ডেস্ক: মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের পাশে দাঁড়াতে রাখাইন রাজ্যে প্রবেশাধিকার দাবি করেছে কানাডা। মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কফি আনান কমিশন বাস্তবায়নে গঠিত কমিটির কার্যক্রমে বাধা দেয়ার অভিযোগ তুলেছে জাস্টিন ট্রু–ডোর সরকার।
জাতিসংঘের ধারাবাহিকতায় রোহিঙ্গা প্রশ্নে মিয়ানমারের নীতিকে ‘জাতিগত নিধনযজ্ঞ’ (ক্লিয়ারেন্স অপারেশন) আখ্যা দিয়েছে দেশটি। এর আগে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রু–ডো মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন সরকারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সুচিকে ফোন করে পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
মিয়ানমারে ক্লিয়ারেন্স অপারেশনের বিরুদ্ধে শনিবার দুটি প্রতিবাদ মিছিল হয়েছে কানাডায়। মিছিলের একটিতে অংশ নিয়ে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টিলা ফ্রিল্যান্ড মিয়ানমারকে ‘জাতিগত নিধনযজ্ঞ’ সংঘটনের দায়ে অভিযুক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘সংবাদমাধ্যমে আসা খবর অনুযায়ী আমাদের কাছে এটা জাতিগত নিধনযজ্ঞই মনে হচ্ছে। এটি কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। আমি গর্বিত যে কানাডীয়রা এর বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলছে।’ পাশাপাশি তিনি রাখাইনে হত্যাযজ্ঞের তথ্য সংগ্রহের জন্য সেখানে প্রবেশের অধিকার চেয়েছেন। বর্তমানে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে সেখানে প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এর আগে স্বাধীন পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোকে কাজ করার সুযোগ দিতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছিল কানাডা।
এবার দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানালেন, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে প্রবেশাধিকার চাইবে কানাডা। তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারে কানাডার রাষ্ট্রদূত রাখাইনে যাওয়ার চেষ্টা করবেন।’ ১৩ সেপ্টেম্বর সুচিকে ফোন করে রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ওপর চলমান সহিংসতায় গভীর উদ্বেগ জানান ট্রু–ডো। দেশটির আন্তর্জাতিক উন্নয়নমন্ত্রী ম্যারি ক্লদে বিভু শুক্রবার বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের জন্য আরও ২.৫৫ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দেন।
মিয়ানমারের নিপীড়ত রোহিঙ্গাদের জন্য আরও সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন ইন্দোনেশিয়ার বিশাল বিক্ষোভে অংশ নেয়া লোকজন। বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম এ দেশটিতে শনিবার বিক্ষোভ হয়েছে। এসময় রোহিঙ্গাদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে দেশের পতাকা ও মিয়ানমার সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার হাতে নেন বিক্ষোভকারীরা। ‘রোহিঙ্গা গণহত্যা বন্ধ কর’ এবং ‘রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ বন্ধ কর’- এমন নানা স্লোগান দেন তারা। আইয়ুব বাহরুদ্দিন নামে এক বিক্ষোভকারী বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পাঠানো রোহিঙ্গাদের জন্য এ সাহায্য খুবই সীমিত। তিনি বিশ্ববাসীর কাছে আরও সহায়তা পাঠানোর আহ্বান জানান। এদিকে, যুক্তরাজ্যের রোহিঙ্গারাও তাদের ভাইদের দুর্দশায় সোচ্চার হয়েছেন।
শনিবার ইংল্যান্ডে তারা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। ব্রিটেনে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের দেয়া এক বিবৃতিতে মিয়নামারের রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে এ জাতিগত নিধনযজ্ঞ বন্ধে যুক্তরাজ্য সরকারের সাহায্য চাওয়া হয়েছে।
Check Also
ট্রাইব্যুনালে আ.লীগ নেতাদের বিচার দেখতে এসে যা বললেন সাঈদী পুত্র
জুলাই-আগস্টের গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া সাবেক ৯ মন্ত্রীসহ ১৩ জনকে …