মিয়ানমার সেনা অভিযানে নিহত রোহিঙ্গাদের এতিম সন্তান ও পরিবারবিচ্ছিন্ন শিশুদের যত্নে বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়।
শরণার্থী এ শিশুদের উপযোগী পৃথক শিবির স্থাপনের পাশাপাশি তাদের সুবিধা দিতে স্মার্ট কার্ডও দেবে মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার রাজধানীতে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ ও সমাজকল্যাণ সচিব জিল্লার রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ভূমিকার কথা তুলে ধরেন সচিব।
তিনি বলেন, কোনো রোহিঙ্গা শিশু খুব খারাপ অবস্থায় নেই, তাদের দেখাশোনা করা হচ্ছে। আমরা আশা করছি, আন্তর্জাতিক চাপে তাদের দ্রুত ফেরত নেয়ার ব্যবস্থা হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত তারা থাকছে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী তাদের সহযোহিতা করা হবে।
সচিব জিল্লার রহমান বলেন, ১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সটা ভালনারেবল। তাদের যদি নরমাল এই জনগোষ্ঠীর মধ্যে রাখা হয় হয়তো তারা অশান্তির কাজে জড়িয়ে যেতে পারে। তাই সরকারের বিবেচনা হচ্ছে, পরিবারবিচ্ছিন্ন শিশুদের আলাদা রাখার ব্যবস্থা করা।
এজন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে অনাথ রোহিঙ্গা শিশুদের আলাদা রাখার ব্যবস্থা করতে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় কাজ করছে বলে জানান সচিব।
এরই মধ্যে পরিবারবিচ্ছিন্ন রোহিঙ্গা শিশুদের আলাদা করে রাখতে সরকারের কাছে উখিয়া ও টেকনাফে ২০০ একর করে জমি চেয়েছে মন্ত্রণালয়।
সচিব জানান, জায়গা বরাদ্দ পেলে শূন্য থেকে সাত বছরের শিশুদের এক জায়গায় এবং ৮-১৮ বছরের শিশুদের আরেক জায়গায় রেখে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে তাদের পরিচর্যা করা হবে।
পরিবারবিচ্ছিন্ন শিশুদের চিহ্নিত করতে তাদের স্মার্ট কার্ড দেয়া হচ্ছে জানিয়ে সমাজকল্যাণ সচিব বলেন, এরই মধ্যে এক হাজার ৮০০ রোহিঙ্গা শিশুকে শনাক্ত করে স্মার্ট কার্ড দেয়া হয়েছে। বাকিদেরও স্মার্ট কার্ড দেয়া হবে।
উল্লেখ্য, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর হত্যা-নির্যাতনের মুখে গত ২৫ অগাস্ট থেকে এ পর্যন্ত সাড়ে চার লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
জাতিসংঘ শিশু তহবিল- ইউনিসেফের হিসাবে এ শরণার্থীদের ৬০ ভাগই শিশু। তাদের মধ্যে অনেকের বাবা-মা রাখাইনে নিহত হয়েছেন। অনেকে আবার প্রাণ বাঁচাতে পালাতে গিয়ে পরিবারবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।