প্রধান বিচারপতির ছুটিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে কূটনীতিকদের সাথে বিএনপির মতবিনিময়

বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সাথে দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় করেছে বিএনপি। বিশেষ করে সম্প্রতি প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার ছুটির ঘটনাসহ ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় সম্পর্কে দলের অবস্থান কূটনীতিকদের কাছে ব্যাখ্যা করেছে দলটি।
গত কাল বুধবার বিকেলে গুলশানের লেক শোর হোটেলে এই রুদ্ধদ্বার মতবিনিময় হয়।

প্রধান বিচারপতির ছুটির বিষয়ে কূটনীতিকদের কাছে বিএনপির অবস্থান তুলে ধরেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।

তবে এই মতবিনিময়ের ব্যাপারে বিএনপির নেতৃবৃন্দ গণমাধ্যমের কাছে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিতে রাজি না হলেও বিচার বিভাগ, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও রোহিঙ্গা সঙ্কটের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।

বিকেল চারটা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এই মতবিনিময় অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, ফ্রান্স, কানাডা, সুইডেন, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, ডেনমার্ক, নরওয়ে, তুরস্ক, আরব আমিরাত, মালদ্বীপ, দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারত, নেপাল, ইন্দোনেশিয়া, মরক্কো, ভিয়েতনাম, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাতিসংঘসহ আরো বেশ কয়েকটি দেশের কূটনীতিকরা অংশ নেন।

বৈঠকের শুরুতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাগত বক্তব্য দেন।

এছাড়া স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান, সাবিহ উদ্দিন আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, বিশেষ সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন, আন্তর্জাতিক সম্পাদক ব্যারিস্টার নওশাদ জমির, অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার, সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, সম্পাদক ও দলের যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনও উপস্থিত ছিলেন।

মতবিনিময় শেষে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা প্রধান বিচারপরি ছুটিতে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে কূটনীতিকদের সাথে কথা বলেছি। আমরা মনে করি তিনি অসুস্থ নন। তাকে যে বাধ্যতামূলক জোরপূর্বক ছুটি যেতে বাধ্য করা হয়েছে সেটি বলেছি, তার ছুটির চিঠি ও স্বাক্ষরও জালিয়াতি করা হয়েছে।

বৈঠকে কূটনীতিকদের কাছে সম্প্রতি কুমিল্লার একটি আদালতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি ও আবারো নেতা-কর্মীদের গণগ্রেফতার ও মিথ্যা মামলা দায়ের বিষয়টিও তুলে ধরা হয়।

বিএনপির একাধিক নেতার সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার একমাসের ছুটিতে যাওয়ার বিষয়টি জোরপূর্বক ছিলো তা কূটনীতিকদের কাছে ব্যাখ্যা করা হয়। প্রধান বিচারপতির ছুটির চিঠিতে ভুল বানান ও তার স্বাক্ষর জাল করার বিষয়টিও তুলে ধরা হয়। পাশাপাশি ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের পর থেকে সরকার প্রধান থেকে শুরু করে অর্থমন্ত্রী, আইনমন্ত্রীসহ বিভিন্ন মন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন দলের নেতারা প্রধান বিচারপতিকে ব্যক্তিগত আক্রমণ ও কটাক্ষ করে যে বক্তব্য দিয়েছেন সে ব্যাপারে কূটনীতিকদের অবহিত করা হয়। এছাড়া বিএনপি সরকারে থাকাকালে সর্বোচ্চ আদালতের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার কোনো নজির নেই বলেও কূটনীতিকদেরকে জানিয়েছে বিএনপির নেতৃবৃন্দ।

Check Also

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারই তত্ত্বাবধায়ক সরকারে রূপান্তরিত হতে পারে : অ্যাটর্নি জেনারেল

র্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারই নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারে রূপান্তরিত হতে পারে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।