ঢাকা: পুরান ঢাকার দর্জি দোকানি বিশ্বজিৎ দাস হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর আজ রোববার রায় ঘোষণা করবে হাইকোর্ট।
বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করবেন।
রায় ঘোষণার জন্য মামলাটি সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের দৈনন্দিন কার্যতালিকার দুই নম্বরে অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। এর আগে দীর্ঘ ১৫ কার্য দিবসব্যাপী শুনানি শেষে গত ১৭ জুলাই হাইকোর্ট রায়ের জন্য এ দিন ধার্য করে দেয়।
এদিকে নৃশংস ওই হত্যাকাণ্ডের পর সাড়ে চার বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো গ্রেফতার করা যায়নি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি রাজন তালুকদার ও মীর মো. নূরে আলম লিমনসহ ১৪ আসামিকে।
অভিযোগ রয়েছে, পলাতকরা সাজা পরোয়ানা নিয়ে দেশ ও বিদেশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু তাদের গ্রেফতার করতে পারছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে এই মামলায় পাঁচজন মৃত্যুদণ্ড ও দুইজন যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি কারাগারে আছেন।
বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলো- রফিকুল ইসলাম ওরফে চাপাতি শাকিল, মাহফুজুর রহমান নাহিদ, ইমদাদুল হক এমদাদ, জিএম রাশেদুজ্জামান শাওন, সাইফুল ইসলাম, কাইয়ুম মিয়া টিপু, রাজন তালুকদার (পলাতক) ও মীর মো. নূরে আলম লিমন (পলাতক)। যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে এএইচএম কিবরিয়া ও গোলাম মোস্তফা গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন।
এর মধ্যে পলাতক রয়েছে- খন্দকার ইউনুছ আলী, তারিক বিন জোহর ওরফে তমাল, আলাউদ্দিন, ওবায়দুল কাদের তাহসিন, ইমরান হোসেন, আজিজুর রহমান, আল আমিন, রফিকুল ইসলাম, মনিরুল হক পাভেল, কামরুল হাসান ও মোশারফ হোসেন।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর বিএনপির ডাকা সকাল-সন্ধ্যা অবরোধের সময় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ভেবে পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্কের সামনে ছাত্রলীগের একদল কর্মী বিশ্বেিজক পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে। নিরীহ ওই যুবককে দিন-দুপুরে নৃশংসভাবে হত্যার দৃশ্য টেলিভিশনে দেখে আঁঁতকে উঠেছিল দেশের মানুষ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ২০১৩ সালের মার্চ মাসে আদালতে এই হত্যা মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ২১ নেতাকর্মীকে আসামি করে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
ওই বছরের ১৮ ডিসেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক নিজামুল হক ৮ জনকে ফাঁসি ও ১৩ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।
বিচারিক আদালতের এ রায়ের পর বিচারিক আদালতের ফাঁসির রায় অনুমোদনের জন্য নথি ডেথ রেফারেন্স আকারে হাইকোর্টে আসে। পাশাপাশি দণ্ডপ্রাপ্ত কারাবন্দী আসামিরা রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে।
পেপারবুক প্রস্তুতের পর গত ১৬ মে থেকে ওই ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়। দীর্ঘ ১৫ কার্য দিবসব্যাপী শুনানি শেষে গত ১৭ জুলাই হাইকোর্ট রায়ের জন্য এ দিন ধার্য করে দেন।