মিয়ানমারে অব্যাহত বর্বর নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা যাতে নিজ দেশে মর্যাদা ও নিরাপত্তার সঙ্গে বাস করতে পারে এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীরা যাতে নিজেদের আবাসভূমিতে ফিরতে পারে- তা নিশ্চিত করতে মুসলিম বিশ্ব ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
রোববার কাজাখস্তানের রাজধানী আস্তানায় ইসলামী রাষ্ট্রগুলোর শীর্ষ সংগঠন ওআইসির প্রথম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপতি বলেন, রোহিঙ্গাদের সুরক্ষার জন্য আমি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। নাগরিকত্বের অধিকারসহ সব ধরনের অধিকার থেকে তারা বঞ্চিত। এই জনগোষ্ঠী অস্তিত্বের সঙ্কট, নিষ্ঠুরতা এবং উৎখাতের শিকার।
আবদুল হামিদ বলেন, হাজারে হাজারে রোহিঙ্গা সীমান্ত পার করে ঢুকে পড়ায় বাংলাদেশ এ সমস্যায় সরাসরি আক্রান্ত। বাংলাদেশ একমাত্র মানবিক কারণে তাদের আশ্রয় দিচ্ছে। এই সমস্যাকে এমনভাবে সমাধান করতে হবে, যাতে রোহিঙ্গারা নিজের ভূমি রাখাইনে নিরাপত্তা এবং মর্যাদার সঙ্গে ফিরে গিয়ে থাকতে পারে।
এদিকে প্রযুক্তি সম্মেলনের ফাঁকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে কথা বলেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।
তিনি এ সময় বাংলাদেশে আসা শরণার্থীদের মিয়ানমার সীমান্তের অংশে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে একটি ‘সেইফ জোনে’ আশ্রয়ের ব্যবস্থার জন্য আন্তর্জাতিক বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানান।
বৈঠক শেষে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানিয়েছেন।
প্রেস সচিব বলেন, বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের একটি জায়গায় আশ্রয় দেয়ার জন্য উপযুক্ত স্থান খুঁজছে বলে বৈঠকে এরদোগানকে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি।
এ সময় তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে আলোচনার জন্য ফোন করায় এবং তুরস্কের ফার্স্ট লেডি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর রোহিঙ্গাদের দুর্দশা দেখতে বাংলাদেশ সফর করায় ধন্যবাদ জানান রাষ্ট্রপতি।
একইসঙ্গে রোহিঙ্গাদের বিষয়ে ওআইসির চলমান সম্মেলনে একটি বিশেষ অধিবেশনের আয়োজন করার জন্যও তুর্কি প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানান বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান।
দুঃসময়ে ভারতকে পাশে পাওয়ার আশা করছি : কাদের
ঢাকা: রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারত বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলে প্রত্যাশা করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
রোববার রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে বিআরটিএ’র মোবাইল কোর্ট কার্যক্রম পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে সারা দুনিয়া আজ উদ্বেগ প্রকাশ করছে। ভারতও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। প্রতিবেশী বিশাল ভারতের এই উদ্বেগে আমাদেরও তাদের পাশে এই মুহূর্তে খুবই প্রয়োজন। ’
তিনি আরও বলেন, ‘৭১- এর দুঃসময়ে ভারত বাংলাদেশের পাশে ছিল। আমরা আশা করছি, এই দুঃসময়ে ভারতকে পাশে পাব। এই মানবিক বিপর্যয় মোকাবিলায়। ’
এছাড়া রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিএনপির ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সরকার যখন প্রো-একটিভ বলে জাতিসংঘ মহাসচিব প্রশংসা করেছে। তখন একটি দল সমালোচনা করছে। তাদের টার্গেট আওয়ামী লীগ সরকার। মিয়ানমার সরকারের নির্যাতনের ব্যাপারে তারা কোনো কথা বলছেন না। ’
তিনি বলেন, ‘সারাদেশ যখন এই ইস্যুতে উদ্বিগ্ন, তখন এই দলটি খুশি। কারণ তারা নতুন ইস্যু পেয়েছে।