নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, বিচার বিভাগকে সরকার গিলে খাচ্ছে। তাই গুম-খুনের বিচার পাওয়া যাচ্ছে না।
শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
‘দেশে অব্যাহত গুম-অপহরণ : কোন পথে বাংলাদেশ’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয় মানবাধিকার আন্দোলন।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না জানান, ২০১৫ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি তাকে গ্রেফতারের পর ২১ ঘণ্টা কেউ কোনো খোঁজ পাচ্ছিল না। পুলিশও তার স্ত্রীর জিডি নিচ্ছিল না। অবশ্য মিডিয়ার কারণে পুলিশ জিডি নিতে বাধ্য হয়।
তিনি বলেন, আদালতে আমার স্ত্রী রিট করেন। আদালত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমাকে খুঁজে বের করার নির্দেশ দেয়ার পর পুলিশ আমাকে বলে, আপনার সঙ্গে একটু ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিল। আপনাকে এখনই ছেড়ে দিতে পারতাম। কিন্তু আপনার স্ত্রী যেহেতু আদালতে রিট করেছেন তাই আপনাকে আদালতের মাধ্যমে ছাড়তে হবে।
মান্না বলেন, মিডিয়া যদি সরব না থাকতো তাহলে পুলিশ জিডি নিতো না। আদালত যদি আমাকে খুঁজে বের করার নির্দেশ না দিতেন তাহলে আমার পরিণতি কী হতো তা আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানে না।
তিনি আরও বলেন, আমার সঙ্গে আরও একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তিনি ছয়মাস গুম ছিলেন।
তার মতে, জেলখানায় যত লোক আছে তাদের মধ্যে অর্ধেক লোকের কোনো অপরাধ নেই।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক বলেন, বর্তমান স্বেচ্ছাচারী সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করার মতো কোনো রাজনৈতিক দল এই মুহূর্তে দেশে নেই।
ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়কে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, মনে হয় সরকার ধরা খেয়েছে। কত বড় ধরা খেয়েছে তা আস্তে আস্তে বুঝা যাবে।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও বুদ্ধিজীবী ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, দেশে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চরম আকার ধারণ করছে। এ কারণে খুন, ধর্ষণ, গুম ও অপহরণের ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে।
এসব ঘটনাকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। মানবতাবিরোধী আদালতের মাধ্যমে এসবের বিচার করারও দাবি জানান তিনি।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, র্যাবের সঙ্গে একটি বিশেষ বাহিনীর সমঝোতা হলে প্রাবন্ধিক ও কবি ফরহাদ মজহারের লাশ বস্তাবন্দি অবস্থায় পাওয়া যেত। এমন কিছু না হলেও অন্ততঃ বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদের মতো ভাগ্য বরণ করতে হতো তাকে।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আপনি কোনো বিষয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে তুলনা করতে বারণ করছেন। তারা ভালো কাজ করলে সেটা বলা যাবে না কেন? পাকিস্তান খারাপ রাষ্ট্র। এরপরও সেখানে অনেক ভালো কাজ হয়।
জাতীয় মানবাধিকার আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ও আহ্বায়ক মুহাম্মদ মাহমুদুল হাসানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ফাহিমা নাসরিন, মানবাধিকারকর্মী নূর খান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।