শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে জামায়াতে ইসলামীর ডাকা হরতালের মাঝপথে সমর্থন জানিয়েছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) সকাল-সন্ধ্যা হরতাল শুরু হওয়ার ৪ ঘণ্টা পর এ সমর্থন জানালো জোটের নেতৃত্বাধীন দলটি।
নয়াপল্টানে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আজকে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের ডাকা হরতাল তাদের নেতৃবৃন্দের মুক্তির দাবি; তাদেরকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেয়ার প্রতিবাদ। আমি দলের (বিএনপি) পক্ষ থেকে জানাতে চাই, জামায়াতে ইসলামীর এ সকাল-সন্ধ্যা হরতালকে সমর্থন জানাচ্ছে বিএনপি।’
রিজভী বলেন, ‘আমি গতকালকে (বুধবার) বলেছিলাম যে, আমরা সমর্থন জানাব কি জানাব না -তার কোনো নির্দেশনা নেই। এখন আমার কাছে নির্দেশনা আছে যে, দলের পক্ষ থেকে তাদের (জামায়াত) হরতালকে পূর্ণ সমর্থন জানানো হচ্ছে।’
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট জামায়াতের এ কর্মসূচিতে সমর্থন দিচ্ছে কি না প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘সেটা ২০ দলীয় জোটের ব্যাপার। বিএনপি জামায়াতের হরতালকে সমর্থন দিচ্ছে। বিরোধী রাজনৈতিক শক্তির কোনো কর্মসূচি যাতে না হয়, সে জন্য ভয় দেখাতে জামায়াত নেতাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, সরকার বিরোধীদের ওপর ক্র্যাকডাউন চালাচ্ছে। সারাদেশে ভয়ভীতি ও শঙ্কা ছড়িয়ে তারা (সরকার) একক রাজত্ব কায়েম করতে চাচ্ছে। তাই এখন কোনো আন্দোলন নেই, নির্বাচন নেই, নেই কোনো কর্মসূচি তারপরও আকস্মিকভাবে সরকার তাদের নির্যাতন ও জুলুমের ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠায় বিএনপিসহ বিরোধী নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করছে। রিমান্ডের নামে নির্যাতন করছে।
রিজভী বলেন, একমাত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে ওঠে পড়ে লেগেছে সরকার। নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ভেঙে ফেলা হয়েছে। আগে নির্বাচন হতো জনগণের ইচ্ছায় নির্বাচন কাঠামো অনুসরণ করে, আর এখন তারা চাচ্ছে নির্বাচন হবে তাদের একক ইচ্ছায়।
জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের বিষয়ে বিএনপির এ নেতা বলেন, উত্তরার বাসা থেকে হঠাৎ গ্রেফতার করা হলো, অথচ মামলা দেওয়া হয়েছে কদমতলী থানায়। এ থেকে বোঝা যায়, এটা পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে। উদ্দেশ একটাই, বিরোধী রাজনৈতিক দল ও ২০ দলীয় জোট যাতে কোনো কর্মসূচি পালন করতে না পারে।
তিনি আরও বলেন, আগামী ১৫ অক্টোবর বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনে চলমান রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপে অংশ নেবে। ইসি সংলাপে বিএনপির পক্ষ থেকে যে সমস্ত বিষয় তুলে ধরা হবে সে ব্যাপারে দলটির সিনিয়র নেতারা আলোচনার মাধ্যমে চূড়ান্ত করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।