ঢাকা: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামির আমির ও সেক্রেটারি জেনারেলসহ ৯ নেতাকে গ্রেফতার ও রিমান্ডের প্রতিবাদে এবং হরতালের সমর্থনে দেশের বিভিন্নস্থানে মিছিল করেছে সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
গত মঙ্গলবার কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে দেশের বিভিন্ন স্থানে এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রীয় নেতাদের মুক্তির দাবিতে বৃহস্পতিবার সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক হরতাল ডাক দেয়া হয়েছে। এরই সমর্থনে বুধবার সকাল ১০টায় মিছিল করেছে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াত। মিছিলটি রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মালিবাগ-মৌচাকে এক পথ সভার মধ্যদিয়ে এটি শেষ হয়।
মিছিল পরবর্তী পথ সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়ে অপরাজনীতি, গ্রেফতার ও ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে। সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্যই আমীরে জামায়াত বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ জননেতা মকবুল আহমাদ এবং সেক্রেটারি জেনারেল বরেণ্য চিকিৎসক ডা. শফিকুর রহমান, সাবেক এমপি নায়েবে আমীর মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের গ্রেফতার করেছে। জনগণ সরকারের এ ষড়যন্ত্র কখনোই বাস্তবায়িত হতে দেবে না। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে আমীরে জামায়াতসহ সকল নেতাদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন। অন্যথায় সৃষ্ট পরিস্থিতি দায়দায়িত্ব সরকারকেই বহণ করতে হবে।
হরতালের সমর্থনে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরী উত্তর শাখা। সকাল সাড়ে ৮টায় কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক সিরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে মিছিলটি রাজধানীর বাড্ডা নতুনবাজার এলাকা থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সমাবেশে মিলিত হয়। এসময় শাখা সেক্রেটারি সজিবসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপ¯ি’ত ছিলেন। এদিকে হরতালের সমর্থনে রাজধানীর দয়াগঞ্জে মিছিল করেছে বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ। বুধবার সকালে শিবিরের কেন্দ্রীয় দাওয়াতী কার্যক্রম সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান ও শাখা সভাপতি শফিউল আলমের নেতৃত্বে মিছিলটি রাজধানীর স্বামীবাগ থেকে শুরু হয়ে দয়াগঞ্জ মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
মিছিল পরবর্তী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শিবির নেতা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ একের পর এক জামায়াত নেতাদের গ্রেফতার করে প্রমাণ করছে তারা ফ্যাসিবাদী। একদিকে প্রধানমন্ত্রীকে মাদার অব হিউম্যানিটি দাবি করলেও প্রকৃতপক্ষে তারা কসাইয়ের চেয়েও জঘন্য অপরাধ করে যাচ্ছে।
শিবিরের কেন্দ্রীয় দাওয়াতী কার্যক্রম সম্পাদক হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, সরকার ভাবছে নেতৃত্ব শূন্য করার মাধ্যমে জামায়াতকে বিলীন করে দিবে। কিন্তু জামায়াত শিবিরকে গ্রেফতার নির্যাতন করে দমানো যায় না এটা ইতোমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। গ্রেফতারের ১৮ ঘণ্টার মাথায় পুনরায় আমির ও সেক্রেটারি জেনারেল মনোনীত করে জামায়াত আবারো প্রমাণ করেছে গ্রেফতার-নির্যাতন দিয়ে জামায়াত শিবিরকে নিশ্চিহ্ন করা যাবে না।
আটক নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নেতৃবৃন্দের নিঃশর্ত মুক্তির দাবীতে চট্টগ্রাম মহানগরী উত্তর শিবির বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
মিছিল পরবর্তী সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির’র কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মু’তাসিম বিল্লাহ বলেন, ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ তাদের অবৈধ ক্ষমতা আরো দীর্ঘায়িত করতে বিরোধী দলীয় নেতৃবৃন্দকে সম্পূর্ণ বিনা কারণে আটক করে জেলের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে নিক্ষেপ করছে। তারা শুধু মুখে মুখে বুলি আউড়িয়ে যাচ্ছে দেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসন নিশ্চিত হচ্ছে। সব মিথ্যা কথা। সরকারের লোকেরাই যতোসব আইন বহির্ভূত কাজ করে যাচ্ছে। বিনা ভোটে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকা আ’লীগ বিরোধী দল সহ্য করতে না পেরে তাদের ঘায়েল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাই জামায়াতসহ অন্যান্য দলের শীর্ষ নেতাদের পাইকারি হারে আটক করছে।
সমাবেশে চট্টগ্রাম মহানগরী উত্তর সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম বলেন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী দেশে চিহ্নিত, আসল অপরাধীদের আটক কিংবা বিচারের পরিবর্তে বিরোধী মতের দলীয় নেতা কর্মীদের সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করে তাদের বিরুদ্ধে হাস্যকর মিথ্যা, বানোয়াট কল্পকাহিনী সাজিয়ে হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করে চলেছে।