রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী);উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার থাকলেও নৈশ প্রহরী (নাইট গার্ড) শাহ আলম ডাক্তার সেজে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন চরাঞ্চলবাসীদের। পটুয়াখালী জেলার রাঙ্গাবালী উপজেলার রাঙ্গাবালী ইউনিয়নের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই কেন্দ্রে সাব এসিস্ট্যান্ট কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ডা. রেজাউল করিম নামে এক ব্যক্তি একটি কক্ষে বসে আছেন। অন্যদিকে উপজেলার দূর দুরান্ত থেকে থেকে আসা রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন ওই কেন্দ্রের নৈশ্য প্রহরী শাহ আলম। মেডিকেল অফিসারের চেয়ারে বসে রোগীদের ব্যবস্থাপত্র লিখে দেয়ার অনুকুলে রোগীদের কাছ থেকে নিচ্ছেন ৫০ থেকে দেড়শ টাকা। নারী-পুরুষ, গর্ববতী মহিলা এবং মা ও শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষাসহ যে কোন কঠিন রোগের চিকিৎসার অনুকুলে ব্যবস্থাপত্র দিয়ে থাকেন তিনি। অসুখ কঠিন হলে অর্থের পরিমানও দ্বিগুণ হয়ে যায়। রোগ ভাল না হলে ঔষধের মান ভাল নয় বলে দাবী করে নৈশ প্রহরী শাহ আলম। এভাবে প্রতিনিয়ত চরাঞ্চলের অশিক্ষিত রোগীদের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছে অর্থ। আর রোগীরা পাচ্ছে চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা। কেউ কেউ ভুল চিকিৎসা নিয়ে ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার বিস্তার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। চরাঞ্চলে মানুষ বেশির ভাগই একাডেমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হওয়ায় বুঝতে পারেনা কে ডাক্তার আর কে নৈশ প্রহরী। এই সুযোগে নৈশ্য প্রহরী শাহ আলম অপচিকিৎসার পাশাপশি রোগীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে অর্থ। শাহ আলম স্থানীয় এবং ওই কেন্দ্রে দীর্ঘদিন চাকুরি করায় অফিসার সমকক্ষরা তাকে তোয়াক্কা করে চলতে হয় এমন অভিযোগ অফিস স্টাফদের।
উপজেলার সেনের হাওলা গ্রামের মোতালেব সরদার (৬০) নামে এক ব্যক্তি ওই চিকিৎসা কেন্দ্রে তার পায়ে গোদ রোগের চিকিৎসা করাতে যান। ডাক্তারের কক্ষে প্রবেশ করতেই মোতালেবকে ডাক দেয় শাহ আলম। এসময় মোতালেব সরদারের পায়ের অপারেশন করে দিবে এই মর্মে ৫০০ টাকা চুক্তি হয় শাহ আলমের সাথে। পরে ৫০০ টাকার চুক্তিতে তার পায়ের অপারেশন করে একটি ব্যবস্থাপত্র লিখে দেয় নৈশ্য প্রহরী শাহ আলম। এক সপ্তাহ পরে পুনরায় তার সাথে দেখা করতে বলা হয় মোতালেবকে। এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, ওই কেন্দ্রে কর্তব্যরত ডাক্তার থাকা সত্বেও মানুষ শাহ আলমের দ্বারা চিকিৎসা নিতে বাধ্য হয়। নৈশ প্রহরী হিসেবে নিয়োগের পর থেকেই শাহ আলম এখানের ডাক্তার। এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সাবেক সাব এসিস্ট্যান্ট কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ডা.অনুতোষ চন্দ্র দাশ অবসরে যাওয়ার পর তার ডাক্তারি বেপরোয়াভাবে বেড়ে যায়।
চরাঞ্চলে মানুষ বেশির ভাগই একাডেমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হওয়ায় বুঝতে পারেনা কে ডাক্তার আর কে নৈশ প্রহরী। এই সুযোগে নৈশ্য প্রহরী শাহ আলম অপচিকিৎসার পাশাপশি রোগীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে অর্থ। শাহ আলম স্থানীয় এবং ওই কেন্দ্রে দীর্ঘদিন চাকুরি করায় অফিসার সমকক্ষরা তাকে তোয়াক্কা করে চলতে হয় এমন অভিযোগ অফিস স্টাফদের। বর্তমানে স্বাস্থ্য বিভাগে সাব এসিস্ট্যান্ট কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ডা. রেজাউল করিম নিয়োজিত থাকলেও তাকে তোয়াক্কা না করে শাহ আলম ডাক্তার নামে পরিচিতি লাভ করছেন। মূল ডাক্তার রেজাউল করিম কেন্দ্রে উপস্থিত থাকা সত্বেও মুমূর্ষু রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন শাহ আলম।
জানতে চাইলে শাহ আলম বলেন, দাদায় (স্যাকমো) জখন রোগী দেইখা কুলাইতে পারেনা তখন আমি রোগী দেখি। আমার কাছে রোগীরা ভালো হয়। তার জন্য রোগীরা আমার কাছে আসে। শাহ আলম নৈশ প্রহরী হয়ে রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন কেন এমন প্রশ্নে সাব এসিস্ট্যান্ট কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ডা. রেজাউল করিম বলেন, শাহ আলম ডাক্তার নয়। এই কেন্দ্রে তিনি নৈশ প্রহরী মাত্র। উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (অঃ দাঃ) মাহবুব আলম বলেন, শাহ আলম তো নিরাপত্তা প্রহরী। সে রোগী দেখা কিংবা পেশক্রিপশন করার প্রশ্নই আসেনা। এভাবে করে থাকলে রিপোর্ট করে দিন আমরা ব্যবস্থা নিব।
Check Also
আশাশুনির প্রতাপনগরে ৫ আগস্ট বন্দুকের গুলিতে নিহত ৩ শহীদের অভিভাবকদের সংবাদ সম্মেলন
এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি।। গত ৫ আগষ্ট-২০২৪ আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগরে আওয়ামীলীগ নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান …