আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে না বাড়িতে সেটা জানলে দেখতে যেতেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহা। অধস্তন (নিম্ন) আদালতের বিচারকদের জন্য সুপ্রিম কোর্টের প্রস্তাবিত শৃঙ্খলা বিধি সংক্রান্ত মাসদার হোসেন মামলার শুনানিতে রোববার তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আইনমন্ত্রী অসুস্থ সেটা পেপার (পত্রিকা) পড়ে জেনেছি। ওনি (আইনমন্ত্রী আনিসুল হক) হাসপাতালে নাকি বাসায় ছিলেন জানলে আমরা তো দেখতে যেতে পারতাম।’
পরে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বিভারেগ বেঞ্চ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী গেজেট প্রকাশে সরকারকে আরও দুই সপ্তাহ সময় দেন।
মামলায় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে সময় আবেদন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। শুনানির সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমরা সবাইকে নিয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করতে চাই। আমার ব্রাদার্সরা (বিচারপতিরা) অপেক্ষায় আছে।’
গত ৩০ জুলাই আইন মন্ত্রণালয় থেকে জমা দেয়া খসড়া গ্রহণ না করে আলোচনায় বসার আহ্বান জানান আপিল বিভাগ। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী ভবনের অডিটরিয়ামে এক আলোচনা সভায় বলেন, ‘আগামী বৃহস্পতিবার আলোচনায় বসবো।’ তবে বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমকে তার অসুস্থতার কথা জানান। বিষয়টি সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রার জেনারেলকে জানিয়ে দেয়া হয়।
১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর মাসদার হোসেন মামলায় ১২ দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেয়া হয়। ওই রায়ের আলোকে নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা ছিল। আপিল বিভাগের নির্দেশনার পর গত বছরের ৭ মে আইন মন্ত্রণালয় একটি খসড়া শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধি প্রস্তুত করে সুপ্রিম কোর্টে পাঠায়।
ওই বছরের ২৮ আগস্ট এই মামলার শুনানিতে আপিল বিভাগ জানান, শৃঙ্খলা বিধিমালা সংক্রান্ত সরকারের খসড়াটি ছিল ১৯৮৫ সালের সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার হুবহু অনুরূপ। যা মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পরিপন্থী। এরপরই সুপ্রিম কোর্ট একটি খসড়া বিধিমালা করে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। একই সঙ্গে ৬ নভেম্বরের মধ্যে তা প্রণয়ন করে প্রতিবেদন আকারে আদালতকে অবহিত করতে আইন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন।