ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে চলমান সহিংসতা শিগগিরই বন্ধ করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। রাখাইনের সংঘাত নিরসনে সব পক্ষকে দৃঢ় পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। আমাদের সময়.কম।
জাকার্তায় রাষ্ট্রীয় প্রাসাদে এক সংবাদ সম্মেলনে উইদোদো বলেন, রাখাইন সংকট সমাধানে বাস্তব অ্যাকশন দরকার, শুধুমাত্র সমালোচনামূলক বিবৃতিতে কাজ হবে না।
জাকার্তার নাগরিক সমাজের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে রাখাইনের মানবিক সংকট সমাধানে ইন্দোনেশিয়া সরকার সহায়তা করতে রাজি আছে বলে জানান উইদোদো।
জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্টনিও গুটেরাস ও রাখাইন সহিংসতায় জাতিসংঘের স্পেশাল অ্যাডভাইজরি কমিশনের প্রধান কফি আনান ও অন্যান্য পক্ষগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেন্টো মারসুদিকে নির্দেশ দিয়েছেন ইন্দোনেশিয়ার এই প্রেসিডেন্ট।
উইদোদো বলেন, রাখাইনের সহিংসতা বন্ধ ও প্রতিরোধের আহ্বান জানাতে রোববার সকালে মিয়ানমারের উদ্দেশ্যে জাকার্তা ত্যাগ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারসুদি। তিনি মিয়ানমারের মুসলিমসহ সব নাগরিকের সুরক্ষা ও মানবিক ত্রাণ সহায়তা সরবরাহ অবাধ করতে দেশটির প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, জাতিগত নিপীড়নের শিকার রোহিঙ্গাদেরকে মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখবে ইন্দোনেশিয়া সরকার। ‘আমরা রাখাইনে একটি স্কুল তৈরি করেছি এবং শিগগিরই একটি হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে; নির্মাণ কাজ শুরু হবে অক্টোবরে।’
সূত্র : আনাদোলু নিউজ অ্যাজেন্সি।
বাংলাদেশে শরনার্থী রোহিঙ্গাদের জন্য ত্রাণ পাঠানোর প্রস্তাব ইন্দোনেশিয়ার
ঢাকা: ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেতনো মারসুদি বলেছেন, রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগণের জন্য ইন্দোনেশিয়া সরকার ত্রাণ সামগ্রী পাঠিয়েছে।
তিনি একইভাবে বাংলাদেশে আশ্রয়গ্রহণকারী রোহিঙ্গা শরনার্থীদের জন্য ত্রাণ সামগ্রী পাঠানোর প্রস্তাব করেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ প্রস্তাব দেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাখাইন রাজ্যের জনগণের ওপর সহিংসতা বন্ধে মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ কালে এ তথ্য জানান।
ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের জানান, শেখ হাসিনা বলেন, কোন দেশে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাতে বাংলাদেশ কাউকে দেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে দিবে না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ দু’দেশের সীমান্ত বাহিনীর মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে চায়। প্রয়োজনে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মিয়ানমারে বিদ্রোহ বন্ধে সহযোগিতা করতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় বিপুল সংখ্যক শিশু, নারী ও বৃদ্ধ লোক মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘তারা বাংলাদেশে শরনার্থী হয়ে আসতে বাধ্য হচ্ছে।’
তিনি কফি আনান কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, এই রিপোর্ট সমস্যার সমাধানে সহায়ক হবে।
বৈঠকে ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে তার দেশ ভূমিকা রাখতে চায়।
বৈঠকে ইন্দোনেশিয়ার নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত রিনা প্রিতিয়াসমিয়ারসি সোয়েমারনো বলেন, তিনি ইতিমধ্যেই মিয়ানমারের সেনা প্রধানের সঙ্গে কথা বলে এই সহিংসতা বন্ধ করার অনুরোধ জানিয়েছেন। রাখাইন রাজ্যে শিশু ও নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী ও বাংলাদেশে নিযুক্ত ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত রিনা প্রিতিয়াসমিয়ারসি সোয়েমারনো উপস্থিত ছিলেন।