ঢাকা : পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়ে মিয়ানমার থেকে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা মুসলমানদের নিয়ে বাংলাদেশ এক গভীর সংকটে পড়েছে। তিনি বলেন, স্থানাভাব ও সম্পদের সীমাবদ্ধতার পরেও শুধু মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া হয়েছে। রোহিঙ্গারা দেশে প্রবেশ করায় নানা ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে।
মধ্য নভেম্বরে কানাডায় অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের ওপর সম্মেলনপূর্ব প্রস্তুতি সভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এসব কথা বলেন।
রোববার দুই দিনব্যাপী রাজধানীর রেডিসন হোটলে এই আয়োজন শুরু হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ এবং বাংলাদেশ পুলিশের সম্মিলিত উদ্যোগে এটি চলছে। কানাডায় অনুষ্ঠিতব্য মূল সম্মেলনপূর্ব তৃতীয় প্রস্তুতি সভা এটি। আগের দুইটি হয়েছে গত আগস্টে জাপান ও রুয়ান্ডায়।
সভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে উদ্বোধনী ভাষণ দেন। সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাহফুজুর রহমান প্রস্তুতি সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন। অন্যদিকে জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব, ডিপার্টমেন্ট অব ফিল্ড সাপোর্ট মিজ লিজা এম বুটেনহেইম বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
প্রস্তুতি সভা নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ ধরনের সম্মেলনপূর্ব সভা আয়োজনের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয় যে, বাংলাদেশ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের অগ্রভাবে থাকতে চায়। এটা আরও প্রমাণ করে যে, বাংলাদেশ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রম উন্নত করার লক্ষ্যে বাস্তবিকভাবেই সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে একযোগে কাজ করতে আগ্রহী।
তিনি আশাপ্রকাশ করেন, জাতিসংঘের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আরও কীভাবে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নিজ নিজ দেশ অংশগ্রহণ করতে পারে সেবিষয়ে এ সভায় ফলপ্রসূ আলোচনা হবে।
জাতিসংঘ ও অন্যান্য ২২টি দেশের মোট ২০০ প্রতিনিধি এ প্রস্তুতি সভায় যোগদান করছেন। কানাডার জাতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ভ্যাংকুভারে আগামী ১৪-১৫ নভেম্বর মূল সম্মেলনের আয়োজন হচ্ছে। বাংলাদেশ এ সম্মেলনের সহ-আয়োজক।
প্রস্তুতি সভায় জাতিসংঘ সদর দফতরের উপ-সামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল হুগ ভেন রসেন, মালিতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের ফোর্স কমান্ডার মেজর জেনারেল জ্যাঁ-পল ডেকোনিন্ক, বাংলাদেশে নিযুক্ত নির্বাচিত দেশসমূহের হাইকমিশনার ও রাষ্ট্রদূত এবং সামরিক ও বেসামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।