ঢাকা: এমপি আমানুর রহমান খান রানাকে বিচারিক আদালতে শুনানির দিন হাজির করা হয় না মর্মে প্রধান বিচারপতিকে অবহিত করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। এ সময় প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা অ্যাটর্নি জেনারেলের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘এতে তো আপনারই লজ্জা পাওয়ার কথা। রাষ্ট্র কী করে?’
বুধবার আপিল আদালতের দেওয়া আদেশ সংশোধন চেয়ে সংসদ সদস্য রানার করা এক আবেদনের শুনানিকালে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চে এসব মন্তব্য করা হয়।
শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আমি শুনেছি, আদালতে ধার্য তারিখে তাকে (রানা) আনা হয় না।’
এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এতে তো আপনারই লজ্জা পাওয়ার কথা। রাষ্ট্র কী করে?
এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল রানাকে আদালতে ধার্য তারিখে আদালতে হাজিরের নির্দেশনা চান। আদালত আগামী ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করে ধার্য তারিখে রানাকে হাজিরের আদেশ দেয়।
গত ৮ মে এই মামলায় রানার জামিন চার মাসের জন্য স্থগিত করে আপিল বিভাগ। পাশাপাশি এ সময় পর্যন্ত শুনানি মুলতবি রাখা হয়।
আওয়ামী লীগের আগের আমলে টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়ে ব্যর্থ হওয়ার পর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে জিতে যান রানা। পরে তাকে দলে নেয় আওয়ামী লীগ। আর ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। তবে খুনের মামলায় নাম আসার পর গত ১৬ জানুয়ারি রানা ও তার তিন ভাইকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
গত ১৩ এপ্রিল মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় রানার অন্তর্র্বতীকালীন জামিন দেয় হাইকোর্ট। এ সময় কেন আমানুর রহমান খানকে জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দেন বিচারক।
জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহম্মেদ হত্যাকাণ্ডের মামলায় ২০১৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতে আত্মসমার্পণ করে জামিন আবেদন করেন রানা। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালতের বিচারক আবুল মনসুর মিয়া তার জামিন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলার নথি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে শহরের কলেজপাড়া এলাকার নিজ বাসার কাছ থেকে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহম্মেদের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার তিন দিন পর ফারুকের স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে টাঙ্গাইল সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
এ মামলায় টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানাসহ ১৪ জনকে আসামি করে গত ৩ ফেব্র“য়ারি টাঙ্গাইলের গোয়েন্দা পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। গত ৬ এপ্রিল আসামিদের গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারি করেন আদালত। টাঙ্গাইলের জ্যেষ্ঠ মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক আমিনুল ইসলাম এ আদেশ দেন।
মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন রানার তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র ও শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সহিদুর রহমান খান মুক্তি, জেলার সাবেক ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পা। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- আনিসুল ইসলাম রাজা, কবির হোসেন, সাবেক কমিশনার মাসুদ মিয়া, চান, নুরু, সানোয়ার হোসেন, দাঁতভাঙা বাবু, ফরিদ হোসেন, আবদুল হক ও সমির হোসেন। আসামিদের মধ্যে আনিসুল ইসলাম রাজা, মোহাম্মদ আলী ও সমির হোসেন আগেই গ্রেপ্তার হয়ে টাঙ্গাইল কারাগারে রয়েছেন। আসামি ফরিদ হোসেন কিছুদিন আগে উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছাড়া পেয়েছেন। আর আসামি আবদুল হক পলাতক অবস্থায় কয়েক মাস আগে দুষ্কৃতকারীদের হাতে নিহত হন।
Check Also
সাতক্ষীরা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে সহসভাপতি হলেন জামায়াতের এড আবু বক্কর
সাতক্ষীরা সংবাদদাতাঃ দীর্ঘ সময়ের অচলাবস্থার পর উৎসবমুখর পরিবেশে সর্বোচ্চ ভোটারদের উপস্থিতিতে সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির …