নাফ নদী থেকে আরো লাশ উদ্ধার-মৃতের সংখ্যা অন্তত ২৬

নাফ নদী থেকে আরো লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে নৌকাডুবিতে মৃতের সংখ্যা অন্তত ২৬-এ দাড়াল বলে আলজাজিরা জানিয়েছে।
উদ্ধার করা লাশের মধ্যে ১৫ জন নারী, ১১ জন শিশু। মিয়ানমার থেকে তিনটি নৌকায় করে বাংলাদেশে আসার সময় নাফ নদীতে তারা ডুবে যায।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, মিয়ানমারের বর্বরতা থেকে বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয়প্রার্থী রোহিঙ্গারা সীমান্তে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে দালাল চক্রের পরামর্শে ও সহায়তায় গভীর সাগর পথকে বেছে নেন। ছোট নৌকায় করে অধিক যাত্রী নিয়ে নাফ নদী দিয়ে সাগর পাড়ি দিতেই একের পর এক ঘটে যাচ্ছে মর্মান্তিক নৌ দুর্ঘটনা।

গত বুধবার রাত ১১টার দিকে টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ পশ্চিম সৈকত এলাকায় রোহিঙ্গা নারী শিশুর লাশ ভেসে এলেই প্রকাশ পায় নৌকাডুবির ঘটনার। পরপর দু’টি নৌকাডুবির ঘটনায় আরো অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন বলে সূত্রের দাবি। নিহতদের পরিচয় পাওয়া না গেলেও বৃহস্পতিবার ডুবে যাওয়া নৌকাটির পরিচয় মিলেছে। নৌকাটি শাহপরীর দ্বীপ ডাঙ্গরপাড়া এলাকার নজির আহাম্মদের ছেলে শুক্কুরের মালিকানাধীন বলে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার লাশ ভেসে আসার বিষয়টি প্রশাসনকে অবগত করেছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য নূরুল আমিন। তিনি নয়া দিগন্তকে জানান, স্থানীয়দের সহযোগিতায় রোহিঙ্গা নারী ও শিশুর লাশগুলো উদ্ধার করে কূলে তুলে পুলিশ প্রশাসনকে খবর দিই। লাশের খবর পেয়ে স্থানীয় প্রশাসনের প্রতিনিধি, বিজিবি, কোস্টগার্ড ও পুলিশের টিম শাহপরীর দ্বীপে অবস্থান করছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শাহপরীর দ্বীপের একটি মানব পাচার চক্র রোহিঙ্গা নির্যাতনের এ সুযোগে ধান্ধায় মেতে উঠেছে অসহায় মানুষের জীবন নিয়ে। চক্রটি সাগরে মাছ ধরার ইঞ্জিনচালিত নৌকা ভাড়া করে রাতের আঁধারে মিয়ানমারের নাইক্ষ্যংদ্বীপ এলাকা থেকে রোহিঙ্গা নিয়ে চরম ঝুঁকিপূর্ণ পন্থায় অনিশ্চিত গন্তব্যে পাড়ি দিচ্ছে এবং এতে ঘটে যাচ্ছে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। বুধ ও বৃহস্পতিবারের ঘটনাগুলোই ঠিক এ রকম।

গত সপ্তাহে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সে দেশের সেনাবাহিনী ও উগ্র বৌদ্ধরা রোহিঙ্গা মুসলমানদের হত্যা, নির্যাতন ও বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের কারণে বাধ্য হয়ে নিপীড়িত রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করেছেন। বিজিবি সীমান্তে কড়াকড়ি বজায় রাখাতে যেকোনো পন্থায় বাংলাদেশে আসতে চাইছে। তবে কড়াকড়ি সত্ত্বেও অনেক রোহিঙ্গা মুসলমান বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। আইএমও বলেছে, এ পর্যন্ত বাংলাদেশে ১৮ হাজার রোহিঙ্গা এসেছে। বিভিন্ন সূত্র মতে, ৫০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা নারী ও শিশু ইতোমধ্যে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে এবং আরো হাজার হাজার রোহিঙ্গা সীমান্তের নো ম্যান্স ল্যান্ডে খোলা আকাশের নিচে নিরন্নভাবে অবস্থান করছে।

জীবিত উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গাদের লোমহর্ষক বর্ণনায় জানা যায়, গত বুধবারও মংডুর রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকার ১২টি গ্রামে আক্রমণ করেছে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। তার মধ্যে তুলাতলি, খুইন্যাপাড়া ওয়াইক্ষংয়ের অবস্থা খুবই ভয়াবহ। তারা জানিয়েছেন বুধবার সকাল থেকে কয়েক প্লাটুন সৈন্য তুলাতলি ঘেরাও করে। তার পর চিরুনি অভিযান চালিয়ে রোহিঙ্গা পুরুষদের আটক করে গায়ে পেট্রল ঢেলে পুড়িয়ে মেরেছে। খবরটি পুরো গ্রামে ছড়িয়ে পড়লে গ্রামের নারী, শিশুসহ সবাই প্রাণ বাঁচাতে পালাতে শুরু করেন। মিয়ানমারের সেনাদের হিংস্রতা থেকে প্রাণ বাঁচাতে হাজার হাজার নারী-পুরুষ, শিশু ও বৃদ্ধ নদীতে ঝাঁপ দেন। এ সময় মায়ের কোল থেকে ছিটকে পড়ে অনেক শিশু নদীর স্রোতে ভেসে যায়। অন্য দিকে পুরো গ্রামে আগুন লাগিয়ে দেয় সৈন্যরা। রোহিঙ্গাদেরকে যাকে যেখানে পেয়েছে সেখানে গুলি করেছে। যেসব বয়স্ক লোক হাঁটতে না পারার কারণে পালিয়ে যেতে পারেনি, তারা বসতঘর পুড়ে যাওয়ার সময় অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গেছেন। আগুনে দগ্ধ হওয়া বৃদ্ধদের একজন প্রসিদ্ধ পীরে কামেল মাওলানা আহমেদ হোসাইন (৯৫)।

তার হাত ধরে দ্বীনি শিক্ষা অর্জন করেছেন অনেক রোহিঙ্গা। এ দিকে খুইন্যাপাড়া ও ওয়াইক্ষংয়ে বহু বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে জ্বালিয়ে দিয়েছে সৈন্যরা। এ সময় শিশুসহ বেশ ক’জন রোহিঙ্গা পুড়ে মারা গেছে। খুইন্যাপাড়ার স্থানীয় ইয়াসিনের ছেলে রফিক আর হারুনকে আটক করে গলা কেটে হত্যা করেছে। তাদের মতে, গত ছয় দিনে ৩ হাজার ছাড়িয়েছে মৃতের সংখ্যা। ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ। আরাকান রাজ্যের রোহিঙ্গা মুসলিম অধ্যুষিত তিন জেলা মংডু, বুথিদং, রাথিদং ১০০ কিলোমিটারজুড়ে আকাশে আগুনের কুণ্ডলী। এই তিন জেলাজুড়ে উগ্রপন্থা দমন অভিযানের নামে হেলিকপ্টার থেকে মর্টারশেল ও স্থল থেকে কামানের গোলা নিক্ষেপ করে রোহিঙ্গাদের জনবসতি নিশ্চিহ্ন করে দিচ্ছে মিয়ানমারের বাহিনী।

তারা আরো জানিয়েছেন, মিয়ানমারের সরকারের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে রোহিঙ্গা মুসলমানদের স্বদেশ থেকে বিতাড়িত করে সেখানে চিরকালের জন্য একচ্ছত্র মগের মুল্লুক কায়েম করা। ওপরের তিন জেলাজুড়ে মিয়ানমারের বাহিনীর তাণ্ডবের শিকার রোহিঙ্গা পাড়াগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। হাজার হাজার রোহিঙ্গা মুসলমানের বাড়িঘর কামানের গোলা ও হেলিকপ্টার থেকে মর্টারশেল নিক্ষেপ করে জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছে। ঘর ছেড়ে প্রাণভয়ে পালানোর সময়ও সেই আগুনের লেলিহান শিখার ওপর ছুড়ে ফেলা হচ্ছে রোহিঙ্গাদের, এমনকি শিশুদেরও। বাড়িঘরে আগুন দিয়ে পৈশাচিক উল্লাসে মেতে উঠছে চরম উগ্র মগবৌদ্ধ, ও সেনা-পুলিশ-বিজিপি। আগুন দেয়ার আগে অনেক বাড়িঘরে রোহিঙ্গাদের অর্থসম্পদ লুটপাট চলছে। রোহিঙ্গা নারীদের ঘরে ঘরে গিয়ে ধর্ষণ করছে। পালানোর সময়ও পথে-ঘাটে গণধর্ষণের শিকার হচ্ছেন শত শত নারী। কিশোরীদের আচমকা ধরে নিয়ে যাচ্ছে তাদের সেনা ক্যাম্পে। নির্বিচার নিধনযজ্ঞ থেকে প্রাণ ও ইজ্জত-আব্রু রক্ষার জন্য রোহিঙ্গারা দৌড়ে পালাচ্ছে গভীর বন-জঙ্গল ও পাহাড়ের দিকে। কিন্তু সেখানেও বর্মি সেনারা হেলিকপ্টারে অভিযান চালিয়ে বৃষ্টির মতো গুলি ছুড়ছে।

আমাদের আবার ঠেলে দেয়া হচ্ছে মৃত্যুর দিকে : গত শনিবার থেকে সব ধরনের বাধা, প্রতিরোধ উপো করে সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে ঢুকে পড়ছে অসংখ্য রোহিঙ্গা। তবে অনেকেই এরই মধ্যে স্বজনদের সহায়তায় ক্যাম্পে ঢুকে পড়েছে। বাকিরা খোলা আকাশের নিচে রাস্তার পাশে ও ক্যাম্পের চার পাশে অবস্থান নিয়েছে। নতুন গড়ে ওঠা বালুখালী রোহিঙ্গা বস্তির নেতা লালু মাঝি বলেন, গত চার দিনে আট শতাধিক পরিবার প্রবেশ করেছে বালুখালী বস্তিতে। তাদের কোনো পরিসংখ্যান নেই। স্বজনদের মাধ্যমে তারা ওখানে আশ্রয় নিয়েছে। অনেকেই নতুন ঝুপড়িঘর তৈরির চেষ্টা করছে। তবে পুরনো রোহিঙ্গাদের বাধার মুখে কোনো নতুন ঘর তৈরি করতে পারছে না তারা।

সে েেত্র স্থানীয় যারা ক্যাম্প নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে আছেন তাদের ম্যানেজ করে বিভিন্ন শরণার্থী ক্যাম্পে আশ্রয় নেন। বৃহস্পতিবারের সংঘর্ষের পরও একইভাবে স্রোতের বেগে সীমান্তে আসছে নির্যাতিত রোহিঙ্গারা। গতকাল বৃহস্পতিবার উখিয়া কুতুপালং ইউএনএইচসিআর অফিস থেকে পুলিশ, আনসার ব্যারাক পেরিয়ে কমিউনিটি সেন্টার ও এমএসএফ হাসপাতাল পর্যন্ত সড়কে হাজার হাজার রোহিঙ্গার জটলা দেখা গেছে। তারা সবাই গত সোমবার ভোর থেকে অবস্থান করছেন।

অন্য দিকে অনিবন্ধিত কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও বালুখালী রোহিঙ্গা বস্তিতে প্রতিনিয়ত চতুর্দিক দিয়ে রোহিঙ্গা প্রবেশ করতে দেখা গেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে নিবন্ধিত-অনিবন্ধিত মিলে দেড় লাধিক ও বালুখালী নতুন রোহিঙ্গা বস্তিতে প্রায় ৩৫ হাজার রোহিঙ্গা রয়েছেন।

কুতুপালং ও বালুখালী ক্যাম্পে ১০ মাস আগে পালিয়ে আসা প্রায় ১৯ হাজার পরিবার অবস্থান করছে। এখন প্রতিটি ঘরে নতুন প্রবেশকারী রোহিঙ্গা আশ্রয় নিচ্ছে বলে জানা গেছে। মিয়ানমারের সীমান্তসংলগ্ন গ্রাম ঢেকিবনিয়া, চাকমাকাটা, ফকিরাপাড়া, তুমব্র“ মেদায়, কুমিরখালী, বলিবাজার, টং বাজার, ধুমবাইপাড়া, ফকিরাবাজার, সাহেববাজার, মংপ্রিচং, রেইখ্যাপাড়া, ছেংখোলা, কোনারপাড়াসহ বিভিন্ন গ্রাম থেকে এসব রোহিঙ্গা প্রবেশ করে জড়ো হয়েছে। উখিয়ার সীমান্ত এলাকার পাহাড়ি জনপদ রেজু আমতলী, ফাত্রাঝিরি হয়ে ডেইলপাড়া, করইবনিয়া, ডিগলিয়া, হাতিমোরা, দরগাবিল, ঘুমধুমের বড়বিল, জলপাইতলী, আজুখাইয়া সড়ক পথে টমটম ও অটোরিকশায় কুতুপালং ও বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আসছে তারা। ক্যাম্পের বাইরে অবস্থান করা রোহিঙ্গা নারী ও শিশুদের মধ্যে এনজিওর মাধ্যমে পুষ্টিসমৃদ্ধ বিস্কুট বিতরণ করতে দেখা গেছে। এনজিও মুক্তির এপিসি আবদুল্লাহ আল মামুন শাহীন জানান, নিবন্ধিত শিবিরের তথ্য নেই। তবে কুতুপালংয়ে অনিবন্ধিত ১৬টি ব্লকে প্রায় হাজারের অধিক রোহিঙ্গা পরিবার আশ্রয় নিয়েছে বলে জানতে পেরেছি।

এ দিকে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের জিরো পয়েন্টে সাত দিন ধরে অবস্থান করছে হাজার হাজার রোহিঙ্গা। তারা পলিথিনের ছাউনি তৈরি করে ওখানে অবস্থান করছে। তবে মঙ্গলবার থেকে পলিথিন দিয়ে তৈরি করা অস্থায়ী ছাউনি তুলে কাঁটাতারের দিকে রোহিঙ্গাদের যেতে দেখা গেছে। নারী-পুরুষ, শিশু সবাই আতঙ্কিত অবস্থায় চলে যাচ্ছেন সেই লাইন বরাবর, যার ওপারেই তাদের জন্য অপো করছে ভয়ঙ্কর মিয়ানমার সেনাবাহিনী।

পালিয়ে আসা যুবক আবদুর রহমান বলেন, আমার বাবা আবদুস সালাম ও বড় ভাই রাহাত আলমকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী গুলি করে হত্যা করেছে। জান বাঁচাতে আমরা এখানে এসেছি। এখন আমাদের আবার ঠেলে দেয়া হচ্ছে মৃত্যুর দিকে। সেখানে গুলি করার পর গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করছে সেনাবাহিনী। প্রতিদিন একের পর এক ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছে। এখন কাঁটাতারের বেড়ায় থাকতে ভয় হচ্ছে। ওরা হেলিকপ্টার থেকে গুলি করতে পারে। আমার আরো অনেক আত্মীয়স্বজন ওখানে রয়ে গেছে। এভাবেই আশঙ্কা প্রকাশ করেন রোহিঙ্গা যুবক আবদুর রহমান। অভিযানের নামে আগস্ট মাসের শুরুতে রাখাইনে সেনা মোতায়েন করে মিয়ানমার সরকার। এরই মধ্যে গ্রামের পর গ্রাম রোহিঙ্গাদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। গত বছরের অক্টোবরে রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো মিয়ানমার সেনাদের এমনই এক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জাতিসঙ্ঘের সাবেক প্রধান কফি আনানের নেতৃত্বে গঠিত কমিশন বৃহস্পতিবার তাদের প্রতিবেদন প্রকাশ করে। কমিশন রোহিঙ্গাদের ওপর থেকে বিধিনিষেধ প্রত্যাহার এবং তাদের নাগরিকত্ব প্রদানের আহ্বান জানায়। প্রতিবেদন প্রকাশের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নতুন করে হামলা ও হত্যাকাণ্ড শুরু করে মিয়ানমার। মিয়ানমারের সাথে বাংলাদেশের প্রায় ২৭০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। এসব এলাকায় বর্ডার গার্ড বাংলদেশ (বিজিবি) কড়া নজরদারি থাকা সত্ত্বেও তারা রাতে প্রবেশ করার চেষ্টা করছে। এ ছাড়া নো ম্যান্স ল্যান্ডে অবস্থান করে মানবেতর জীবনযাপন করছেন হাজার হাজার রোহিঙ্গা।

চমেকে এসেছে ২৪ রোহিঙ্গা, মারা গেল আরো ১
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গতকাল পর্যন্ত ভর্তি হয়েছে ২৪ জন রোহিঙ্গা। নতুন করে ভর্তি হয়েছেন আরো দুই দুইজন। তারা গুলিবিদ্ধ ও আগুনে পুড়ে আহত হয়েছেন। এর মধ্যে গতকাল চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক রোহিঙ্গা শিশু মোহাম্মদ শোয়েবের (১২) মৃত্যু হয়েছে। এর আগে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ভর্তি হয়ে মোহাম্মদ মুছা (২০) মারা যান।
নিহত রোহিঙ্গা শিশু মোহাম্মদ শোয়েব মিয়ানমারের মংডু এলাকার এনায়েত উল্লাহর ছেলে। সম্প্রতি সহিংসতায় মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসার টেকনাফের সোহানী ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে শিশুটির পরিবার।

এ দিকে রাখাইন রাজ্যে চলমান সঙ্ঘাতে আহত হয়ে পালিয়ে আসা আরো দুই রোহিঙ্গা গত বুধবার রাতে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে মিয়ানমারের মংডু এলাকার মীর আহমদের ছেলে মো: জোবায়েরকে (৪৫) বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। গুলিবিদ্ধ সাইমুলকে (১৫) ভর্তি করা হয়েছে ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে। সে মিয়ানমারের আকিয়াব জেলার মংডুর লাল মোহনের ছেলে।

Check Also

ঢাকা প্রসঙ্গে বদলাতে পারে ভারতের পররাষ্ট্রনীতি

পাঁচ দশকের বিরতির পর গত মাসে বাংলাদেশের বন্দর নগরী চট্টগ্রামে একটি পাকিস্তানি পণ্যবাহী জাহাজ ডক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।