মোঃ রিয়াজুল ইসলাম:নাটোর সংবাদদাতা:
নাটোরের সিংড়ায় যৌথভাবে প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়ে একই সাথে গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করেছে ইমন ও নিশাত নামে নবম শ্রেণীর দুই স্কুল ছাত্র। রবিবার দুপুরে সিংড়া উপজেলার চৌগ্রাম ইউনিয়নের শতভাগ শিক্ষিত আলোচিত আদর্শ গ্রাম হুলহুলিয়ায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত ইমন (১৩) উপজেলার তাজপুর ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের আমিন হোসেনের ছেলে ও নিশাত (১৩) হুলহুলিয়া গ্রামের মৃত বকুল প্রাং এর ছেলে। দুজনই হুলহুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনীর ছাত্র। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হুলহুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি লাইব্রেরিয়ান তৌফিক পরশ জানান, নবম শ্রেণির ছাত্র ইমনের রোল ৩০ ও নিশাতের রোল ২৬। রবিবার সকালে তারা অন্যদিনের মতোই দুজন স্কুলে আসে। এসে তাদের সহপাঠীদের প্রকাশ্যে জানায়, আজ আমরা দুজন সুইসাইড করবো, দুজনের আজ শেষ দিন এসব বলে এক সময় স্কুল থেকে বেড়িয়ে পড়ে। পরে তাদের স্কুল থেকে খুঁজতে বের হয়ে আর পাওয়া যায়নি। পরে যথারীতি স্কুল চলাকালিন সময়ে খবর আসে স্থানীয় হুলহুলিয়া প্রামানিক পাড়া এলাকায় একটি পুকুর পাড়ে তারা দুজনই গ্যাস ট্যাবলেট খেয়েছে। আমরা ছুটে গিয়ে দেখি পুকুর ধারে দুজন পড়ে আছে। এ সময় স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাদের সিংড়া হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ইমনকে মৃত ঘোষণা করেন এবং নিশাতকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে নেয়ার পরপরই নিশাতও মারা যায়। স্থানীয় ও পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, ইমনের বাড়ি সিংড়া উপজেলার তাজপুর ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামে। হুলহুলিয়া গ্রামে তার খালার বাসায় থেকে সে হুলহুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করত। এর আগে সে সিংড়া পৌর শহরের দমদমা পাইলট স্কুল ও কলেজ এবং নিংগইন জোড়মল্লিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করত। আর নিশাত হুলহুলিয়া গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা। তারা দুজন বিশ^স্ত বন্ধু ছিলো। নিয়মিত স্কুলে যেত। তাদের কারো কাছে স্মাট ফোন ছিল না। কি কারনে এমন ঘটনা ঘটলো তা রহস্যজনক। সিংড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডাঃ এএমএস আলমত জানান, শিক্ষার্থী ইমন হোসেন এর সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মৃত্যুবরণ করেছে। অপর শিক্ষার্থী নিশাত হোসেনকে বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিকেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।এদিকে সিংড়ার হুলহুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল বারিক জানান, ওই দুই শিক্ষার্থী রোববার ১০টা ৪০ মিনিটে পোশাক ছাড়া গেঞ্জি পরিহিত অবস্থায় তারা স্কুলে আসে। শ্রেণি শিক্ষক ইয়াকুব আলী তাদেরকে অস্বাভাবিক অবস্থায় ক্লাসে প্রবেশ করতে দেখে প্রধান শিক্ষকের অনুমতি নিতে বলেন। কিন্তু তারা প্রধান শিক্ষকের অনুমতি না নিয়ে স্কুল ত্যাগ করে। কিছুক্ষণ পর তাদের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়।সিংড়া থানার ওসি (তদন্ত) ফরিদুল ইসলাম জানান, ইমনের লাশটির সুরতহালের ময়নাতদন্তের জন্য নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। আর নিশাতের লাশ এখনো বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে। এই দুই ছাত্রের মুত্যুর প্রকৃত কারন এখনো জানা যায়নি। তবে কেউ কেউ ধারনা করছে প্রেমঘটিত বিষয়ে দুজন এমন ঘটনা ঘটাতে পারে।