গাজীপুর সংবাদদাতা, ১৭ সেপ্টেম্বর ঃ গাজীপুরে খাবার খেয়ে শিশু দুই ভাইয়ের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতদের অপর এক বোনকেও আশংকা জনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে। অপর জনের মরদেহ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। নিহত হুমায়ুন (৭) ও তার ভাই শাকিল (১০মাস) ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট এলাকার হাফানিয়া গ্রামের মোঃ রফিকুল ইসলামের ছেলে।
নিহতের মামা মোঃ শাহজাহান জানান, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের দক্ষিণ সালনা এলাকার রহিম উদ্দিনের বাড়িতে স্ত্রী সন্তান নিয়ে ভাড়া থেকে রফিকুল ইসলাম এলাকায় রাজমিস্ত্রির কাজ করে। মঙ্গলবার সকালে রফিকুল ইসলাম তার স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে একত্রে বসে পাঙ্গাস মাছ দিয়ে ভাত খায়। এরপর শাকিল ঘুমিয়ে পড়ে। কিছুক্ষণ পর তার ঘুম ভেঙ্গে যায়। এসময় হঠাৎ শাকিল বমি করতে শুরু করে। বেশ ক’বার বমি করতে করতে সে গুরুতর অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। তাকে দ্রুত শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শাকিলকে মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতাল থেকে তার লাশ নিয়ে ভাড়া বাড়িতে গিয়ে দেখতে পান তার অপর ভাগ্নে হুমায়ুন (৭) ও ভাগ্নি রুবিনা (১২) অসুস্থ্য হয়ে পড়েছে। এসময় তাদের দুই ভাই বোনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে হুমায়ুন মারা যায়। রুবিনাকে ময়মনসিংহের ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সে এখন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে।
জয়দেবপুর থানার ওসি মোঃ আমিনুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পুলিশ দক্ষিণ সালনা এলাকা থেকে নিহত শিশু শাকিলের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। পাঙ্গাস মাছ খেয়ে না অন্য কোন কারণে শিশুদের মৃত্যু হয়েছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর শিশুদের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
গাজীপুরে জুয়া ঠেকাতে ব্যবহৃত
জমি বাজেয়াপ্তের নোটিশ
গাজীপুর সংবাদদাতা॥ অবশেষে গাজীপুরের শ্রীপুরে অবৈধ জুয়া খেলাকে প্রতিরোধ করতে জুয়ায় ব্যবহৃত জমি বাজেয়াপ্তের নোটিশ দিয়েছে গাজীপুর জেলা প্রশাসন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জুয়ার আসর থেকে আটককৃতদের কারাদন্ড প্রদান ও একাধিকবার ভেঙ্গে দেয়ার পরও জুয়ার কর্মকান্ড অব্যহত থাকায় এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর স্বাক্ষরিত ওই নোটিশ (তাং ৭ সেপ্টেম্বর, স্মারক নং-৯২০) জমির মালিক শ্রীপুর থানাধীন কেওয়া গ্রামের আবদুল গফুর গংদেরকে পৌঁছে দেয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসন থেকে দেয়া নোটিশে বলা হয়েছে, আব্দুল গফুর গংদের মালিকানাধীন জমি পতিত অবস্থায় ফেলে রেখেছেন। ফলে উক্ত স্থানে ধারাবাহিকভাবে অবৈধ জুয়ার আসর পরিচালনা করা হচ্ছে। এ সংক্রান্ত সংবাদ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় ব্যাপক প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে ১০/১২ বার মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে জুয়ার আসর ভেঙে দেওয়ার পরও পুনরায় জুয়ার কার্যক্রম পরিচালিত হয়। সর্বশেষ গত ২৮ আগস্ট র্যাবের সহায়তায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ২৩ জনকে বঙ্গীয় প্রকাশ্য জুয়া আইন, ১৮৬৭ এর ৪ ধারায় শাস্তি দেয়া হয়। বঙ্গীয় প্রকাশ্য জুয়া আইন, ১৮৬৭ এর ৪ ধারায় বর্ণিত রয়েছে যে ‘কোন স্থানকে জুয়ার স্থান হিসেবে ব্যবহার করতে দিলে উক্ত স্থানের মালিকও একই অপরাধে অপরাধী হিসাবে গণ্য হবেন’। এমতাবস্থায়, ‘কেন আপনার বিরুদ্ধে উক্ত আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না এবং আপনার মালিকানাধীন জমি পতিত ফেলে রেখে অপরাধমূলক কর্মকান্ডে ব্যবহারের সুযোগ করে দেওয়ার কারণে রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ত্ব আইন, ১৯৫০ এর ৯২(১) (গ) ধারায় রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করে কেন খাস করা হবে না তার জবাব তিন দিনের মধ্যে দাখিল করার জন্য বলা হলো। ধার্যকৃত সময়ে জবাব প্রদানে ব্যর্থতায় ধরে নেয়া হবে এই বিষয়ে আপনার কোন বক্তব্য নাই’। গাজীপুর জেলা প্রশাসনের এই নোটিশে শ্রীপুর থানাধীন কেওয়া মৌজার আরএস ১৬৭ ও ১৬৮ খতিয়ানের ৬২৪০, ৬২৪৩, ৬২৮৯, ৬২৪০ ও ৬২৪১ দাগের ৪ দশমিক ৮৪ একর জমি উল্লেখ রয়েছে। গাজীপুরে জুয়া ঠেকাতে জমি বাজেয়াপ্তের এই নোটিশের অনুলিপি গাজীপুর পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, শ্রীপুর, সহকারী কমিশনার (ভূমি), শ্রীপুর, ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা, শ্রীপুর পৌর ভূমি অফিসকে দেয়া হয়েছে।
গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ রাহেনুল ইসলাম এ ব্যাপারে জানান, ওই জমি জুয়ার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। জুয়া অপরাধে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এদের ছাড় দেওয়া হবে না। গাজীপুরে যে স্থানে যার জমিতেই জুয়া খেলা হবে সেই জমিই রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হবে।
###
মোঃ রেজাউল বারী বাবুল
গাজীপুর জেলা সংবাদদাতা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ^বিদ্যালয়
এবারের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে চারা ও বীজ বিতরণ এবং
প্রধানমন্ত্রীর কল্যাণ তহবিলে একদিনের বেতন প্রদান করবে ॥
গাজীপুর সংবাদদাতা॥ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ^বিদ্যালয় (বশেমুরকৃবি) এবারের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের মাঝে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভাবিত বিইউধান-১ জাতের ৪’শ কেজি ধানের চারাসহ বিভিন্ন প্রকার সবজি চারা ও বীজ বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে। এছাড়াও বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের একদিনের বেতন প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গাজীপুরস্থিত এ বিশ^বিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ গিয়াস উদ্দীন মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মোঃ মাহফুজ উল-আলম এ তথ্য জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মাহফুজ উল-আলম আরো জানান, এবারের বন্যার ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরতদের একদিনের বেতন প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায়। এছাড়াও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের মাঝে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভাবিত বিইউধান-১ জাতের ৪’শ কেজি ধানের চারাসহ বিভিন্ন প্রকার সবজি চারা ও বীজ বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক উদ্ভাবিত বিইউধান-১ জাতের ধানের চারা রোপনের ৯০ দিনের মধ্যেই কর্তন উপযোগী হয়। ধানের এ জাতটি আমন মৌসুমে চাষের ঊপযোগী। এ ধানের ফলন প্রতি হেক্টরে সাড়ে ৩ মণ থেকে ৪ মণ হয়ে থাকে। আমাদের দেশে বন্যার শেষ দিকে শীত মৌসুম শুরু হবে, তাই এ বিষয়টি মাথায় রেখে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ বেশীরভাগ কৃষকদের মাঝে শীত কালীন সবজি চারা ও বীজ বিতরণ করা হবে। ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ধান ও সবজির বীজতলা তৈরী করা হয়েছে।
গাজীপুরস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের বেগম সুফিয়া কামাল অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত এ মতবিনিময় সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন। বিশ^বিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলরের আহবানে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
###
স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়াতে
কালীগঞ্জে তিন হাজার ছাত্রীর মাঝে স্যানেটারী ন্যাপকিন বিতরণ ॥
ছবিঃ ই-মেইলে।
গাজীপুর সংবাদদাতা॥ স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়াতে গাজীপুরের কালীগঞ্জে মাধ্যমিক পর্যায়ের তিন হাজার ছাত্রীর মাঝে মঙ্গলবার স্যানেটারী ন্যাপকিন বিতরণ করা হয়েছে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি এমপি অনুষ্ঠাণের প্রধান অতিথি হিসেবে ছাত্রীদের হাতে এসব স্যানেটারী ন্যাপকিন তুলে দেন।
গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের এডিপি’র আওতায় উপজেলা মাধ্যমিক পর্যায়ের তিন হাজার ছাত্রীর মাঝে স্যানেটারী ন্যাপকিন বিতরণ করা হয়। কালীগঞ্জের তুমলিয়া বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত এ ন্যাপকিন বিতরণ অনুষ্ঠাণে সভাপতিত্ব করেন কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন পলাশ। অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন- কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান। এতে অন্যান্যের বক্তব্য রাখেন- উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ আমজাদ হোসেন স্বপন ও শর্মিলী দাস মিলি, প্রাণ-আরএফএল’র সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার কমান্ডার মোঃ শামসুল আলম মিয়া বিএন (অব:), উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শাহানাজ আক্তার, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নূর-ই-জান্নাত, প্রধান শিক্ষক লিটন ফ্রান্সিস রিবেরু, ক্রিসটিনা রোজারিও, রেনুকা ইয়াসমিন ও মেরী কিরণ এসএসআরএ প্রমুখ।
###