ঢাকা: সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের ‘ঐতিহাসিক’ রায় পর্যালোচনা করছে বিএনপি। দলটির সিনিয়র আইনজীবীরা শনিবার দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, রায়ে বর্তমান সংসদকে ‘অকার্যকর’ বলে মন্তব্য করায় সংসদ ভেঙে দেয়ার দাবি তুলতে পারে বিএনপি। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালতে রিটও করা হতে পারে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, জমির উদ্দিন সরকার, জয়নুল আবেদিন, মীর নাসির উদ্দিন, নিতাই রায় চৌধুরী, এ জে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, মাসুদ আহমেদ তালুকদার প্রমুখ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক শীর্ষনেতা বৈঠক শেষে জানান, ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় ঐতিহাসিক। পূর্ণাঙ্গ রায় আমরা স্টাডি করছি। রায়ে বর্তমান সংসদকে ‘ডিসফাংশনাল’ (অকার্যকর) বলা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আইনি কী কী পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে, তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বর্তমান সংসদে ১৫৩/১৫৪ জন সংসদ সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। সংবিধানের ৬৫/২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী- জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হবেন সংসদ সদস্য। সেক্ষেত্রে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির ওই নির্বাচনে এর সম্পূর্ণ ব্যত্যয় ঘটেছে।’
‘এখন যেহেতু দেশের সর্বোচ্চ আদালত সংসদে অকার্যকর বলেছে, সেহেতু আইনি পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে তারা চিন্তাভাবনা করছেন। সংসদ ভেঙে দেয়ার বিষয়ে রিট করার বিষয়ে চিন্তা করা হচ্ছে।’ -বলছিলেন ওই নেতা।
ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে সরকারের পদত্যাগ দাবি করেছে বিএনপি।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমান সরকার অবৈধভাবে অনৈতিকভাবে ক্ষমতায় আছে। আপিল বিভাগের যে পূর্ণাঙ্গ রায় বেরিয়েছে, যেকোনো সভ্য দেশ হলে, গণতান্ত্রিক দেশ হলে সরকার পদত্যাগ করতো। রায়ে বিচার বিভাগ বলেছে, দেশে গণতন্ত্র নেই, মানবাধিকার নেই। এদেশে পার্লামেন্টে নন ফাংশনাল হয়ে গেছে। এদেশে আইনের শাসন নেই এবং বিচার বিভাগকে তারা (সরকার) নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে। পর্যবেক্ষণে এও বলা হয়েছে যে, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন ছাড়া এখানে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া সম্ভব নয়।