মেয়েকে ধর্ষণের মামলায় পিতা গ্রেপ্তার

১২ বছরের শিশু কন্যা। এরই মধ্যে ১৪-১৫ বার ধর্ষণের শিকার হয়েছে। তাও জন্মদাতা পিতার কাছে। পাশ্চাত্য ও ভারতীয় সংস্কৃতির এ ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার সদর ইউনিয়ন দরবেশহাট সংলগ্ন শাহপীর পাড়ায়।

ঘটনার সত্যতা নিয়ে নানা রহস্য ঘুরপাক খেলেও নিজের মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে চট্টগ্রাম শহরের ডবলমুরিং এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় পিতা আবদুল মাবুদকে। গ্রেপ্তারের পর শনিবার রাতেই তাকে নিয়ে যাওয়া হয় লোহাগাড়া থানায়।

লোহাগাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শাহজাহান পিপিএম (বার) আপন কন্যাকে ধর্ষণের মামলায় পিতা আবদুল মাবুদকে গ্রেপ্তারের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ধর্ষিতার নানা এয়াকুব আলী গত ৭ অক্টোবর শনিবার সকালে ধর্ষণ মামলাটি দায়ের করেন। আর দুপুরে ধর্ষক পিতা আবদুল মাবুদকে চট্টগ্রাম মহানগরীর ডবলমুরিং এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মামলার বিবরণ মতে তিনি জানান, ধর্ষক আবদুল মাবুদ তার একমাত্র ১২ বছরের শিশু কন্যাকে বহুদিন পূর্ব থেকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে আসছে। এ পর্যন্ত ১৪-১৫ বার ধর্ষণ করেছে। যা সহ্য করতে না পেরে আতœীয়-স্বজন ও স্থানীয় প্রতিবেশীদের বলে দেয়।

বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করা হলে এ নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ফলে স্থানীয় সাংবাদিকরা শিশু কন্যাটির পাশে দাড়ায়। বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্য ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভী পর্যন্ত গড়ায়। ফলে মামলা দায়েরের পর সংসদ সদস্যসহ সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান মোল্লা ধর্ষক আব্দুল মাবুদকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন।

পরবর্তীতে ব্যাপক অনুসন্ধানের পর গোপন সূত্রে জানতে পারি ধর্ষক আব্দুল মাবুদ চট্টগ্রাম শহরে অবস্থান করছেন। বিষয়টি নিশ্চিত হলে তাৎক্ষণিক ভাবে লোহাগাড়া থানা পুলিশের একটি টিম চট্টগ্রাম শহরে পাঠায়। সেখানে ডবল মুরিং থানার ওসির সহায়তায় আব্দুল মাবুদকে ওই এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।

মামলার বাদি এয়াকুব আলী জানান, ধর্ষক আবদুল মাবুদ লোহাগাড়া উপজেলা সদর ইউনিয়ন লোহাগাড়া দরবেশহাট সংলগ্ন শাহপীর পাড়ার ওসমান গণির পুত্র। ১৪-১৫ বছর আগে আবদুল মাবুদের সাথে তার মেয়ের বিয়ে হয়। কিন্তু এক কন্যা সন্তানের জন্মের পর মেয়েকে তালাক দিয়ে তার ঘর থেকে বের করে দেয়। সে বর্তমানে অন্যত্র বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে সংসার করছে।

সে কারনে ধর্ষিতা শিশু কন্যা তার পিতার সঙ্গে ছিল। পাষন্ড ল¤পট পিতা তার হীনস্বার্থ চরিতার্থ করতে নিজ কন্যার উপর পশুর আচরণ করতে থাকে। এ পর্যন্ত তাকে ১৪-১৫ বার জোর পূর্বক ধর্ষণ করেছে সে। পিতার এ আচরণে অতিষ্ট হয়ে অবশেষে নানীর কাছে আশ্রয় নেয় শিশু কন্যাটি। বর্তমানে সে নানীর আশ্রয়ে রয়েছে।
এদিকে ধর্ষক পিতার উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে গতকাল শনিবার সকালে লোহাগাড়া উপজেলা সদর বটতলী মোটর ষ্টেশনে সর্বস্তরের জনগণের সমন্বয়ে এক বিশাল মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। পরে সংক্ষিপ্ত এক সমাবেশে বক্তারা ওই পাষন্ড পিতার ফাঁসি দাবি করেন।

মানববন্ধন থেকে বক্তারা ধর্ষক আব্দুল মাবুদকে গ্রেপ্তার করায় স্থানীয় সংসদ সদস্য, সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান মোল্লা ও লোহাগাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ শাহজাহান পিপিএম (বার) কে অভিনন্দন জানান।

ধর্ষণের সত্যতার প্রমাণ সম্পর্কে জানতে চাইলে লোহাগাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ শাহজাহান পিপিএম (বার) বলেন, ধর্ষক পিতা আবদুল মাবুদকে আজ রবিবার আদালতে তোলা হচ্ছে। ভিকটিমও যাবে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী পরবর্তি পদক্ষেপ নেয়া হবে।

Check Also

৩০ জুলাই পর্যন্ত অনেক দল সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি, সংগ্রামে যুক্ত হবে কি না: সারজিস আলম

জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেছেন, …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।