কৃত্রিমভাবে মোটাতাজা পশু সনাক্ত করতে হাটে থাকবে বিশেষজ্ঞ দল -আনোয়ার বেগ

কৃত্রিমভাবে মোটাতাজা করা পশু চিহ্নিত করতে রাজধানীর হাটগুলোতে ভ্রাম্যমাণ বিশেষজ্ঞ টিম পরিদর্শন করবে। প্রাণি সম্পদ বিভাগ ও শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে এ টিম গঠিত হবে। পশুর আচরণ দেখে শনাক্ত করা হবে এটি কৃত্রিমভাবে মোটা তাজা করা হয়েছে কি না। অসুস্থ এবং কৃত্রিম মোটা তাজা পশু কিনতে ক্রেতাদের নিরুৎসাহিত করবে বিশেষজ্ঞ টিম। টিভিএনএ’কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পশু বিজ্ঞান ও পশু চিকিৎসা বিভাগের অধ্যাপক আনোয়ারুল হক বেগ।

এসময় তিনি বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী হরমন ইনঞ্জেকশন পুশ করছে। আবার স্টেরয়েড গ্রুপের ওষুধ ডেকাসন, ওরাডেক্সন, প্রেডনিসোলন, বেটনেনাল, কর্টান, স্টেরন, অ্যাডাম ৩৩ গরুদের সেবন করে যাচ্ছে। অথবা ডেকাসন, ওরাডেক্সন,অ্যানাবলিক স্টেরয়েড ইনজেকশন দিয়ে গরুকে মোটা তাজা করে তুলছে। তাছাড়া সিপ্রোহেপটাডিন যেমন পেরিঅ্যাকটিন ট্যাবলেট ব্যবহার করছে। ফলে এসব ওষুধ ও রাসায়নিক দ্রব্য গরুর শরীরের স্বাভাবিক ক্রিয়া বা বিপাক ক্রিয়া নষ্ট করে তুলে। এ জাতীয় ওষুধ অতিরিক্ত মাত্রায় দিলে গরুর কিডনি ও যকৃতের কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যায়। ফলে গরুর শরীর হতে পানি বের হতে পারে না। এ কারণে শোষিত হয়ে পানি সরাসরি গরুর মাংসে চলে যায়। ফলে গরুকে মোটা ও তুলতুলে, নাদুস-নুদুস দেখায়।

এ বিশেষজ্ঞ আরো জানান, এসব গরু রোগে আক্রান্ত হওয়ার ২/৩ মাসের মধ্যেই মারা যায়। স্টরয়েড বা মাদক দিয়ে গরু মোটাতাজা করে। আমাদের দেশের জনগণ সচেতন হওয়ার কারণে এর পরিমাণ কমে এসেছে। তবুও আমাদের আরও সচেতন হওয়া উচিত। আমরা আশা করি খুব দ্রুতই এর সংখ্যা শূণ্যের কোটায় নেমে আসবে। তাই আমাদেরকে এই পশুগুলোকে এড়িয়ে চলা দরকার।

কি ভাবে কৃত্রিম মোটা তাজা পশু চেনা যাবে জানতে চাইলে অধ্যাপক আনোয়ার বেগ বলেন, এ ধরণের পশু নিস্তেজ হয়ে যায়, চলাফেরা করতে পারে না, যাবর কাটা বন্ধ করে দেয়, বসা থেকে উঠতে পারে না, তার চলাফেরায় গতি থাকে না বা পশুর পিছনের অংশে আঙ্গুল দিয়ে চাপ দিলে তার মাংস ডেবে যায়। এসব সমস্যাগ্রস্ত পশু আমাদের বর্জন করা উচিত। তবে দীর্ঘ যাতায়াতের কারণেও পশু এ ধরণের সমস্যায় পড়তে পারে। সে বিষয়টিও আমাদের মাথায় রাখতে হবে পশু নির্বাচনের ক্ষেত্রে।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে গত তিন বছর বিদেশী পশু খুব কম এসেছে। এতে আমাদের দেশের কৃষকরা উপকৃত হয়েছে। আমরা চাই না বিদেশী গরু এসে আমাদের দেশের মাংসের বাজার দখল করুক। আমরা সব সময় আশা করবো আমাদের দেশীয় পশু কোরবানি দিতে। তাই আমরা চাই বিদেশী গরু বাংলাদেশে না আসুক। বিদেশ থেকে পশু আসার সময় কোন ধরণের পরীক্ষা করা হয় না। যার ফলে পশুর রোগগুলো আমাদের দেশে চলে আসে। প্রতিবেশি দেশ ভারত থেকে যে সব পশু আসে। সেগুলো হয় বয়সে বেশি কিংবা অব্যবহার যোগ্য পশু। সরকারিভাবে ক্রেতাদের এর ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করা উচিত।

Check Also

সাতক্ষীরা রেঞ্জ থেকে দুবলার চরে গেলেন ৪০১জন পূণ্যার্থী

উপকূলীয় অঞ্চল (শ্যামনগর): পশ্চিম সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জ থেকে অনুমতি নিয়ে বঙ্গোপসাগরের দুবলার চরে রাস মেলায় গেছেন …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।