শেষ বিকালে টাইগার শিবিরে উল্লাস

শেষ বিকালে ঝলসে ওঠা মেহেদী মিরাজের ঘূর্ণিতে অস্ট্রেলিয়ার টেলএন্ডার ব্যাটসম্যানরা দাঁড়াতেই পারেননি।
বুধবার চট্টগ্রাম টেস্টে তৃতীয় দিনের খেলা শেষে স্মিথ বাহিনীর সংগ্রহ ৯ উইকেটে ৩৭৭ রান। এখন পর্যন্ত তাদের লিড ৭২ রানের। ক্রিজে রয়েছেন ও’কিফ ও লায়ন।

অর্থাৎ, বৃহস্পতিবার সকালে সেট হওয়ার আগেভাগেই আর মাত্র একটি উইকেট ফেলে দিলেই অলআউট হবে অজিরা।

টাইগার সমর্থকদের এখন একটাই চাওয়া- কাল সকালে পাঁচ-দশ রানের মধ্যে অস্ট্রেলিয়াকে গুটিয়ে ফেলে একটা ভালো টার্গেট ছুড়ে দেয়া।

তৃতীয় দিন দুটি সেশনে ১৫২ রান যোগ করেছে অস্ট্রেলিয়া। ২ উইকেটে ২২৫ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শুরু করা অজিরা আজ উইকেটে থিতু হতে পারেননি।

এক ডেভিড ওয়ার্নার ছাড়া আজ বাকিদের হাত খোলার সুযোগ দেননি মোস্তাফিজ-মিরাজরা। দুটি সেশনে প্রতিপক্ষের সাতটি উইকেট তুলে নিয়েছেন টাইগার বোলাররা। উইকেট সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারত। মিরাজ ও সৌম্য সহজ দুটি ক্যাচ না ছাড়লে আজই ব্যাটিং শুরু করতে পারতেন মুশফিকরা।

বৃষ্টির কারণে তৃতীয় দিনের পুরো একটা সেশন নষ্ট হয়েছে। এতে অবশ্য অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে বাংলাদেশের লাভটাই বেশি হয়েছে। তিন ঘণ্টা বৃষ্টি শেষে দুপুর দেড়টার দিকে আবার খেলা শুরু হয়।

তৃতীয় দিনের বিকালে নিজের ঘূর্ণি বিষে তৃতীয় শিকার হিসেবে প্যাট কামিন্সকে সাজঘরে পাঠিয়ে টাইগার শিবিরে উল্লাস ছড়িয়ে দেন। আর আগারকে ফিরিয়ে দিয়ে শেষ বিকালের সাফল্য পান সাকিব।

এর আগে অজিদের ইনিংসের শেষ দেয়াল হয়ে ওঠা গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকেও ফেরত পাঠান মিরাজ। ৩৮ রান করে মেহেদী মিরাজের বলে মুশফিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি।

ম্যাক্সওয়েল ফেরত আসার আগের ওভারেই মোস্তাফিজুর রহমানের তৃতীয় শিকার হয়ে মাঠ ছাড়েন ম্যাক্সওয়েলের সঙ্গী ম্যাথু ওয়েড। ক্রিজ ছাড়ার আগ পর্যন্ত ৪১ বলে ৮ রান তোলেন তিনি।

ম্যাথু ওয়েডের আগে কার্টরাইটকে ফেরত পাঠিয়ে শিকার শুরু করেন মিরাজ। তার বলে খোঁচা দিয়ে সৌম্যের সহজ ক্যাচ হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। এর আগে অবশ্য ম্যাক্সওয়েলের সঙ্গী হয়ে করে যান ২৮ বলে ১৮ রান।

বৃষ্টিবিঘ্নিত তৃতীয় দিনের শুরুতেই দুই অজি ব্যাটসম্যানের তড়িঘড়ি ছিল রানের চাকা ঘোরানোর। এ অবস্থায় ১৪৪ বলে ৮২ রান করেই সাকিবের সরাসরি থ্রোতে রান আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন হ্যান্ডসকম্ব।

তবে ধৈর্য ধরে মাঠে থেকে নিজের শতক আদায় করে নেন ওয়ার্নার। ২০৯ বল খেলে শতক তুলে নেন তিনি। এটা তার ক্যারিয়ারের ২০তম শতক। একইসঙ্গে এটি তার সবচেয়ে ধীর গতির টেস্ট শতক।

পরে আইপিএল সতীর্থ ওয়ার্নারকে ১২৩ রানে ফেরত পাঠান বার্থডে বয় মোস্তাফিজ। ৩৬২ বল খেলে এই রান সংগ্রহ করেন ওয়ার্নার।

এর আগে সকালের সেশন ভেসে যায় বৃষ্টিতে।

মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিন শেষে টাইগারদের করা ৩০৫ রানের জবাবে ২ উইকেটে ২২৫ রান করেছিল অজিরা। অজি ইনিংসের শুরতেই মোস্তাফিজের আঘাতে ফিরে যান ৪ রান করা ম্যাট রেনশ। পরে তাইজুল ফেরত পাঠান ৫৮ রান করা অধিনায়ক স্মিথকে।

প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের সংগ্রহকে বড় করতে মাঠে লড়েন অধিনায়ক মুশফিক (৬৮), সাব্বির রহমান (৬৬) ও নাসির হোসেন (৪৫)। এই ইনিংসে বাংলাদেশের দুই নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান তামিম ৯ ও সাকিব ২৪ রান করেন। সৌম্য সরকার করেন ৩৩ রান।

অজি বোলার নাথান লায়ন ৭ ও অ্যাস্টন আগার ২টি করে উইকেট নেন।

দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজে ১-০-তে এগিয়ে টিম বাংলাদেশ। ঢাকা টেস্টে ২০ রানের রোমাঞ্চকর জয়ের পর চট্টগ্রামেও ইতিহাস গড়ার স্বপ্ন দেখছেন মুশফিক-সাকিব-তামিমরা।

Check Also

আশাশুনিতে ছাত্র শিবিরের আন্তঃ ইউনিয়ন ফুটবল টুর্ণামেন্ট

আশাশুনি প্রতিনিধি।। আশাশুনিতে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবির আশাশুনি উপজেলা শাখার আয়োজনে আন্তঃ ইউনিয়ন ফুটবল টুর্নামেন্ট …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।