ইউরোপের বেশির ভাগ দেশের পথ অনুসরণ করলো অস্ট্রিয়া। সেখানেও বোরকা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। রোববার থেকে এ নির্দেশ কার্যকর হয়েছে। এ নিষেধাজ্ঞার অধীনে কাউকে বোরকা, মুখোশ অথবা মেডিকেল মাস্ক ব্যবহার করতে দেয়া হবে না। যদি কেউ এ নিয়ম ভঙ্গ করে তাহলে ১৫০ ইউরো করে জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। রোববার এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার দিনে জিল অ্যাম সি শহরে একজন মুসলিম নারীকে আইন অমান্য করতে দেখা যায়। তখন সেখানে উপস্থিত পুলিশ জোর করে তার মুখের নেকাব খুলে নেয়। এভাবে একজন দু’জন নয়, অনেক নারীকে নেকাব খুলতে বাধ্য করা হয়। রাজধানীতে দেখা যায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন দ্য ডেইলি মেইল। এর আগে ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে বোরকা, নেকাব নিষিদ্ধ হয়েছে বা হওয়ার প্রক্রিয়াধীন আছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য দেশগুলো হলো বৃটেন, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, বুলগেরিয়া, ইতালি, সুইজারল্যান্ড, নরওয়ে প্রভৃতি। এ নিয়ে ইউরোপজুড়ে মুসলিমদের মধ্যে শুরু হয়েছে এক হতাশা। ফ্রান্সে তো বোরকা নিষিদ্ধ, বিশেষ করে সাঁতারের পোশাক বুরকিনি নিষিদ্ধ করা নিয়ে তুলকালাম ঘটে গেছে। তবে এ ধারায় এবার অস্ট্রিয়া সর্বশেষ। সেখানে জনসমক্ষে বা পাবলিক প্লেসগুলোতে বোরকা, মেডিকেল মাস্ক, স্কার্ফ নিষিদ্ধ করা হলো। তবে শুধু সুনির্দিষ্ট শর্তের অধীনে এগুলো ব্যবহারের অনুমতি রয়েছে। যেমন সাংস্কৃতিক কোনো ইভেন্ট থাকলে সেখানে প্রকাশ্যে এসব পোশাক পরতে পারবেন মুসলিম নারীরা। তবে এমন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বেশ কিছু নারী রোববার বিক্ষোভ করেছেন। ভিয়েনা থেকে কর্মকর্তারা এ পোশাক নিষিদ্ধ করার রায় ঘোষণা করে বলেন, অস্ট্রিয়ার সংখ্যাগরিষ্ঠ নাগরিক ও তৃতীয় কোনো দেশ থেকে অস্ট্রিয়ায় বসবাসকারীদের মধ্যে সফল সহাবস্থানের জন্য অস্ট্রিয়ার মূল্যবোধ ও মৌলিক শর্তগুলো মেনে চলতে হবে। সম্মান দেখাতে হবে। এ দেশটিতে আরব দেশগুলো থেকে বিপুল সংখ্যক পর্যটক যান। কিন্তু তাদের ক্ষেত্রেও এই একই নিয়ম কার্যকর হবে। অস্ট্রিয়ায় ক্ষমতায় রয়েছেন মধ্যপন্থি চ্যান্সেলর ক্রিস্টিয়ান কার্ন। তার সরকার বিদায়ের পথে। তাই শেষ মুহূর্তে তার সরকার এমন আইন কার্যকর করে গেল। আগামী ১৫ই অক্টোবর সেখানে নির্বাচন। উল্লেখ্য, বৃটেনে ধর্মীয় কারণে কোনো পোশাক পরার ওপর বিধিনিষেধ দিয়ে কোনো আইন নেই। তবে ২০০৭ সালের মার্চে শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি নির্দেশনা জারি করে। তাতে সরকারি প্রতিষ্ঠান ও স্কুলগুলোতে নেকাব, বোরকা নিষিদ্ধ করতে নির্দেশনা দেয়া হয়। এক পর্যায়ে এক মামলায় বোরকা পরা নারীর সাক্ষ্য নিতে অস্বীকৃতি জানান বিচারকরা। কারণ, বোরকায় মুখ ঢেকে রাখায় ওই বিচারক ওই নারীকে সনাক্ত করতে পারছিলেন না। নেদারল্যান্ডের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র, সরকারি অফিস আদালতে বোরকা, হেলমেট, নেকাব নিষিদ্ধ করার একটি প্রস্তাব পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে পাস হয়েছে। এখন সিনেট বা পার্লামেন্টের উচ্চ কক্ষ অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। গত বছর এ বিলটি প্রস্তাব করেছিলেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রোনাল্ড প্লাস্টার্ক। তিনি মনে করেন, কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে রাখলে জনসেবামুলক কাজে একজন নারীর সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি হয়। তা ছাড়া এ পোশাক নিরাপত্তার জন্যও হুমকি। এ বিলের অধীনে কেউ আইন লঙ্ঘন করলে তারে ৪১০ ইউরো পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
Check Also
সাতক্ষীরাসহ বিভিন্নস্থানে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) পালিত
সাতক্ষীরাসহ সমগ্র মুসলিম বিশ্বে সোমবার, ১২ রবিউল আউয়াল ধর্মীয় ভাবগাম্ভির্য ও যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয়েছে …