পরীক্ষা শুরুতে ঠিক বুঝতে পারিনি। কিন্তু আধাঘণ্টা পর দেখি বহু নার্সের পরীক্ষা শেষ। তখন বুঝলাম প্রশ্নপত্র আগেই ফাঁস হয়েছে। ফাঁস না হলে ১০০টি নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন মার্ক করে শেষ করা যায় না। পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি) মতো প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নেয়া পরীক্ষারও প্রশ্নপত্র যদি ফাঁস হয় তাহলে কোন প্রতিষ্ঠানের ওপর বিশ্বাস রাখব। যাই হোক, কপালে যা আছে তাই হবে। চাকরি হলে হবে না হলে নাই। রাতে হাসপাতালে ডিউটি আছে, এখন গিয়ে ঘুমাবো।’
নার্সিং অ্যান্ড মিডওয়াইফারি অধিদফতরের অধীনে পিএসসির মাধ্যমে অনুষ্ঠিত নার্স নিয়োগ পরীক্ষা শেষে এভাবেই বলছিলেন বেসরকারি একটি হাসপাতালে কর্মরত নার্স।
রাজধানীর ১০টি কেন্দ্রে মোট ৪ হাজার ৬শ সিনিয়র স্টাফ নার্স (ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সাযেন্স অ্যান্ড মিডওয়াইফারি ৩৬০০ ও মিডওয়াইফ ১০০০) বিপরীতে ১৬ হাজার ৯শ’ জন নার্স আজ (শুক্রবার) এ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক নার্স অভিযোগ করে বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজের কয়েকজন নার্স নেতা (কা, আ, সা,ফা, জা ও র আদ্যক্ষরের) প্রশ্নপত্র ফাঁসের নেপথ্যে কাজ করেছেন। বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) দিনগত রাতে এসব নেতারা বিভিন্ন নার্সিং হোস্টেলে গিয়ে সর্বনিম্ন ২০ হাজার থেকে ৫০/৬০ হাজার টাকায় এসব প্রশ্নপত্র বিক্রি করেছেন।
তারা আরও বলেন, গভীর রাতে অনেক নার্সকে ওই সব নেতাদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা গেছে। গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে মোবাইল ফোন ট্রেকিং করলেই প্রশ্নপত্র ফাঁসের কথোপকথনের প্রমাণ পাবেন। আজ (শুক্রবার) মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা থাকায় নার্সদের প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে কথাবার্তা কম হচ্ছে। তবে প্রকৃতপক্ষে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে।
তবে এ বিষয়ে পিএসসি চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বিষয়টি গুজব বলে জানান। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, ‘প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টি গুজব। পিএসপির কোনো পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের সম্ভাবনা নেই। অভিযোগকারী হয়তো কোনো সন্দেহের বশবর্তী হয়ে বলে থাকতে পারেন। তবে কোনো প্রশ্ন ফাঁস হয়নি।’
২০ মিনিটে উত্তপত্র জমা নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘পরীক্ষা এক ঘণ্টার। এর আগে উত্তরপত্র জমা নেয়ার কথা নয়, তবে যদি কেউ নিয়ে থাকেন তাহলে বিষয়টি দেখা হবে।’jagonews24.com