বিএনপির প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ অভিযান ও নবায়ন কার্যক্রমকে নজরদারিতে রেখেছে দেশের প্রভাবশালী কয়েকটি গোয়েন্দাসংস্থা। ১১টি ক্যাটাগরিতে দলটির সদস্য সংগ্রহ অভিযানের তথ্য দ্রুত জমা দিতে মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছে সংস্থাগুলো। এদিকে সদস্য ফরম থেকে নেতাকর্মীদের প্রাপ্ততথ্যের ভিত্তিতে একটি আধুনিক ডাটাবেজ তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
গোয়েন্দাসূত্রগুলো জানিয়েছে, বিএনপির সদস্য সংগ্রহ অভিযানকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে সরকার। নির্বাচনের আগে এই সদস্য অভিযান নেতাকর্মীদের ওপর কী প্রভাব ফেলে, এ নিয়ে সরকারের মধ্যে আগ্রহ আছে। এ কারণে একাধিক সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সদস্য অভিযানের তথ্য সংগ্রহ করতে। ২৬ ও ২৭ জুলাই সংস্থাগুলোর এ নির্দেশনা জারি করে।
সূত্র জানায়, ১১টি ক্যাটাগরিতে মাঠ পর্যায়ের গোয়েন্দাদের তথ্য নিতে বলা হয়েছে। এর মধ্যে ৯টি ক্যাটাগরি হচ্ছে, বিএনপির নতুন সদস্য সংগ্রহ অভিযানের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য, সদস্য সংগ্রহের প্রত্যেকটি আয়োজনের স্থান, দিন-কাল, অভিযানে উপস্থিত হওয়া কেন্দ্রীয় নেতাদের নাম ও পরিচয়, স্থানীয়ভাবে সদস্য সংগ্রহ অভিযানের নেতৃত্বে কারা আছেন, নবায়নকৃত নতুন সদস্যদের আনুমানিক সংখ্যা, অভিযান অনুষ্ঠানে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা, বিএনপির সদস্য সংগ্রহে স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে সাড়া ও প্রতিক্রিয়া কেমন, এই কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের কেউ বা উল্লেখযোগ্য প্রভাবশালী ব্যক্তি সদস্য হয়ে থাকলে তার পরিচয়, অভিযানের পেছনে কোনও এনজিও বা সংস্থা ভূমিকা রাখছে কিনা। আর বাকি দুটি হচ্ছে, মন্তব্য ও সুপারিশ।
বিএনপির মিডিয়া উইং জানিয়েছে, ৩১ জুলাই পর্যন্ত প্রায় ৬০ লাখের বেশি ফরম বিতরণ হয়েছে। সারাদেশের নেতাকর্মীদের কাছে এই ফরম পৌঁছে গেছে। ১০ টাকা দরের এই ফরমে ইতোমধ্যে প্রায় ৬ কোটি টাকা সংগৃহীত হয়েছে। গত ১ জুলাই দুই মাসব্যাপী সদস্য সংগ্রহ অভিযান উদ্বোধন করেন চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, ‘গত ২০১৩ সালে সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রমের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫০ লাখ। এবার আমাদের টার্গেট ১ কোটি।’ ওই অনুষ্ঠানে তিনি আশা প্রকাশ করেন, ‘সবাই মিলে দায়িত্ব নিলে এটা কঠিন কাজ নয়।’
মিডিয়া উইং সূত্র জানায়, প্রাপ্ততথ্য দিয়ে নেতাকর্মীদের একটি আধুনিক ডাটাবেজ তৈরি করা হবে। দলের ওয়েবসাইটে এ তথ্য যুক্ত করা হবে। ১ জুলাই দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছিলেন, ‘সরকার প্রায় বিএনপির নেতাকর্মীদের গুম করে ফেলে, মায়ের কাছ থেকে তুলে নিয়ে যায়। তাই লিখিতভাবে নেতাকর্মীদের নাম-ঠিকানা এখন সংগ্রহ থাকবে।’
দলের চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান জানান, ফরম বিতরণের সংখ্যা এখন পর্যন্ত প্রায় ৬০ লাখ পেরিয়ে গেছে। নেতাকর্মীদের তথ্য দিয়ে আধুনিক ডাটাবেজ করা হবে আশা করি।’
জানতে চাইলে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘সদস্য ফরম বিতরণ কার্যক্রম এগিয়ে চলেছে। আর এটি প্রকাশ্যেই হচ্ছে। এখানে আলাদা করে নজরদারির কিছু নেই।’ সরকার ভীত হয়ে এমন করে বলে মন্তব্য করেন রিজভী।