তোমার হাতপাখার বাতাসে প্রাণ জুড়িয়ে আসে, আরও কিছু সময় তুমি থাকো আমার পাশে’- এ গান শোনেননি বা হাতপাখা দেখেননি- এমন মানুষ মেলা ভার। যতই আমরা বড় শহুরে মানুষই হই না কেন।
আধুনিক থেকে অত্যাধুনিক যুগে বসবাস এখন আমাদের। আর আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে শহর থেকে গ্রামে। সেই আবহ রয়েছে গ্রাম থেকে পাড়া-মহল্লায়।
তবে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ফলে আজও হাতপাখার প্রচলন থেকেই গেছে। অতীতে এর প্রচলন বেশি থাকলেও বর্তমানে একটু কম। তারপরও অফিস-আদালত থেকে পাড়া-মহল্লায় এমন কোনো পরিবার নেই, যে পরিবারে হাতপাখার দেখা মেলে না। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের পর তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে মানুষ হাতপাখার ব্যবহার করে। তাই হাতপাখার কারিগররাও এখনও হাতপাখা তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
মূলত হাতপাখা বাংলার ইতিহাস-ঐতিহ্যেরই অংশ। হাতপাখার রকমফেরও অনেক। কোনোটা নিছকই তালপাতার পাখা, যার কাজ শুধুই গরম থেকে রক্ষা করা। আবার এমন হাতপাখাও আছে, যা শুধু বাতাসই দেয়, না সৌন্দর্য গুণেও অনন্য।
হাত পাখা ব্যবসায়ী সাতক্ষীরার তালা সদরের মাঝিয়াড়া গ্রামের আকবর আলী। তিনি বলেন, যখন বিদ্যুৎ থাকে না তখন মানুষ গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেন। আমি নিজেই প্রতি বছরই গরমের এমন সময় হাতপাখার ব্যবসা করি। এতে মোটামুটি রোজগারও ভালো হয়।
তিনি বলেন, তৈরি করার পর প্রতি পিস হাতপাখা বিক্রি করি ১৫-২০ টাকায়। প্রতিদিন এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা রোজগার হয়। প্রয়োজনে কেউ আবার বাড়িতে এসে কিনে নিয়ে যায় হাতপাখা। বলতে গেলে প্রতিমাসে আয় হয় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা।
একই গ্রামের হাতপাখা ব্যবসায়ী সিরাজ বিশ্বাস। তিনি বলেন, আমিও প্রতিবছর গরমের সময় হাতপাখার ব্যবসা করি। বাড়িতে আমার হাতপাখা তৈরির কাজে সহায়তা করেন আমার স্ত্রী। হাতপাখা তৈরির পর সেগুলো বিভিন্ন হাটে বাজারে গিয়ে বিক্রি করি। মানুষরাও কিনে নেয় গরম থেকে বাঁচতে। ১৫-২০ টাকায় বিক্রি হয় প্রতি খানা হাতপাখা। বিক্রির পর প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা রোজগার হয়। এতে সংসার ভালোভাবেই চলে।
তিনি আরও বলেন, তালপাতার হাতপাখার প্রচলন বহু আগে থেকেই। তবে আধুনিক যুগে এসে হাতপাখার প্রচলন কিছুটা কমেছে। তবুও প্রচলন রয়েই গেছে। তীব্র গরমের হাত থেকে বাঁচতে মানুষ ব্যবহার করে হাতপাখা।জাগো নিউজ