
শিশুটির চিকিৎসার বিষয়ে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা. তাওহিদুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, বাচ্চাটির সমস্যা মূলত জন্মগত সমস্যা। সাতক্ষীরা হাসপাতালে শিশুটির চিকিৎসা সম্ভব নয়। ঢাকার কোনো অত্যাধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসা করালে হয়তোবা বাচ্চাটি সুস্থ হয়ে যাবে। ঢাকা শিশু হাসপাতাল বা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার চিকিৎসা করানো যেতে পারে।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. শামসুর রহমান জানান, শিশুটি গ্রানুলোমেটাস ডিজিজে আক্রান্ত। সাতক্ষীরায় তার চিকিৎসা সম্ভব নয়।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু বলেন, শিশুটির বিষয়ে খোঁজখবর নিয়েছি। পরিবারটি অসহায়। চিকিৎসকদের সঙ্গেও কথা বলেছি। হৃদয়বান মানুষরা সহযোগিতার হাত বাড়ালে হয়তো শিশুটিকে বাঁচানো সম্ভব হবে।
শিশু ইব্রাহিমের চিকিৎসায় সহযোগিতা করতে চাইলে যোগাযোগ করতে পারেন শিশুটির বাবা শেখ জয়নাল আবেদীন (০১৭১৯৪৮২২৯৯)।