ডেস্ক: মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার অন্য কোনও পন্থা ভাবুক সরকার। ফাঁসি দেওয়া কাম্য নয়। শুক্রবার এমনই মত প্রকাশ করল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।
প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ বলেছে, ‘‘যে কোনও ব্যক্তির মৃত্যুই শান্তির হওয়া উচিত, যন্ত্রণার নয়। কারণ শতকের পর শতক ধরে এটা কথিত যে, যন্ত্রণাহীন মৃত্যুর সমতুল আর কিছুই নয়।’’ এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপালের সহায়তা চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কেন্দ্রীয় সরকারকে আদালত নোটিসও পাঠিয়েছে।
মৃত্যুদ- আদৌ বহাল থাকা উচিত কি না, সে নিয়ে ভারত শুধু নয়, গোটা বিশ্বেই বিতর্ক রয়েছে। অনেক দেশই মৃত্যুদণ্ডের অবলুপ্তি ঘটিয়েছে ইতিমধ্যেই। ভারতেও মৃত্যুদণ্ড তুলে দেওয়ার দাবি অনেক দিন ধরেই উঠছে। সুপ্রিম কোর্ট মৃত্যুদণ্ড তুলে দেওয়ার পক্ষপাতী নয়। কিন্তু ফাঁসির মতো যন্ত্রণাদায়ক পদ্ধতিতে কাউকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া উচিত নয় বলেই দেশের সর্বোচ্চ আদালত এখন মনে করছে।
ঋষি মলহোত্র নামে এক আইনজীবীর দায়ের করা জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতেই এই পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের।
মলহোত্র নিজের সওয়ালে বলেন, যে কোনও ব্যক্তিরই মর্যাদার অধিকার রয়েছে। তাঁর ব্যাখ্যা, কাউকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেওয়ার পর তাঁর মৃত্যু হওয়ার আগে পর্যন্ত তাঁকে অপরিসীম যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে তো যেতে হয়ই, ওই সময়ে তাঁর মর্যাদাও সম্পূর্ণ ধূলিসাৎ হয়ে যায়। মৃত্যুর সময়টা এমন হওয়া কিছুতেই কাম্য নয় বলে ওই আইনজীবীর দাবি। সুপ্রিম কোর্টও ঋষি মলহোত্রর সঙ্গে সহমত হয়েছে।
প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এ দিন স্বীকার করেছে যে, ৩০ বছর আগে সুপ্রিম কোর্টই বলেছিল, ফাঁসির মাধ্যমে মৃত্যুদ- কার্যকর করার পদ্ধতি সংবিধানসম্মত। কিন্তু সর্বোচ্চ আদালত মনে করিয়ে দিয়েছে, ভারতের সংবিধান চিরকালই প্রগতিশীল এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই সংবিধান নিজেকে বদলে ফেলেছে।
সর্বোচ্চ আদালতের মন্তব্য, ‘‘এক সময় যা বৈধ ছিল, পরবর্তী কালে তা অবৈধ হয়ে যেতেই পারে।’’ কেন্দ্রীয় সরকারকে সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ, মৃত্যুদ- কার্যকর করার জন্য যন্ত্রণাবিহীন কোনও পন্থা খুঁজে বার করুক আইনসভা। তিন সপ্তাহ পরে ফের এ বিষয়ে শুনানি হবে বলে আদালত জানিয়েছে।
সূত্র: আনন্দবাজার
Check Also
ঢাকা প্রসঙ্গে বদলাতে পারে ভারতের পররাষ্ট্রনীতি
পাঁচ দশকের বিরতির পর গত মাসে বাংলাদেশের বন্দর নগরী চট্টগ্রামে একটি পাকিস্তানি পণ্যবাহী জাহাজ ডক …