পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের শূন্য আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন নওয়াজের স্ত্রী বেগম কুলসুম নওয়াজ। এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিন পর আবার রাজনীতিতে ফিরছেন তিনি।
সুপ্রিমকোর্টের রায়ে নওয়াজ অযোগ্য ঘোষিত হওয়ার পর ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির ১২০ নম্বর আসনটি শূন্য হয়ে পড়ে। এরপর নওয়াজ তার আসনে (লাহোর-৩) উপনির্বাচনে কাকে মনোনয়ন দিচ্ছেন তা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়।
শেষ পর্যন্ত পিএমএল-এন কুলসুম নওয়াজকে উপনির্বাচনের প্রার্থী মনোনীত করে। এ নির্বাচনে প্রায় ৩৫ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র গ্রহণ করেছেন। আগামী ১৭ সেপ্টেম্বরে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
জিও নিউজ জানায়, তিনি এরই মধ্যে মনোনয়নপত্রে স্বাক্ষর করেছেন। ১২ আগস্ট মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন। এর মধ্যেই মনোনয়নপত্র জমা দেয়া হবে।
১৯৯৯ সালে পাকিস্তানের সাবেক স্বৈরশাসক জেনারেল পারভেজ মোশাররফের নেতৃত্বাধীন সামরিক অভ্যুত্থানের সময় কারাবন্দি নওয়াজের অনুপস্থিতিতে দলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন স্ত্রী কুলসুম নওয়াজ। ১৯৯৯ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত তিনি পিএমএল-এনের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তবে নওয়াজের মেয়ে মরিয়ম এবং স্ত্রী কুলসুম দেশটির কোনো নির্বাচনেই এখন পর্যন্ত অংশ নেননি।
এর আগে নওয়াজ তার ছোট ভাই পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী শাহবাজ শরিফকে প্রধানমন্ত্রী করবেন বলে দলের এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়। তবে তিনি জাতীয় পরিষদের সদস্য না হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার আগে তাকে জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হতে হবে। এবং সেজন্য নওয়াজের শূন্য আসনে লড়াই করবেন বলেও জানানো হয়। এতে দুই মাসের মতো সময় লাগতে পারে। এ কারণে সাবেক ক্ষমতাসীন দলের সাবেক মন্ত্রী শহীদ খাকান আব্বাসিকে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্তু পরে দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের আপত্তির কারণে শাহবাজ শরিফের নাম প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।
পিএমএল-এনের নেতারা বলছেন, পাঞ্জাবে শাহবাজ শরিফের অনুপস্থিতিতে কেবল প্রদেশে চলমান বড় (মেগা) প্রকল্পগুলোর গতিই নষ্ট হবে না, বরং দলীয় শক্তি-সমর্থনও নির্বাচনী ফলে প্রভাব ফেলবে।
তাদের যুক্তি ছিল, নওয়াজ শরিফের শূন্য আসনে শাহবাজ শরিফের প্রতিদ্বন্দ্বিতা ‘ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্ত’। পাঞ্জাবের নেতারা মনে করছেন, এই আসনে শাহবাজকে ইমরান খানের তেহরিক-ই ইনসাফ দলের প্রার্থীর সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে যেতে হবে। আর নির্বাচনে যদি নেতিবাচক ফল আসে, তবে তা দলের অবস্থানকে দুর্বল করবে।
নওয়াজের মুসলিম লীগের জ্যেষ্ঠ নেতারা তাই শাহবাজকে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে রাখতেই বেশি আগ্রহী। অন্যদিকে শাহবাজের ইচ্ছা ছিল, তার ছেলে হামজা শাহবাজ তার উত্তরসূরি হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী হবেন। কিন্তু সেই সিদ্ধান্তে পরিবর্তন এসেছে। তাই আপাতত শাহবাজ, হামজা কারোরই পদের পরিবর্তন হচ্ছে না। হামজা পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের সদস্য।