তালা প্রসাদপুর স্কুলের রুপকার প্রধান শিক্ষক(ভারঃ) আবুল কাশেমের রাজকীয় বিদায় সংবর্ধনা# স্ত্রী ও তার স্বজন কতৃক স্বামীকে হত্যা ঘটনায় আদালতে মামলা

আকবর হোসেন,তালা: তালা উপজেলার ১৬ আগষ্ট বুধবার সকালে প্রসাদপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের রুপকার ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেম সরদারের রাজকীয় বিদায় সংবর্ধনা দিয়েছেন উপজেলা শিক্ষা অফিস,অভিভাবক এবং স্কুলের এসএমসি সদস্যরা । এসময় এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয় । ইউআরসির ইন্সট্রাক্টর মো: ঈমান উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং শিক্ষক এম এম ইয়ামিন এর 15পরিচালনায়, উক্ত বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা অফিসার মো: অহিদুল ইসলাম,বিশেষ অতিথি ছিলেন সহকারী শিক্ষা অফিসার মো: নজরুল ইসলাম,মো: মিজানুর রহমান,দেবাশীষ দাশ,সঞ্জয় মন্ডল,রফিকুল ইসলামসহ এসএমসি সদস্য ও অভিভাবকবৃন্দ শিক্ষক/শিক্ষিকা,ছাত্র/ছাত্রীসহ এলাকার অসংখ্য জনগন । এখানে উল্লেখ্য যে, ২০১৪ সালে শিক্ষক আবুল কাশেম এর হাত ধরে সদ্য প্রতিষ্ঠিত প্রসাদপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয় । ইতো মধ্যে স্কুলটি উপজেলার অন্যতম প্রতিষ্ঠান হিসেবে শিক্ষা প্রশাসনসহ উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করতে সক্ষম হয়েছে । ছাত্র শুন্য বিদ্যালয়টিকে তিনি বাড়ী বাড়ী গিয়ে ছাত্র/ছাত্রী ভর্তি করিয়ে বিদ্যালয়ের প্রাণ ফিরিয়ে আনেন । তিনি ২ বছর ধরে কোন কনটিনজেন্সি বিলও পাননি । দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১০০% শিক্ষার্থী উপবৃত্তির আওতায় থাকলেও প্রসাদপুর বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থিরা উপবৃত্তি হতে বঞ্চিত ছিলো । তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করে উদ্ধতন কতৃপক্ষকে সন্তষ্টির ম্যাধ্যমে উপবৃত্তির আওতায় আনেন । তিনি পর পর ২ বার তালা উপজেলার খলিল নগর ইউনিয়ন হতে শেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হন ।তিনি সমাজ হতে কোচিং নামক শিক্ষা বানিজ্যকে না বলে নিজ দক্ষতা,শ্রম ও বুদ্ধি দিয়ে অবহেলিত স্কুলটিকে তালার অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্টানে রুপান্তর করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন । গত ৮ আগষ্ট জেলা শিক্ষা অফিসার শেখ অহিদুল আলম এর স্বাক্ষরিত এক আদেশে বিদ্যালয় বিহিন এলাকায় ১৫০০ বিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত সকল বিদ্যলয়ের সংযুক্ত শিক্ষকদের ডেপুটেশন বাতিল এর আঙ্গীকে শিক্ষক আবুল কাশেমের বদলী আদেশ প্রদান করা হয় ।

তালায় স্ত্রী ও তার স্বজন কতৃক স্বামীকে হত্যা ঘটনায় আদালতে মামলা
তালায় ভাইকে পরিকল্পিতভাবে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় থানা পুলিশ মামলা না নেয়ায় তার স্ত্রী তাজমা বেগম (২৮) সহ ৫ জনকে আসামী করে আদালতে মামলা করেছে নিহতের ছোট ভাই মনিরুল শেখ। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কৃষ্ণকাটি এলাকায়।

মামলার বিবরণ ও এলাকাবাসী জানায়,উপজেলার চরকানাইদিয়া গ্রামের মুক্তার আলী শেখ’র ছেলে হাফিজুর শেখ’র সাথে গত প্রায় ১২ বছর পূর্বে বিয়ে হয় পার্শ্ববর্তী কৃষ্ণকাটির ইসলাম শেখ এর মেয়ে তাজমার সাথে। বিয়ের পর তাজমাকে বাড়িতে রেখে হাফিজুর ঢাকায় একটি গার্মেন্টেসে চাকুরি করতে চলে যায়। এর কিছুদিন পর তাজমা তাদের বাড়ী থেকে চলে গিয়ে একই এলাকার তার দুলাভাই মৃত মেছের আলী সরদারের ছেলে রবিউল সরদারের বাড়ীতে অবস্থান নিয়ে সেখানে থাকতে শুরু করে। এমন অবস্থায় হাফিজুর তার চাকুরীর সমুদয় টাকা তার স্ত্রীর কাছে পাঠাতে থাকে।
এক পর্যায়ে হাফিজুর তার স্ত্রীকে ঢাকায় তার চাকুরীস্থলে নিয়ে বসবাস শুরু করে। এসময় তার কাছে পাঠানো অর্জিত প্রায় ৪ লাখ টাকা কোথায় জানতে চাইলে সে বলে সব টাকা তার দুলাভাই রবিউলের কাছে আছে। এক পর্যায়ে স্ত্রী তাজমার পীড়াপিড়িতে তারা ঢাকা থেকে বাড়ীতে আসে। এর কয়েকদিন পর স্ত্রী টাকা আনার কথা বলে একমাত্র সন্তান লামিয়াকে নিয়ে তার দুলাভাই রবিউলের বাড়ীতে গিয়ে আর ফিরে আসেনি। এনিয়ে স্ত্রী তাজমা,তার বোন নাজমা ও তার স্বামী রবিউলের সাথে হাফিজুরের মনোমালিন্য চলতে থাকে। এক পর্যায়ে গত ২৪ জুলাই পাওনা টাকা দেবে বলে তারা তাকে বাড়ী থেকে ডেকে নিয়ে যায়। ঐ রাতেই তারা তাকে ঘরের মধ্যে ফেলে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপকভাবে মারপিট ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
এর পর বিষয়টি আতœহত্যা বলে চালিয়ে দিতে তারা তার মুখে বিষ ঢেলে রাতেই ভ্যান যোগে তালা হাসপাতালের বারান্দায় রেখে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে তার ভাই সহ অন্যান্য স্বজনরা গিয়ে হাসপাতালের বারান্দায় হাফিজুরের লাশ দেখতে পায়। এর পর তারা রবিউলদের বাড়িতে গেলে তাদের কাউকে খুঁজে পায়নি। ঘটনার পর বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এম মফিদুল হক লিটু,ইউপি সদস্য আতিয়ার মোড়ল সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানিয়ে থানায় খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে সুরোতহাল রিপোর্ট শেষে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।

এর পর এনিয়ে থানায় হত্যা মামলা করতে গেলে থানা পুলিশ এক অজ্ঞাত কারণে মামলা নেয়নি। পরে ২৭ জুলাই বাধ্য হয়ে নিহতের ভাই মনিরুল শেখ বাদী হয়ে বিজ্ঞ ৩নং আমলী আদালত(তালা)সাতক্ষীরাতে মৃত মেছের আলী সরদারের ছেলে দুলাভাই রবিউল সরদারকে প্রধান করে স্ত্রী তাজমা বেগম সহ ৫ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা করে। যার নং ৯৮/১৭। ধারা ৩০২/৩৪ দন্ড বিধি।
এলাকাবাসী ও পারিবারিক সূত্র জানায়,এনিয়ে ঘটনার দিন নিহত হাফিজুর স্থানীয় চেয়ারম্যান এম মফিদুল হক লিটুর কাছে গিয়েছিল বিষয়টির মিমাংসার জন্য। তবে লিটু তাকে পরের দিন সকালে মিমাংসার আশ্বাস দিয়ে শ্বশুরালয়ে পাঠিয়ে দেয় এবং রাতেই সে নিহত হয়।

এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট জালালপুর ইউপি চেয়ারম্যান এম মফিদুল হক লিটুর সাথে কথা বললে তিনি ঘটনার আগের দিন বিকালে হাফিজুরের সাথে বসাবসির বিষয়টি স্বীকার করে বলেন,ময়না তদন্তে একটি স্বাভাবিক রিপোর্ট এসেছে। এলাকাবাসী ও পারিবারিক সূত্র জানায়,ঘটনার পর নিহতের লাশ দাফনের আগে তার স্ত্রী তাজমা এমনকি তার একমাত্র কন্যা লামিয়াকেও তার বাড়িতে পাঠানো হয়নি।

সর্বশেষ নিহতের স্বজনসহ এলাকাবাসীর দাবি,আসামীদের গ্রেফতারপূর্বক জিজ্ঞাসাবাদ ও স্বাক্ষীদের স্বাক্ষর গ্রহন করলে বেরিয়ে আসবে হত্যার প্রকৃত বিষয়টি।

Check Also

সাতক্ষীরায় লটারীতে টিকে থাকা ৭১ শিক্ষার্থীকে ভর্তির সুযোগের দাবিতে অভিভাবকদের সংবাদ সম্মেলন  

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি ভর্তির লটারীতে টিকে থাকার পরও শুধুমাত্র বয়সের অজুহাতে সাতক্ষীরা সরকারি বালক ও বালিকা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।