প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র সিনহার আয়-ব্যয়ের তদন্তকে সরকারের ‘প্রতিশোধ পরায়নতা’ বলে উল্লেখ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
শুক্রবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘আজ (শুক্রবার) গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে- প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার আয়-ব্যয়ের তদন্ত শুরু করেছে এনবিআর ও বাংলাদেশ ব্যাংক। বিচারপতিদের অপসারণ সংক্রান্ত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় ও পর্যবেক্ষণ নিয়ে প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে মন্ত্রী-এমপিদের আক্রমণাত্মক বক্তব্যে সবমহলে যখন সমালোচনার ঝড় উঠেছে ঠিক তখনই আয়-ব্যয়ের এ তদন্তকে প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে সরকারের প্রতিশোধ হিসেবে সবাই মনে করছে।’
তিনি বলেন, ‘সর্বোচ্চ আদালতকে নতজানু রাখতে পোড়ামাটি নীতি গ্রহণ করেছে সরকার। প্রধান বিচারপতি এখন আওয়ামী লীগের কাঠগড়ায়। ঠিক যেভাবে বিরোধী দলকে হেনস্তা ও হয়রানি করার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সিনিয়র নেতৃবৃন্দের নামে দুদক এবং এনবিআরকে ব্যবহার করে মিথ্যা মামলা দায়ের করে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।’
রিজভী আরও বলেন, ‘প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরুতে এটি আরও স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো- সরকার যাদেরকে বিরোধী পক্ষ মনে করে তাদের বিরুদ্ধেই দুদক-এনবিআর এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবহার করে বানোয়াট মামলা দায়ের করে।’
বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালত যে পর্যবেক্ষণগুলি দিয়েছেন তা রায়েরই অংশ। কিন্তু ক্ষমতাসীনরা হুমকির মুখে রায়টি বাতিল করতে চাচ্ছে। দুঃশাসনের প্রকোপে আইনের শাসন অদৃশ্য হয়। যেহেতু দুঃশাসন বিরাজমান তাই ভয় দেখানো হুমকিরই জয়জয়কার চলছে। কারণ ক্ষমতাসীনরা নৈতিকভাবে পরাজিত। সেজন্য মাংশপেশীর ওপর তারা নির্ভর করতে চাচ্ছে।’
রিজভী বলেন, ‘রায়ের পর্যবেক্ষণে যেহেতু পার্লামেন্টকে অপরিপক্ক ও অকার্যকর বলা হয়েছে, সেহেতু বর্তমান সংসদ অবৈধ এবং সেজন্য সরকারও বেআইনী। অতএব নিজেদেরকে ইতিহাসের আবর্জনায় নিক্ষেপ না করে অবিলম্বে পার্লামেন্ট বাতিল করে আওয়ামী জোট সরকারের পদত্যাগ দাবি করছি।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আতাউর রহমান ঢালী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন নবী খান সোহেল, মুনির হোসেন, যুবদল নেতা মোরতাজুল করীম বাদরু, নুরুল ইসলাম নয়ন প্রমুখ।