আলিফ হোসেন,তানোর
রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী ) সংসদীয় আসনের নির্বাচনী এলাকায় বিএনপিতে প্রার্থী নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে, এতে তৃণমূলের নেতা ও কর্মী-সর্থকগণ চরম বিপাকে রয়েছে বলেও তৃণমূলের অভিযোগ। এদিকে সাবেক ডাকমন্ত্রী ব্যারিস্টার আমিনুলের বিকল্প নেতৃত্ব হিসেবে বিএনপির তৃণমূল শাহীনের দিকে ঝুঁকছে। ফলে ইতমধ্যে প্রবাসী বিএনপি নেতা অধ্যাপক শাহাদাৎ হোসেন শাহীন মনোনয়নের দৌড়ে অন্যদের থেকে অনেকটা এগিয়ে রয়েছেন। বিশেষ করে তরুণ ভোটারদের মধ্যে শাহীনের আকাশচুম্বি জনপ্রিয়তার সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় বিএনপির একটি অংশ ইতমধ্যে শাহীনকে প্রার্থী দরে নিয়ে তার পক্ষে জনমত গড়ে তুলতে কাজ শুরু করেছে। জানা গেছে, ব্যারিস্টার আমিনুল হকের বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদে মদদদান, অবৈধ সম্পদ অর্জন ও বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ উঠায় তার প্রার্থীতা নিয়ে চরম অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। কারণ হিসেবে দেখা গেছে, ফের এসব মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু হলে আমিনুল হক প্রার্থী হতে পারবে না। যে কারণে বিএনপি তাকে নিয়ে এবার এতোবড় ঝুকি নিতে সাহস পাচ্ছেন না। তার বিকল্প হিসেবে বিএনপি প্রাথমিক ভাবে শাহীনকে প্রার্থী হিসেবে ধরে নিয়ে ভোটের মাঠে নেমেছে। আর এই সুযোগে আমেরিকা প্রবাসী বিএনপি নেতা অধ্যাপক শাহাদাৎ হোসেন শাহীন তানোর-গোদাগাড়ির রাজনীতির মাঠে ঝড় তুলেছে। তিনি নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি অলিগলি পোষ্টার, ফেস্টুন ও ব্যানার দিয়ে ইতিমধ্যে নির্বাচনী মাঠের দখল নিয়েছেন। এদিকে শাহীন তরুণ, মেধাবী, তানোরের বাসিন্দা হওয়ায় তানোর বিএনপির সিংহভাগ শাহীনকে সমর্থন জানিয়েছেন। তাদের দাবি আওয়ামী লীগ যদি তানোরের বাসিন্দাকে এমপি বানাতে পারে তাহলে বিএনপি কেনো পারবে না, তাদের দাবি একটি বার তানোরের মানুষকে বিএনপি থেকে এমপি প্রার্থী করে দেখা যাক না কি হয়। অপরদিকে ব্যারিস্টার আমিনুলের বিকল্প নেতৃত্ব হিসেবে বিএনপির তৃণমূলের নেতা ও কর্মী-সমর্থকগণ শাহীনের প্রতি ঝুকছে। ফলে শাহীন ঝড়ে ব্যারিস্টার আমিনুলের দীর্ঘদিনের সাজানো মাঠ তছনছ হয়ে উঠেছে। এদিকে ব্যারিস্টার আমিনুল হক তানোর বিএনপির পকেট কমিটি ঘোষণা করায় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে ফের মতবিরোধ ও দলীয়কোন্দল তীব্র আকার ধারণ করেছে। অপরদিকে দীর্ঘদিন ধরে তানোর উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা দুটি গ্র“পে বিভক্ত রয়েছে। ইতপূর্বে তানোর ও গোদাগাড়ী উপজেলা বিএনপির একাংশ ব্যারিস্টার আমিনুল হককে এলাকায় অবাঞ্চিত ঘোষণা করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নতুন মূখের প্রার্থী মনোনয়নের জন্য বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে সুপারিশ করেছেন বলে স্থানীয় বিএনপির দায়িত্বশীল একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির সাম্ভব্য প্রার্থী হিসেবে যাদের নিয়ে আলোচনা হচ্ছে তারা হলেন-সাবেক ডাকমন্ত্রী ব্যারিস্টার আমিনুল হক, বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক উপদেষ্ঠা ও সাবেক সচিব এসএম জহুরুল ইসলাম, জেলা বিএনপির যুববিষয়ক সম্পাদক সাজেদুর রহমান মার্কনী ও প্রবাসী বিএনপি নেতা অধ্যাপক শাহাদাৎ হোসেন শাহিন প্রমূখ। এদের মধ্যে প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে শাহীন অন্যদের থেকে অনেক এগিয়ে রয়েছে।
রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) বিএনপির শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত থাকলেও গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ব্যারিস্টার আমিনুল হকের বড় ভাই সাবেক আইজিপি ড, এনামূল হক আওয়ামী লীগ প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধূরীর কাছে ভোটের বড় ব্যবধানে পরাজিত হয়। স্থানীয় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক ও বিশ্লেষকদের অভিমত, বিএনপির দুই গ্র“পের মধ্যে বিরাজমান দলীয়কোন্দ্বল, ব্যারিস্টার আমিনুলের বিরুদ্ধে জঙ্গীবাদে মদদদান, অনিয়ম-দূর্নীতি ও অর্থপাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগে একাধিক মামলা ও রাজনৈতিক জটিলতায় ব্যারিস্টার আমিনুল হকের আতœগোপণের কারনে বিএনপি প্রার্থীর এমন ভরাডুবি হয়েছিল।
সূত্র জানায়, ২০০৫ সালে তানোর ও গোদাগাড়ী উপজেলা বিএনপির মধ্যে ফাঁটলের শুরু হলেও তেমন মারাতœক ছিল না। কিšত্ত ২০০৬ সালের মে মাসে তৎকালীন মন্ত্রী ব্যারিস্টার আমিনুল হকের নির্দেশে রাজশাহী জেলা যুবদলের সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন তপু স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তানোর ও গোদাগাড়ী যুবদলের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করলে এই ফাঁটল প্রকাশ্যে ও মারাতœক রুপ নেয়। সেই সময়ে তৃণমূলের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা প্রকাশ্যে দুই শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়ে যা বিরাজমান রয়েছে বলে তৃণমূলের নেতা ও কর্মী-সমর্থকদের অভিযোগ। এদিকে একাধিকবার যোগাযোগের চেস্টা করা হলেও বিএনপির দায়িত্বশীল কারো কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। #
তানোর প্রতিনিধি
Check Also
কুমিল্লা ও ফরিদপুরকে বিভাগ করার সুপারিশ দেবে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন
কুমিল্লা ও ফরিদপুরকে বিভাগ করার সুপারিশ করতে যাচ্ছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সচিবালয় …