সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের পূর্ণাঙ্গ রায়ের পর চলমান টানাপোড়েনে সরকারের চাপে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা পদত্যাগ করলে বিচার বিভাগ ধ্বংস হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। বিএনপির ৩৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘বীর উত্তম শহীদ জিয়াউর রহমান’ শীর্ষক এ আলোচনার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী নাগরিক দল।
ড. মোশাররফ বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ চাচ্ছেন। এজন্য তারা রাস্তায় মানববন্ধনও করছেন। আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, সরকারের চাপে কিংবা একটি দলের চাপে পড়ে যদি প্রধান বিচারপতিকে পদত্যাগ করতে হয়, তাহলে রাষ্ট্রের যে তৃতীয় স্তম্ভ অত্যন্ত বিশ্বাসযোগ্য স্তম্ভ- এ বিচার বিভাগ ধ্বংস হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, বিচার বিভাগ ধবংস হয়ে যাওয়া- অর্থ হচ্ছে দেশ ধ্বংস হয়ে যাওয়া।
বিএনপি নেতা বলেন, বিচারালয়কে স্বাধীন রেখে দেশকে অগ্রসর করতে হবে। তা না হলে সাধারণ মানুষের শেষ আশা-ভরসার স্থল বিচার বিভাগ-সেটিও সরকারের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে।
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, আজ আপনারা প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ চাচ্ছেন। এদেশের জনগণও আপনাদেরই পদত্যাগ চাইবে- এ সময় বেশি দূরে নয়। সেই আন্দোলন বেশি দূরে নয়।
প্রধান বিচারপতি ও সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থানের সমালোচনা করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, সর্বোচ্চ আদালতের কোনো রায়ের বিরুদ্ধে কথা বললে আদালত অবমাননা হয়।
আজ সরকার,সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক ও মন্ত্রীরা আদালত অবমাননা করছে -এটা কখনো কেনো দেশের জন্য কাঙ্ক্ষিত নয়। এটা অশনি সংকেত।
প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য দিয়ে বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগের মুখোমুখি করে দিয়েছেন- এটা কখনও দেশের জন্য মঙ্গলজনক হতে পারে না।
সরকার ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো আগামী নির্বাচনেও একটা নাটক করে ভোটবিহীন নির্বাচন করে আবার তারা ক্ষমতায় যাওয়ার পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ করেন মোশাররফ।
তিনি বলেন,আমরা স্পষ্টভাষায় বলে দিতে চাই- ২০১৪ সালের মতো নির্বাচন আর হবে না, হতে দেয়া হবে না।
সংগঠনের সভাপতি সৈয়দ মো.ওমর ফারুকের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, সাবেক এমপি মোহাম্মদ আবদুল গফুর, আতাউর রহমান আঙ্গুর, খালেদা ইয়াসমীন, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, অ্যাডভোকেট জিয়াউদ্দিন জিয়া প্রমুখ।