, বগুড়া: বগুড়ায় মেয়েকে ধর্ষণের পর বিচারের নামে মা-মেয়েকে নির্যাতনের মামলায় ধর্ষক শ্রমিক লীগের সভাপতি তুফান সরকারের স্ত্রী আশা খাতুন, শাশুড়ি রুমী বেগম এবং স্ত্রীর বোন পৌর কাউন্সিলর মারজিয়া হাসান রুমকিসহ ৬ জনের ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে পুলিশ।
সোমবার বগুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমদাদ হোসেন অভিযুক্তদের আদালতে হাজির করে এই রিমান্ড আবেদন করেন।
এর আগে রবিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সাভারের হেমায়েতপুর থেকে পুলিশ তুফানের স্ত্রীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ জানায়, তুফানের স্ত্রী গ্রেপ্তার এড়াতে ঢাকা আসছেন এমন তথ্যের ভিত্তিতে তারা মহাসড়কে তল্লাশি চালাচ্ছেন। ওই অভিযানে রাতে সন্দেহভাজন একটি গাড়ি থেকে তাদের আটক করা হয়। গ্রেফতারের পর তাদের রাতেই বগুড়া নিয়ে যায় পুলিশ।
এছাড়াও মামলার আরো দুই অভিযুক্ত তুফানের স্ত্রীর বোন বগুড়া পৌরসভার সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর ও তার মাকে পুলিশ পাবনা থেকে গ্রেপ্তার করে।
দলীয় ক্যাডার দিয়ে তুলে নিয়ে নিজ বাড়িতে ধর্ষণ এবং তার কয়েকদিন পর সেই কিশোরী ও তার মায়ের মাথার চুল কামিয়ে দেয়া হয়।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তি বগুড়া শহর শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক তুফান সরকার। তিনজন সহযোগীসহ তুফান সরকারকে শনিবারই গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কিশোরী ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত ১০ আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পুলিশের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাসের ১৭ তারিখে তুফান সরকার ওই মেয়েটিকে কলেজ ভর্তিতে সাহায্য করার প্রলোভন দেখিয়ে বাড়ি থেকে ডেকে পাঠায়। কিন্তু মেয়েটি তাতে সাড়া না দিলে, দলীয় কয়েকজন ক্যাডার পাঠিয়ে মেয়েটিকে বাড়ি থেকে তুলে আনে তুফান।
এরপর মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয়। পরে অসুস্থ অবস্থায় মেয়েটিকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়।
পুলিশ আরো জানিয়েছে, গত শুক্রবার ধর্ষণের শিকার মেয়েটি এবং তার মাকে আবারো ক্যাডার পাঠিয়ে বাড়ি থেকে জোর করে তুলে আনে তুফানের স্ত্রী এবং স্ত্রীর বোন যিনি বগুড়া পৌরসভার সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর।
তাদের নিজের বাসায় নিয়ে রড ও লাঠি দিয়ে ব্যাপক মারধরের পর দুইজনেরই মাথা কামিয়ে দেয় তুফানের স্ত্রী ও তার।
আহত কিশোরী এবং তার মা এখন বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
ধর্ষণের শিকার কিশোরীর মা জানিয়েছেন, তার মেয়ে এবং তার ওপর করা অত্যাচারের বিচার চান তিনি। শুক্রবার রাতে ওই মেয়েটির মা তুফান সরকার এবং তার স্ত্রীসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগে দুটি মামলা করেন। এরপর পুলিশ তুফান সরকার এবং তার তিন সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে শনিবার।
তাদের একজন শনিবার ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দিয়েছে। তুফান সরকারসহ বাকি তিনজনকে পুলিশ রিমান্ডে নেয়ার আবেদন জানানো হলে রবিবার দুপুরে আদালত তাদের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।