ইবির আবাসিক হলে পুলিশের তল্লাশী ছাত্রলীগের লুটপাট ॥ শিবির কর্মীদের মারধর

ইবি সংবাদদাতা : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে হলে সাধারণ ছাত্রদের মারধর, লুটপাট ও শিবিরের নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ। এ সময় তারা শিবিরের নেতাকর্মীদের মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এদিকে হলের সিলগালা কক্ষ থেকে তল্লাশী চালিয়ে অস্ত্র উদ্ধার করে বলে পুলিশ জানিয়েছে। তবে ছাত্রশিবির বলছে, পুলিশ সম্পূর্ণ অবৈধভাবে হলে তল্লাশী করে নিরীহ শিক্ষার্থীদের গ্রেফতার করেছে। দেশীয় অস্ত্র ও ককটেল উদ্ধারের নামে মিথ্যা বানোয়াট নাটক সাজিয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রুটিন ওয়ার্ক হিসেবে রোববার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর, হল প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন সাদ্দাম হোসেন আবাসিক হলে তল্লাশী করে। এসময় হলের ৪২৩ নং কক্ষে প্রবেশ করে তারা। তল্লাশী করে রুম থেকে ক্রিকেট স্ট্যাম্প উদ্ধার করে প্রশাসন। পরে পাঁচটার দিকে ছাত্রলীগ কর্মীদের তথ্য মতে, সাদ্দাম হোসেন হলের টয়লেট থেকে ৭টি ককটেল ও একটি চাপাতি উদ্ধার করে পুলিশ প্রশাসন। এসময় ৩১৫ নং কক্ষসহ এক মাস পূর্ব থেকে সিলগালাবদ্ধ ৩১৭, ৩১৮ নং কক্ষের তালা ভেঙ্গে প্রবেশে করে অভিযান টিমের সদস্যরা। এসময় তারা ওই কক্ষগুলো থেকে খাতাপত্র উদ্ধার করে। পরে রাত আটটার দিকে কুষ্টিয়া জেলার এসপি মেহেদি হাসান সাদ্দাম হোসেন হলের ৩১৭ ও ৩১৮ নং কক্ষে পুনরায় তল্লাশী করেন। তল্লাশী শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ‘বিশ^বিদ্যালয়ের সাদ্দাম হোসেন হলের প্রশাসনের রুটিন ওয়ার্ক হিসেবে আমরা তল্লাশি চালিয়েছি। এসময় ১১টি ককটেল কিছু পেট্ট্রোল বোমা বানানোর সরঞ্জামাদি, একটি রামদা, ছাত্র শিবিরের কিছু বই-খাতা উদ্ধার করা হয়েছে। দুই শিবির কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সাদ্দাম হল থেকে বের হওয়ার সময় ও পরীক্ষা দিয়ে হলে ফেরার পথে দুই শিবির কর্মীকে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করেছে ছাত্রলীগ। তল্লাশী শেষে ছাত্রলীগ কর্মীরা বিভিন্ন হলে ল্যাপটপ, মোবাইল, নগদ অর্থ লুটপাট করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ঘটনার পর বাদী হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর প্রফেসর ড. মোঃ মাহবুবর রহমান ইবি থানায় বিষ্ফরোক দ্রব্য আইন- ১৯০৮ এর আওতায় মামলা দায়ের করেছেন। এতে এজহারভুক্ত ৩৪জন ও অজ্ঞাতনামা ৩০/৪০ জন শিবির কর্মীকে আসামী করা হয়েছে। মামলা নং ১৫।

এদিকে গতকাল সোমবার বেলা আড়াইটায় সাংবাদিকদের সাথে যৌথ মতবিনিময় করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর প্রফেসর ড. মাহবুবর রহমান, ছাত্রলীগ সভাপতি শাহিনুর রহমান শাহিন ও সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানা হালিম। এ সময় তারা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরমুক্ত বলে ঘোষণা করেন।

এদিকে ককটেল, দেশীয় অস্ত্র উদ্ধারসহ যাবতীয় ঘটনাকে বানোয়াট দাবি করে বিবৃতি দিয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবির। শাখা ছাত্রশিবির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ছাত্রশিবিরকে আদর্শিকভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়ে ষড়যন্ত্রের ঘৃণ্য পথ বেছে নিয়েছে তারা। পুলিশ সম্পূর্ণ অবৈধভাবে হলে তল্লাশী করে নিরীহ শিক্ষার্থীদের গ্রেফতার করেছে। নিরীহ শিক্ষার্থীদের নামে মামলা দায়ের করেছে। দেশীয় অস্ত্র ও ককটেল উদ্ধারের নামে মিথ্যা বানোয়াট নাটক সাজিয়েছে। ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন রুমে লুটপাট করেছে। আমরা এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। শিক্ষার্থীদের নামে মিথ্যা মামলা উঠিয়ে নিয়ে ক্যাম্পাসে পড়ালেখার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুরোধ করছি।

Check Also

যশোরে মধুমেলার জায়গা বরাদ্দ নিয়ে বিএনপির দুগ্রুপের হাতাহাতি

যশোরে মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত’র ২০১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী ‘মধুমেলা’র জায়গা ও ইভেন্ট বরাদ্দের উন্মুক্ত …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।