দুর্নীতির ধারাবাহিক প্রতিবেদন…
অভয়নগরে বাশুয়াড়ী পীর খানজাহান আলী শিশু সনদ এতিমখানা ১০ বছর ধরে বন্ধ : লক্ষ টাকা আত্মসাৎ
নেপথ্যে মাদরাসা কমিটি, সুপার ও সমবায় অধিদপ্তর
বি.এইচ.মাহিনী ঃ অভয়নগর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বাশুয়াড়ী গ্রামের পীর খানজাহান আলী শিশুসনদ এতিমখানা ১০ বছর ধরে বন্ধ থাকলেও সচল দেখিয়ে মোটা অংকের সরকারী অর্থ, আদায়কৃত চামড়া, চাল, যাকাত-ফেতরাসহ মানতের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে। টাকা আত্মসাতের নেপথ্যে রয়েছে উক্ত মাদরাসার প্রিন্সিপাল, এতিমখানার কথিত সভাপতি ও উপজেলা সমবায় অধিদপ্তরের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাদের অদৃশ্য হাত ও নজর রয়েছে বলে জানা গেছে। খোজ নিয়ে জানা যায়, বাশুয়াড়ী শিশু সনদ এতিমখানা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৬ সালে। আলিম মাদরাসা সংলগ্ন মাঠের পাশে দীর্ঘদিন ভবন না থাকলেও ২০০৩ সালে মাদরাসার পাকা ভবন তৈরি হয়। যার অবস্থা আজ নাজুক। রান্না বন্ধ, এতিম না থাকায় ভবনেরও কোন সংস্কার হয়নি। কিন্তু থেমে নেই অসাধু ব্যক্তিদের সরকারী অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার কৌশল। মাদরাসার আয় ব্যয় ও ইতিমদের কথা জিজ্ঞাসা করতেই প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মাও. আবুল কাশেম জানান, ৮-১০ বছর ধরে মাদরাসা বন্ধ। কোন এতিম নেই। ও সম্পর্কে আমি এখন কিছুই জানি না। প্রিন্সিপাল মাও. সাইফুল্লাহ জানান, ১০-১১ জন এতিম মাদরাসায় আছে। আয়-ব্যায় ও সরকারী অনুদান তাদের পিছনে ব্যয় করা হয়। উভয়ের কথায় অমিল থাকায় ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল এক অবাস্তব কাহিনী। রান্না ঘরে চুলা নেই, ঘর ভাঙ্গা, এতিমখানা ভবনে তালা লাগানো। যা দেখে স্থানীয় সুধীজন ব্যাপক হতাশ হয়েছেন। এ বিষয়ে একান্তভাবে মাদরাসার এক মৌলভি শিক্ষকের সাথে কথা বললে তিনি জানান, বছরে দুবার ৩৩ থেকে ৬৬ হাজার টাকা পর্যন্ত অনুদান আসে। যা ১০ বছরে সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা। চামড়া আদয়ে গড়ে ৪০ হাজার টাকা করে যা ১০ বছরে ৪ লক্ষাধিক টাকা। প্রতি বছর গড়ে ১’শ ৫০ টি বাশ আদায়। যা ১০ বছরের হিসেবে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, প্রতি বছর ৮-১০ মন চাল আদায়। যা ১০ বছরে মূল্য লক্ষাধিক টাকা। এছাড়া যাকাত ফেতরা মানতের টাকা সহ ঈদগাহে বছরে দু’বার আদায়ে ১০ বছরে তিন লক্ষাধিক টাকা। যার কোনো হদিস নেই। এর খবর একমাত্র প্রিন্সিপাল ও সভাপতি ছাড়া আর কেউ জানে না। মাদরাসার সভাপতি মাও. আবুল কাশেম কিছু না জানলেও বছরে এক/দু বার সরকারী অনুদানের টাকার চেকে সই করে প্রতিষ্ঠান প্রধানকে টাকা তুলতে সহযোগিতা করেন বলে জানান অধ্যক্ষ আবুল বাশার সাইফুল্লাহ। তিনি আরো জানান জুন জুলাইয়ে আসা ৬৬ হাজার টাকার চেকে সভাপতি কাশেম সাহেব সই করেছেন। যা সমবায় অধিদপ্তরের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে ক্যাশ করা হয়েছে।