বাংলাদেশে রোহিঙ্গা মুসলিমদের সহায়তায় কর্মরত ত্রাণ সংস্থাগুলো আগামী ছয় মাস প্রায় ১২ লাখ মানুষের জন্য ৪৩৪ মিলিয়ন ডলার সহায়তার আবেদন জানিয়েছে।
বুধবার সংস্থাগুলো জানিয়েছে, বিশালসংখ্যক এই শরণার্থীর মধ্যে অনেকেই শিশু,তাদের জীবন রক্ষার জন্য এ তহবিলের আবেদন জানিয়েছে তারা।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সহিংসতা ও নির্যাতন থেকে বাঁচতে মিয়ানমারের রাখাইন থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে আনুমানিক আট লাখ ৯ হাজার রোহিঙ্গা।
এর মধ্যে গত ২৫ আগস্ট সহিংসতা শুরু হওয়ার পর পাঁচ লাখেরও বেশি শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে। এর আগে থেকে আরও তিন লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয়ে রয়েছে।
বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক রবার্ট ওয়াটকিনস এক বিবৃতিতে বলেন, ‘কক্সবাজারে থাকা রোহিঙ্গারা খুবই নাজুক অবস্থায় আছে। তাদের অনেকেই বিভীষিকার শিকার হয়েছে। এখন তাদের অনেক মানবেতর পরিস্থিতিতে বসবাস করতে হচ্ছে।
নতুন করে আসা পাঁচ লাখ ৯ হাজার রোহিঙ্গাকে সহায়তা করতে বাংলাদেশ ও ত্রাণ সংস্থাগুলো হিমশিম খাচ্ছে।
গত ২৫ আগস্ট রাখাইনে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অভিযান শুরু হলে এ রোহিঙ্গারা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আসে।
রাখাইনের রোহিঙ্গাদের ওপর চলমান নির্যাতনকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের ‘পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ’ আখ্যা দিয়েছে জাতিসংঘ।
তবে মিয়ানমার এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, ২৫ আগস্ট পুলিশের ওপর হামলাকারী আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) বিরুদ্ধে লড়াই চালাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী।
আরসার বিদ্রোহীরা গত বছরের অক্টোবরেও পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছিল। এর জবাবে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিতাড়ন অভিযান শুরু করলে ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেয়।
ওয়াটকিনস বলেন, প্রতিনিয়ত শরণার্থী আগমন করায় আরও ৯১ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আসবে বলে ধারণা করে শরণার্থীদের সহায়তার ব্যাপারে পরিকল্পনা করছে ত্রাণ সংস্থাগুলো।
তিনি বলেন, আগামীতে ১২ লাখ মানুষকে সহায়তা দেয়ার লক্ষ্যে পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর মধ্যে সব রোহিঙ্গা শরণার্থীর পাশাপাশি তাদের আশ্রয়দাতা তিন লাখ বাংলাদেশিও রয়েছে।
ওয়াটকিনস বলেন, বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জীবন রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ তৎপরতার পাশাপাশি তাদের রক্ষায় ত্রাণ সংস্থাগুলোর কার্যক্রম চালাতে এ পরিকল্পনার ব্যাপারে দাতাদের দ্রুত সাড়া দেয়া প্রয়োজন।