সংবর্ধনা দিতে ব্যাপক প্রস্তুতি বিএনপির-খালেদা জিয়ার গ্রেফতারি পরোয়ানা গুলশান থানায়

ঢাকা: জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট এবং জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গ্রেফতারি পরোয়ানা রাজধানীর শুলশান থানায় পৌঁছেছে বলে জানা গেছে। রোববার সন্ধ্যার পর ওই পরোয়ানা গুলশান থানায় পৌঁছে দিয়েছে আদালতে কর্মরত পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগ।

সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে জারিকৃত পরোয়ানা পাওয়া এবং গুলশান থানায় তা পৌঁছে দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছে ঢাকার নিম্ন আদালতের প্রসিকিউশন পুলিশের প্রধান ডিসি প্রসিকিউশন আনিসুর রহমান। আজ রাত সোয়া ৮টার দিকে তিনি জানান, সন্ধ্যার পর তারা পরোয়ানা পাওয়ার পর গুলশান থানায় পৌঁছে দিয়েছেন।

তবে পরোয়ানা গুলশান থানায় পৌঁছায়নি বলে জানিয়েছেন গুলশান জোনের এডিসি আব্দুল আহাদ।

এ বিষয়ে জানতে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিকের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

এর আগে রোববার সন্ধ্যার পর সিএমএম আদালতের ডিসি প্রসিকিউশনের কার্যালয়ে পরোয়ানা দুইটি পৌঁছে দেয় ঢাকার ৩ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের প্রসেসারবার আরিফ হোসেন।
গত বৃহস্পতিবার ঢাকার ৩ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের জজ আদালতের বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান বর্তমানে বিদেশে অবস্থানরত খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এই পরোয়ানা জারি করেন।

 

চিকিৎসার জন্য লন্ডনে দীর্ঘ সফর শেষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ১৮ অক্টোবর, বুধবার দেশে ফিরছেন। বিষয়টি গতকাল শনিবার নিশ্চিত করা হয়েছে দলের পক্ষ থেকে।

এদিকে কুমিল্লাসহ ঢাকার তিনটি মামলায় গ্রেফতারি পারোয়ানা মাথায় নিয়ে খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার খবরে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। দলীয় নেতাকর্মীরা চেয়ারপারসনকে বিশাল সংবর্ধনার সঙ্গে বরণ করতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

একাধিক দলীয় সূত্র জানায়,  এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ১৭ অক্টোবর লন্ডন থেকে রাতে দেশের উদ্দেশ্যে রওনা করবেন ২০ দলীয় জোট প্রধান খালেদা জিয়া। পরদিন বুধবার বিকেল ৫টায় হজরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে তার। এদিন বিমানবন্দর থেকেই তাকে সংবর্ধনা দেয়ার জন্যে বড় ধরনের শোডাউনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপিসহ এর অঙ্গ, সহযোগী সংগঠনগুলো। সেই সাথে শোডাউন ও সংবর্ধনায় অংশ নিবেন ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরাও। বুধবার ঢাকার রাজপথে থাকবেন তারা।
রোববার সন্ধ্যায় বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা গেছে, চেয়ারপারসনের দেশে ফেরা নিয়ে বিশাল শোডাউন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপিসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো। ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও মহিলাদলসহ বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের উদ্যোগে এই শোডাউনের প্রস্তুতি চলছে। ওইদিন বিমানবন্দরে দলীয় চেয়ারপারসনকে বিশাল গণসংবর্ধনা দেয়া হবে। সেই সাথে রাজধানীর বিমানবন্দর থেকে গুলশান পর্যন্ত এবং কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঘিরে হাজার হাজার নেতাকর্মীর উপস্থিতির প্রস্তুতি চলছে।

সূত্র বলছে, দীর্ঘদিন পর রাজধানীতে এটি বিএনপির বড় ধরনের শোডাউন হতে যাচ্ছে। এতে ঢাকাসহ আশ-পাশের জেলার নেতাকর্মীরা অংশ নিবেন। এছাড়াও দেশের সব জেলা ও মহানগর থেকে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা সংবর্ধনায় উপস্থিত থাকবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

রোববার রাতে খালেদা জিয়ার প্রেস উইং কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার শীর্ষনিউজকে বলেন, চেয়ারপারসন দেশে ফেরায় বিশাল সংবর্ধনা দিতে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে।

তিনি বলেন, বুধবার হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গুলশানে নেত্রীর কার্যালয় পর্যন্ত নেতাকর্মীরা রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে চেয়ারপারসনকে সংবর্ধনা জানাবেন। এ জন্য ঢাকা মহানগরী ও রাজধানীর পাশের জেলাগুলো থেকে ওইদিন নেতাকর্মীরা ঢাকায় আসবেন। ইতিমধ্যে দলের উচ্চপর্যায়ে এ নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এ ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ প্রশাসনের সহযোগিতা চায় বিএনপি।

এদিকে, বিএনপি প্রধানের দেশে ফেরার সময় জানার পর গত শনিবার সন্ধ্যায় দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল করির রিজভী ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও মানিকগঞ্জসহ রাজধানীর পাশের জেলার নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

রিজভী জানান, খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে দলের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামবে বিমানবন্দরে। রাজধানীসহ আশপাশের জেলাগুলো থেকেও নেত্রীকে সংবর্ধনা জানাতে আসবেন নেতাকর্মীরা।
অপরদিকে, শনিবার দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নেতাকর্মীরা নেত্রীর ফেরার অপেক্ষায় প্রহর গুণছেন।

গ্রেফতারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে খালেদা জিয়া দেশে ফিরছেন। এ প্রসঙ্গে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, খালেদা জিয়াকে গ্রেফতারের আশঙ্কা করছি না। তারপরও যদি সরকার সেই ধরনের পদক্ষেপ নেয়, তখন সেটা দেখা যাবে। গ্রেফতার করলে করুক। আমরা তো এ পর্যন্ত মিথ্যা মামলায় কতবার জেল খেটেছি। আমার মনে হয় না সরকার তা করবে।

গত ১৫ জুলাই চিকিৎসার জন্য লন্ডন যান খালেদা জিয়া । সেখানে বড় ছেলে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাসায় থেকে প্রথমে চোখের অপারেশন করান। পরে লন্ডনে প্রখ্যাত বাতরোগ বিশেষজ্ঞ হ্যাডলি ব্যারির অধীনে হাঁটুর চিকিৎসা গ্রহণ করেন তিনি। রোববারও তার চিকিৎসক দেখানোর কথা রয়েছে।

Check Also

ভোমরা বন্দরে চার মাসে ৪০০ কোটি টাকা আয়

দক্ষিণবঙ্গ সাতক্ষীরার আধুনিক নিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব বাণিজ্যিককেন্দ্র ভোমরা স্থল বন্দর। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।