নাটোর সংবাদদাতা
নাটোরের লালপুরে যুবলীগের মোটরসাইকেল শোভাযাত্রায় হামলায় চালিয়ে ৫টি মোটারসাইকেল ভাংচুর করেছে আওয়ামী লীগ কর্মীরা। তবে এ ঘটনায় কেউ আহত হয়নি। মঙ্গলবার সকালে উপজেলার রামকৃষ্ণপুর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। লালপুর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান মিন্টু জানান, আগামী ১৪ সেপ্টেম্বরে রাজশাহীতে প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় যোগদান করতে মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় যুবলীগ সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ঢাকা থেকে নাটোর হয়ে রাজশাহীতে যাবেন। এমন সংবাদে লালপুর উপজেলা যুবলীগ নেতা-কর্মিরা কেন্দ্রীয় নেতাদের সংবর্ধনা দিতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন। সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলা যুবলীগ কার্যালয় থেকে নেতা-কর্মিরা মোটর সাইকেল শোভাযাত্রা নিয়ে নাটোরের উদ্যেশ্যে রওনা দেয়। পথে তাদের মোটর সাইকেল শোভাযাত্রাটি উপজেলার রামকৃষ্ণপুরে পৌছালে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মিরা তাদের বাধা দেয় এবং মোটর সাইকেল ভাংচুর করে। পরে তারা সেই পথ থেকে পালিয়ে অন্য পথ দিয়ে নাটোর শহরের কানাইখালীস্থ জেলা যুবলীগ সভাপতির ব্যক্তিগত অফিসের সামনে গিয়ে উপস্থিত হন। এভাবে তাদের ওপর হামলা ও মোটর সাইকেল ভাংচুর করে কেন্দ্রীয় নেতাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যেতে বাধা দেওয়ার জন্য তীব্র নিন্দা জানান তিনি। যুবলীগ নেতা-কর্মিদের মোটর সাইকেল শোভাযাত্রায় হামলা হয়েছে এমন খবরে জেলা যুবলীগ নেতা কর্মিরা শহরের কানাইখালী এলকায় জড়ো হয়ে অবস্থান নেয়। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন, সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আহাদ আলী সরকার, নাটোর পৌলসভার মেয়র উমা চৌধুরি জলি, জেলা যুবলীগ সভাপতি বাশিরুর রহমান খান চৌধুরী এহিয়া, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল্লাহ আল সাকিব বাকী, নাটোর নবাব সিরাজ উদ দৌল¬া সরকারী কলেজ শাখা যুবলীগের সাবেক সভাপতি বুলবুল আহমেদ, সহ অন্যান্যরা। এ বিষয়ে লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু ওবায়েদ জানান, লালপুরে এমন কোন ঘটনা ঘটেছে বলে তাদের জানা নেই। যদি কিছু ঘটে থাকে তাহলে থানায় অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
নাটোরের তমালতলা কৃষি ও কারিগরি কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের
নাটোর সংবাদদাতা
নাটোর বাগাতিপাড়া উপজেলার তমালতলা কৃষি ও কারিগরি ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ পরিমল কুন্ডুর বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। স্থানীয়রা জানায়, মামলার বাদী ওই কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ, সাবেক সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট মাজেদ উর রহমান চাঁদ। কৃষি ও কারিগরি কলেজের অনার্স ভবনের পশ্চিম পার্শ্বে ক্রয়কৃত জমিতে বাড়ী করার জন্য ২৫ হাজার ইট রাখে। পরে তিনি ওই ক্রয়কৃত জমিতে বাড়ী করতে গেলে অধ্যক্ষ পরিমল কুন্ডু, উপাধ্যক্ষ বাবুল আক্তার, কৃষি শিক্ষক বিপ্লব হোসেন সবুজ, পিয়ন তহির উদ্দিন ও রেজাউল করিম এবং নৈশ প্রহরী মকবুল হোসেন বাধা দেয়। বাদী বাড়ী তৈরী বন্ধ রাখে এবং বিষয়টি নিষ্পত্তির পর পুনরায় বাড়ীর কাজ শুরু করবেন বলে সিদ্ধান্ত নেন। এরই মধ্যে ওই ব্যক্তিগণ বাদীর ক্রয়কৃত ইটগুলো জোর করে কলেজের কাজে ব্যবহার করেন। বর্তমানে অল্প কিছু ইট রয়েছে সেখানে। এ ঘটনায় অধ্যক্ষসহ উক্ত ব্যক্তিগণকে আসামী করে গত ০৬.০৯.১৭ইং তারিখে বাগাতিপাড়া মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। বিষয়টি পুলিশ সুপার বিজয় বিপ¬ব তালুকদার অবগত হলে সুষ্ট তদন্তর জন্য নাটোর সদর সার্কেল এসপি আবুল হাসনাত কে তদন্তের নির্দেশ দেন । পরে তিনি ৯ই সেপ্টেম্বর ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করেন এবং বাদী-বিবাদী নেতাকর্মী ও এলাকাবাসীর কাছ থেকে ঘটনা শুনেন। বাদী তমালতলা কৃষি ও কারিগরি ডিগ্রী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ এড. মাজেদ উর রহমান চাঁদ জানান, জমির খারিজের ডিসি আর, ২৮শতাংশ জমির খাজনার রশিদ, খতিয়ান ও ২৫ হাজার ইট ক্রয়ের রশিদ সকলের সামনে উপস্থাপন করেন এবং তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট কপি হস্তান্তর করেন। এ সময় কলেজের পরিচালনা নির্বাহী কমেটির সাবেক সদস্য ও বাগাতিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ আবুল হোসেন, সাবেক সদস্য, বাগাতিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ সেকেন্দার আলী সহ উপস্থিত অনেকে বাদীর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তমালতলা কৃষি ও কারিগরি ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ পরিমল কুন্ডু ইট নেয়ার কথা স্বীকার করে ইট ও জমি কলেজের টাকায় ক্রয় বলে দাবী করেন। কিন্তু তিনি তাৎক্ষণিক কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। ইতোপূর্বে এই অধ্যক্ষ বাদী হয়ে সাবেক অধ্যক্ষ চাঁদ এর নামে কলেজের মূল্যবান কাগজপত্র গোপন করেছেন মর্মে আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত বিবাদীর বাড়ী তল্লাশীর হুকুম জারী করে। সদর থানা পুলিশ কর্মকর্তা তার নাটোর শহরের বাড়ীটি তল্লাশী করে কোন কাগজপত্র না পাওয়ায় মামলাটি খারিজ হয়ে যায়।
গুরুদাসপুরে হাতা-হাতির ঘটনায়
এক লাখ ৭০ হাজার টাকা জরিমানা নিয়ে ভাগ-বাটোয়ারার অভিযোগ
নাটোর সংবাদদাতা
নাটোরের গুরুদাসপুরে হাতা-হাতির ঘটনায় শালিসের মাধ্যমে এক লাখ ৭০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে ভাগ-বাটোয়ারা অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। ভুক্তভোগী ও স্থানীয় সুত্রে জানাযায়, সোমবার উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের খাকড়াদহ গ্রামের আজগর আলীর ছেলে করিমকে মারপিট করার ঘটনায় রায়হান, আঃ সামাদ, গাফ্ফার, শহিদুল, কাওছার, রহিম, জিল্লুর ছলিম, শরিফুলদের কাছ থেকে এক লাখ সত্তর হাজার টাকা আদায় করেন স্থানীয় প্রধানরা। গত ৩০ আগষ্ট বিকেলে সুদের টাকা নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে করিম, দেলু, মাহাতাব প্রমুখরা রায়হানকে কিল-ঘুষি মারে। ওই খবর জানতে পেয়ে রায়হানের লোকজন রাতেই করিমকে মারপিট করে। এঘটনায় স্থানীয় প্রধানদের মধ্যস্থতায় মিমাংসার কথা বলে সোমবার শালিসে বসে। শালিশে প্রধানরা দলীয় প্রভাব খাটিয়ে তাদের ভয় ভীতি দেখিয়ে এক লাখ ৭০ হাজার টাকা জরিমানার রায় ঘোষনা করেন। ওই বৈঠকেই ৫০ হাজার টাকা দিতে বাধ্য করেন প্রধানরা। ওই ৫০ হাজার টাকা তারা ভাগ-বাটোয়ারা করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। বাঁকী টাকার জন্য ১০ দিনের সময় দেন তারা। ইতিমধ্যেই প্রধানরা ওই টাকার জন্য বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী রায়হানের। উল্লেখ্য আহাদ, হামিদ, মনিরুল, মুসা, তরিকুল, বাহাদুর, মোজাহার প্রমূখ ওই শালিসী বৈঠকে প্রধান হিসেবে ছিলেন। এঘটনায় শালিসী বৈঠকের প্রধান মোঃ মুসা মন্ডল জানান, সাক্ষ্য প্রমানের ভিক্তিতে উভয় পক্ষের প্রধানরা বোর্ডের মাধ্যমে ওই জরিমানা করেন। এখানে পক্ষপাত করার কোন সুযোগ নেই। সুদে কারবারী করিম জানায়, ওই দিন তাকে মারপিট করে ১লাখ ৭০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় রায়হান ও তার লোকজন। ওই ঘটনায় স্থানীয় প্রধানরা শালিসী বৈঠকের মাধ্যমে বিষয়টি আপোশ মিমাংসা করে দেন। ধারাবারিষা ইউনিয়ন আওয়ামমী লীগের সভাপতি সোলায়মান আলী বিশ^াস জানান, বিভিন্ন ছোট খাটো ঘটনা নিয়ে ওই প্রধানরা তাদের ইচ্ছেমত জরিমানা করে ভাগ-বাটোয়ারা করে থাকেন।
হোটেলে খাওয়া নিয়ে
নাটোরে আ’লীগ সমর্থক দুই গ্রুপের সংর্ঘষ
ইউনিয়ন সভাপতিসহ আহত ১০ ॥ অফিস ভাংচুর
নাটোর সংবাদদাতা
নাটোরের লালপুরে হোটেলে খাওয়ার সময় ঝোল দেয়া না দেয়া নিয়ে মঙ্গলবার বিকেল ও রাতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের দফায় দফায় সংঘর্ষে লালপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি তায়েজ উদ্দিনসহ ১০জন আহত হয়েছে। হামলাকারীরা লালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের অফিস ভাংচুর করেছে। স্থানীয় সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মঙ্গলবার সকালে লালপুর বাজারের রাজ হোটেলে স্থানীয় সিএনজি চালকরা খেতে যায়। তারা খিচুরি দিয়ে নাস্তা করার সময় ডিম না কিনে ফ্রি গোশতের ঝোল চায়। হোটেল কতৃপক্ষ তা না দেয়ায় আওয়ামী লীগ সমর্থক সিএনজি চালকরা হোটেলের ম্যানেজার তাইজুল ইসলামকে ধরে তাৎক্ষনিক মারপিট করে। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে সিএনজি চালকরা তাদের মালিক সমিতির উপদেষ্টা ও থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মতিউর রহমান মতি নেতৃত্বে এবং হোটেলের লোকজন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা রবিউল করিমের নেতৃত্বে সংঘবদ্ধ হলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে দুই গ্রুপ প্রকাশ্যে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মতিউর রহমান মতি গ্রুপ লালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের অফিস ভাংচুর করে। সংঘর্ষের সময় লালপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি তায়েজ উদ্দিনসহ ১০জন আহত হয়েছে। ঘটনার পর লালপুর বাজার জুড়ে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। আতংকে গোটা বাজারের মানুষ পালিয়ে গেলে লালপুর বাজারে ভুতুরে পরিবেশ সৃষ্টি হয়। পরে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার পরে আবারো দুপক্ষ সংর্ঘবদ্ধ হয়ে বাজারে আসলে আবারো উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। রাত আটটায় এই রিপোর্ট লেখার সময় লালপুর বাজারে দুপক্ষের খন্ড খন্ড মিছিল ও টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছিল এবং উপজেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাজেদুল ইসলাম ঝন্টুর নেতৃত্বে রাতে বাজারের রাস্তার পাশে অবৈধ ভাবে গড়ে ওঠা দোকান উচ্ছেদ চলছিল। এ ঘটনায় আহত লালপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি তায়েজ উদ্দিনসহ কয়েকজনকে লালপুর উপজেলা হাসপাতালে এবং অন্যদের বিভিন্ন বেসরকারী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।এ বিষয়ে জানতে চাইলে লালপুর থানা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ইসাহাক আলী বলেন, এটা আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ নয়। এই সংঘর্ষ হোটেল ও সিএনজি চালকদের মধ্যে ঘটেছে। তবে তিনি দলীয় অফিস ভাংচুরের কথা স্বীকার করেছেন।
মোঃ রিয়াজুল ইসলাম
নাটোর সংবদদাতা
মোবাঃ ০১৭১৩-৭৭৫৯৮০
তাং-১২.০৯.১৭