ডিক্লারেশনপ্রাপ্ত ছাপাখানায় অনুমোদনবিহীন পত্রিকা না ছাপানোর নির্দেশ দেওয়ায় ছাপাখানা সংক্রান্ত জটিলতায় সাতক্ষীরা থেকে প্রকাশিত ৩টি দৈনিক পত্রিকা বুধবার প্রকাশিত হয়নি। পত্রিকা তিনটি হলো দৈনিক আজকের সাতক্ষীরা, দৈনিক দক্ষিণের মশাল ও দৈনিক সাতনদী। সাতক্ষীরা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের পক্ষে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোশারেফ হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জেলার ৫ ছাপাখানাকে অনুমোদন বিহীন পত্রিকা না ছাপার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সূত্রে জানা গেছে, সাতক্ষীরা থেকে প্রকাশিত দৈনিক পত্রদূত, দৈনিক কালেরচিত্র, যুগেরবার্তা, দৃষ্টিপাত ও কাফেলার ছাপাখানার অনুমোদন রয়েছে। এই ছাপাখানাগুলোতে সংশ্লিষ্ট পত্রিকাসহ আরো ছাপা হয় জেলা ও খুলনা বিভাগ থেকে ডিক্লারেশন নেওয়া ৩টি দৈনিকসহ ৫টি পত্রিকা।
সূত্র আরো জানায়, আজকের সাতক্ষীরা পত্রিকার প্রিন্টার্স লাইনে গ্লোব প্রিন্টিং প্রেসের নাম রয়েছে। তবে বর্তমানে সাতক্ষীরাতে এই প্রেসের অস্তিত্ব নেই। দৈনিক সাতনদী পত্রিকার রাজ প্রিন্টিং প্রেসের কোন অস্তিত্ব থাকলেও সেখানে পত্রিকা ছাপার মত মেশিন নেই। একইভাবে বন্ধ রয়েছে দৈনিক দক্ষিণের মশাল পত্রিকার জন্য অনুমোদন নেওয়া আহমাদিয়া প্রেস। সাপ্তাহিক মুক্ত স্বাধীন পত্রিকার শাপলা পিন্টিং প্রেসেরও অস্তিত্ব নেই। খুলনা থেকে ডিক্লারেশন নেওয়া দক্ষিণাদূত সাতক্ষীরা থেকে ছাপা হতো।
একই কারণে কয়েক বছর আগে সাতক্ষীরা থেকে প্রকাশিত জামায়াতের কথিত মুখপত্র দৈনিক আলোর পরশ পত্রিকাটি বন্ধ হয়ে যায়। ইতোপূবে একই কারণে দৈনিক পত্রদূতের সম্পাদক ও কাফেলার সম্পাদককে জরিমানা করা হলে সাতক্ষীরায় তীব্র আন্দোলনের মুখে তৎকালীন জেলা প্রশাসক সাতক্ষীরা থেকে বদলী হন।
এবিষয়ে দৈনিক দক্ষিণের মশালের সম্পাদক অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহী বলেন, জেলা প্রশাসন থেকে আমাদের পত্রিকা বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। প্রেস মালিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, পত্রিকা ডিক্লারেশন যে প্রেসে থেকে নেওয়া হয়েছে, সেই প্রেস থেকে পত্রিকা ছাপতে হবে।
আমার পত্রিকার ডিক্লারেশন আহমাদিয়া প্রিন্টিং থেকে নেওয়া ছিলো। বর্তমানে আহমাদিয়া প্রিন্টিং প্রেস বন্ধ রয়েছে। এ সংক্রান্ত জটিলতা এড়াতে আমরা প্রশাসনের কাছে আবেদন করবো।
পত্রদূত প্রিন্টার্সের সত্ত্বাধিকারী এড. আবুল কালাম আজাদ বলেন, প্রশাসন কোন পত্রিকাকে বন্ধ করার চিঠি দেয়নি। ৫টি পত্রিকার নিজস্ব প্রিন্টিং প্রেস রয়েছে। এই ৫টি প্রেসে ছাপা হয় বিভিন্ন পত্রিকা। এই ছাপাখানাগুলোকে অনুমোদন বিহীন পত্রিকা না ছাপতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন বলেন, ডিক্লারেশন নেওয়ার সময় কোন ছাপাখানা থেকে ছাপতে হবে সেই বিষয়ে উল্লেখ থাকতে হয়। কিন্তু সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে খুলনা ও যশোর থেকে অনুমোদন নেওয়া পত্রিকাগুলোও সাতক্ষীরার বিভিন্ন ছাপাখানা থেকে ছাপাচ্ছেন।
এছাড়া সাতক্ষীরার অনেক পত্রিকার ডিক্লারেশন নেওয়া যে সকল ছাপাখানা থেকে, সেই সকল ছাপাখানার কোন অস্তিত্ব নেই। তাদের তো ধরার কোন সুযোগ নেই। সেজন্য অনুমোদিত ছাপাখানাগুলোকে অনুমোদন বিহীন পত্রিকাগুলোকে না ছাপতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।