বুধবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে এই নির্মম নির্যাতনের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় কুষ্টিয়াজুড়ে তোলপাড় চলছে। পুলিশ ঘটনায় জড়িত দুই জনকে গ্রেফতার করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও দুই শিশুর পরিবারসূত্র জানায়, ৪-৫দিন আগে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার ছেঁউড়িয়ার চরমণ্ডলপাড়া এলাকার রূপালী নামে এক নারীর মোবাইল ফোন চুরি হয়। ওই ঘটনায় তারা একই এলাকার ৭ বছরের এতিম শিশু জুয়েল ও আসিফকে সন্দেহ করে।
বুধবার বিকালে একই এলাকার প্রভাবশালী তানজিল ও মীর আক্কাস ওরফে মিরু তাদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে তানজিলের শ্বশুরবাড়ির সামনে আমগাছের ডালের সঙ্গে বেঁধে তাদের ঝুলিয়ে বেধড়ক পেটায়।
এসময় শিশু দু’টি মোবাইল চুরি করেনি বলে শত আকুতি করলেও নির্যাতন থেকে রেহাই পায়নি। পরে শিশু আসিফের পরিবারের কাছ থেকে দুই হাজার টাকা নিয়ে আসিফকে ছেড়ে দেয় নির্যাতকরা। এদিকে বেধড়ক পিটুনিতে শিশু জুয়েল গুরুতর আহত হয়ে পড়লে রাতে স্থানীয়রা তাকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দাযিত্বরত চিকিৎসক মেডিকেল অফিসার হুসাইন মহম্মদ শিহাব জানান, শিশুটির শরীরের কয়েকটি স্থানে চাপা রক্ত জমাট বাধার চিহৃ রয়েছে।
স্থানীয় যুবক আশরাফুল জানান, তিন বছর আগে জুয়েলের বাবা সিরাজুল মারা যায়। মা দেশের বাইরে থাকে। রাজমিস্ত্রি বড় ভাইয়ের কাছে থেকে সে লালনশাহ মাজারের সামনে একটি দোকানে কাজ করতো।
স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার নুর মহম্মদ জানান, নির্যাতনের ভিডিওটি বুধবার রাতেই দেখেছি। এ ব্যাপারে নির্যাতিত ওই শিশুর পরিবারকে আইনের আশ্রয় নেয়ার কথা বলা হয়েছে।
কুমারখালী থানা পুলিশ এ ঘটনার অন্যতম হোতা ছেঁউড়িয়ার চর মণ্ডলপাড়ার তানজিল ও তার শাশুড়ি রোকেয়া খাতুনকে বুধবার রাতেই গ্রেফতার করেছে। তবে এ ঘটনার অপর হোতা মীর আক্কাস ওরফে মিরুকে পুলিশ এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি।
কুমারখালী থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল খালেক বলেন, নির্যাতিত শিশুটির পরিবার মামলা করতে চায়নি। আমরা তাদেরকে থানায় ডেকে নিয়ে এসে পাশে দাঁড়িয়ে মামলা করিয়েছি। নির্যাতিত শিশু জুয়েলের বড় ভাই রবজেল খান বাদী হয়ে কুমারখালী থানায় বৃহস্পতিবার এ মামলা দায়ের করেন বলে জানান ওসি।
মামলায় তানজিল, তার শাশুড়ি রোকেয়া খাতুন ও মীর আক্কাস ওরফে মিরুকে আসামি করা হয়েছে। মামলা নং-৯।